ঢাকা ০২:৩৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিজ্ঞাপন বয়কটে কতটা ক্ষতির মুখে পড়বে ফেসবুক

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:৪৫:৪৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১ জুলাই ২০২০
  • ১৮৬ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বর্ণবাদ, ঘৃণা ও বিদ্বেষপূর্ণ কনটেন্ট বন্ধ না করায় ইতোমধ্যে বিশ্বের বড় বড় বেশ কয়েকটি কোম্পানি ফেসবুকে তাদের বিজ্ঞাপন প্রচার বন্ধ করে দিয়েছে। এতে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে ফেসবুক। গত ২৬ জুন একদিনেই ফেসবুকের শেয়ারের দাম কমেছে আট শতাংশ। আর তাতে ফেসবুকের ক্ষতি হয়েছে অন্তত ছয় বিলিয়ন পাউন্ড।

তবে সাময়িক কিছু ক্ষতির সম্মুখীন হলেও শেষ পর্যন্ত এ ক্ষতি কাটিয়ে উঠবে ফেসবুক এমনটাই বলছেন বিশেষজ্ঞরা। আর ফেসবুক কর্তৃপক্ষ হয়তো চাপে পড়ে তাদের নীতিমালায় পরিবর্তন আনতে পারে বলে ধারণা বিশেষজ্ঞদের।

 জানা গেছে, বর্ণবাদের বিরুদ্ধে আন্দোলনকারী একটি সংগঠন ‘দ্য স্টপ হেইট ফর প্রফিট‌’ এখন বয়কটকে তাদের আন্দোলনের রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে।

আন্দোলনকারীরা বেশ কিছু বড় বড় কোম্পানিকে ফেসবুক এবং এ ধরনের অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মে বিজ্ঞাপন দেয়া বন্ধ করতে রাজি করাতে পেরেছেন।

এসব কোম্পানির মধ্যে সর্বশেষ যুক্ত হয়েছে ফোর্ড, অ্যাডিডাস এবং এইচপি। এর আগে ফেসবুকে বিজ্ঞাপন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছিল কোকা-কোলা, ইউনিলিভার এবং স্টারবাকস।

নিউজ ওয়েবসাইট এক্সিওন তাদের এক প্রতিবেদনে বলছে, মাইক্রোসফট গত মে মাস থেকে ফেসবুক এবং ইনস্টাগ্রামে বিজ্ঞাপন দেয়া বন্ধ করেছে। কারণ এই দুটি প্লাটফর্মে যে ধরনের আপত্তিকর কনটেন্ট প্রকাশ পাচ্ছে সেটা নিয়ে তাদের উদ্বেগ আছে।

এদিকে এই বয়কটও ফেসবুককে আর্থিক ক্ষতির মুখে ফেলতে পারে। কারণ ফেসবুকের মোট আয়ের একটা বড় অংশ বিজ্ঞাপন থেকে আসে।

এভাইভা ইনভেস্টরস এর ডেভিড কামিং জানান, ফেসবুকের ব্যাপারে এই যে একটা আস্থার সংকট তৈরি হয়েছে এবং তাদের কোনো নৈতিক অবস্থান নেই বলে একটা ধারণা তৈরি হয়েছে সেটা তাদের ব্যবসার ক্ষতি করতে পারে।

গত ২৬ জুন ফেসবুকের শেয়ারের দাম কমেছে প্রায় ৮ শতাংশ। এর ফলে ফেসবুকের প্রধান নির্বাহী এবং মার্ক জুকারবার্গের সম্পদ অন্তত কাগজে-কলমে ৬ বিলিয়ন বিলিয়ন পাউন্ড কমেছে।

কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে এটি আরও বড় ব্যাপার হয়ে দাঁড়াতে পারে কিনা কিংবা ফেসবুকের অস্তিত্বের জন্য হুমকি তৈরি করতে পারে কিনা সেটা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে এধরনের বয়কটে ফেসবুক খুব বড় কোনো ক্ষতির মুখে পড়বে না বলে মত বিশেষজ্ঞদের।

এর কারণ প্রথমত, অনেক কোম্পানি মাত্র এক মাসের জন্য ফেসবুক বয়কটের ঘোষণা দিয়েছেন । দ্বিতীয়ত, ফেসবুকের বিজ্ঞাপন রাজস্বের বেশিরভাগটাই কিন্তু আসে হাজার হাজার ছোট বা মাঝারি আকারের ব্যবসা থেকে।

সিএনএনের এক রিপোর্টে বলা হচ্ছে , সবচেয়ে বড় ১০০টি ব্র্যান্ড, যারা বিজ্ঞাপনের পেছনে সবচেয়ে বেশি ব্যয় করে, তাদের কাছ থেকে ফেসবুকের আয় ৪ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার অর্থাৎ ফেসবুকের মোট আয়ের মাত্র ৬ শতাংশ।

বেশিরভাগ মাঝারি কোম্পানি এখনো পর্যন্ত ফেসবুক বয়কটের ডাকে সাড়া দেয়নি।

তবে কোনো আন্দোলনের লক্ষ্য অর্জনে ফেসবুক একটি গুরুত্বপূর্ণ টার্গেট হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ফেসবুকের যে কাঠামো, সেখানে মার্ক জুকারবার্গের ব্যাপক কর্তৃত্ব রয়েছে। তিনি যদি চান তবে একটা বড় পরিবর্তন নিয়ে আসতে পারেন। কাজেই একজন মার্ক জুকারবার্গকে প্রভাবিত করতে পারলেই আন্দোলনের লক্ষ্য অর্জন সম্ভব।

এদিকে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে মার্ক জুকারবার্গ হয়তো পদক্ষেপ নিতে পারেন। ২৬ জুন ফেসবুক ঘোষণা করেছে যে তারা ঘৃণা এবং বিদ্বেষপূর্ণ যেসব কনটেন্ট সেগুলো ট্যাগ করা শুরু করবে। এ বিষয়ে সামনে আরও ঘোষণা আসতে পারে।

সূত্র : বিবিসি বাংলা

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

বিজ্ঞাপন বয়কটে কতটা ক্ষতির মুখে পড়বে ফেসবুক

আপডেট টাইম : ১০:৪৫:৪৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১ জুলাই ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বর্ণবাদ, ঘৃণা ও বিদ্বেষপূর্ণ কনটেন্ট বন্ধ না করায় ইতোমধ্যে বিশ্বের বড় বড় বেশ কয়েকটি কোম্পানি ফেসবুকে তাদের বিজ্ঞাপন প্রচার বন্ধ করে দিয়েছে। এতে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে ফেসবুক। গত ২৬ জুন একদিনেই ফেসবুকের শেয়ারের দাম কমেছে আট শতাংশ। আর তাতে ফেসবুকের ক্ষতি হয়েছে অন্তত ছয় বিলিয়ন পাউন্ড।

তবে সাময়িক কিছু ক্ষতির সম্মুখীন হলেও শেষ পর্যন্ত এ ক্ষতি কাটিয়ে উঠবে ফেসবুক এমনটাই বলছেন বিশেষজ্ঞরা। আর ফেসবুক কর্তৃপক্ষ হয়তো চাপে পড়ে তাদের নীতিমালায় পরিবর্তন আনতে পারে বলে ধারণা বিশেষজ্ঞদের।

 জানা গেছে, বর্ণবাদের বিরুদ্ধে আন্দোলনকারী একটি সংগঠন ‘দ্য স্টপ হেইট ফর প্রফিট‌’ এখন বয়কটকে তাদের আন্দোলনের রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে।

আন্দোলনকারীরা বেশ কিছু বড় বড় কোম্পানিকে ফেসবুক এবং এ ধরনের অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মে বিজ্ঞাপন দেয়া বন্ধ করতে রাজি করাতে পেরেছেন।

এসব কোম্পানির মধ্যে সর্বশেষ যুক্ত হয়েছে ফোর্ড, অ্যাডিডাস এবং এইচপি। এর আগে ফেসবুকে বিজ্ঞাপন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছিল কোকা-কোলা, ইউনিলিভার এবং স্টারবাকস।

নিউজ ওয়েবসাইট এক্সিওন তাদের এক প্রতিবেদনে বলছে, মাইক্রোসফট গত মে মাস থেকে ফেসবুক এবং ইনস্টাগ্রামে বিজ্ঞাপন দেয়া বন্ধ করেছে। কারণ এই দুটি প্লাটফর্মে যে ধরনের আপত্তিকর কনটেন্ট প্রকাশ পাচ্ছে সেটা নিয়ে তাদের উদ্বেগ আছে।

এদিকে এই বয়কটও ফেসবুককে আর্থিক ক্ষতির মুখে ফেলতে পারে। কারণ ফেসবুকের মোট আয়ের একটা বড় অংশ বিজ্ঞাপন থেকে আসে।

এভাইভা ইনভেস্টরস এর ডেভিড কামিং জানান, ফেসবুকের ব্যাপারে এই যে একটা আস্থার সংকট তৈরি হয়েছে এবং তাদের কোনো নৈতিক অবস্থান নেই বলে একটা ধারণা তৈরি হয়েছে সেটা তাদের ব্যবসার ক্ষতি করতে পারে।

গত ২৬ জুন ফেসবুকের শেয়ারের দাম কমেছে প্রায় ৮ শতাংশ। এর ফলে ফেসবুকের প্রধান নির্বাহী এবং মার্ক জুকারবার্গের সম্পদ অন্তত কাগজে-কলমে ৬ বিলিয়ন বিলিয়ন পাউন্ড কমেছে।

কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে এটি আরও বড় ব্যাপার হয়ে দাঁড়াতে পারে কিনা কিংবা ফেসবুকের অস্তিত্বের জন্য হুমকি তৈরি করতে পারে কিনা সেটা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে এধরনের বয়কটে ফেসবুক খুব বড় কোনো ক্ষতির মুখে পড়বে না বলে মত বিশেষজ্ঞদের।

এর কারণ প্রথমত, অনেক কোম্পানি মাত্র এক মাসের জন্য ফেসবুক বয়কটের ঘোষণা দিয়েছেন । দ্বিতীয়ত, ফেসবুকের বিজ্ঞাপন রাজস্বের বেশিরভাগটাই কিন্তু আসে হাজার হাজার ছোট বা মাঝারি আকারের ব্যবসা থেকে।

সিএনএনের এক রিপোর্টে বলা হচ্ছে , সবচেয়ে বড় ১০০টি ব্র্যান্ড, যারা বিজ্ঞাপনের পেছনে সবচেয়ে বেশি ব্যয় করে, তাদের কাছ থেকে ফেসবুকের আয় ৪ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার অর্থাৎ ফেসবুকের মোট আয়ের মাত্র ৬ শতাংশ।

বেশিরভাগ মাঝারি কোম্পানি এখনো পর্যন্ত ফেসবুক বয়কটের ডাকে সাড়া দেয়নি।

তবে কোনো আন্দোলনের লক্ষ্য অর্জনে ফেসবুক একটি গুরুত্বপূর্ণ টার্গেট হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ফেসবুকের যে কাঠামো, সেখানে মার্ক জুকারবার্গের ব্যাপক কর্তৃত্ব রয়েছে। তিনি যদি চান তবে একটা বড় পরিবর্তন নিয়ে আসতে পারেন। কাজেই একজন মার্ক জুকারবার্গকে প্রভাবিত করতে পারলেই আন্দোলনের লক্ষ্য অর্জন সম্ভব।

এদিকে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে মার্ক জুকারবার্গ হয়তো পদক্ষেপ নিতে পারেন। ২৬ জুন ফেসবুক ঘোষণা করেছে যে তারা ঘৃণা এবং বিদ্বেষপূর্ণ যেসব কনটেন্ট সেগুলো ট্যাগ করা শুরু করবে। এ বিষয়ে সামনে আরও ঘোষণা আসতে পারে।

সূত্র : বিবিসি বাংলা