ঢাকা ০২:৫৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

করোনা মহামারীতে উন্নয়ন পিছিয়েছে কয়েক দশক

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৮:৩৮:১২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুন ২০২০
  • ২৩১ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বিশ্বের অন্যতম তিনটি জনবহুল দেশ বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানে ভয়াবহ গতিতে করোনাভাইরাস সংক্রমণ বাড়ছে। ভারতে করোনা আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা পাঁচ লাখ ছুঁই ছুঁই। পাকিস্তানে দুই লাখ এবং বাংলাদেশে সোয়া লাখের বেশি মানুষের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। করোনার ভয়াবহতার কারণে দক্ষিণ এশিয়ায় উন্নয়ন বা অগ্রগতি কয়েক দশক পিছিয়ে পড়েছে। খবর ফরেন পলিসির (এফপি)।

বৃহস্পতিবার অনলাইনে প্রকাশিত এফপির প্রতিবেদনে বলা হয়, দক্ষিণ এশিয়ায় করোনার সবচেয়ে বড় হটস্পট দিল্লি ও মুম্বাই। তবে দেশগুলোর বড় সব শহরই করোনার উচ্চ সংক্রমণের ঝুঁকিতে রয়েছে। তবে আশার কথা হল- বিশ্বের অন্য সব প্রান্তের চেয়ে এসব দেশে করোনা মহামারীতে তুলনামূলক কম মানুষ মারা যাচ্ছে।

চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা অবশ্য বলছেন, দক্ষিণ এশিয়ায় তরুণের সংখ্যা বয়স্কদের তুলনায় বেশি হওয়ায় এ পার্থক্য দেখা যাচ্ছে। তবে দেশ তিনটির অন্যসব খবরই খারাপ। মহামারীর কারণে স্বাস্থ্য খাত, শিক্ষা ও অর্থনীতি হুমকির মুখে পড়েছে। গত কয়েক দশকে ভারত ও বাংলাদেশ অর্থনীতিতে অনেক দূর এগিয়েছিল। কিন্তু মহামারীর কারণে দেশ দুটিতে দারিদ্র্যের হার বেড়েছে। মৌলবাদের উত্থানে পাকিস্তানের অর্থনীতি এক দশক ধরেই থেমে আছে। এর মধ্যে করোনার থাবায় দেশটি আরও বড় বিপর্যয়ের মধ্যে পড়েছে।

এফপির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, দক্ষিণ এশিয়ার তিনটি দেশেই করোনাভাইরাসের টেস্ট একেবারেই কম হচ্ছে। ফলে প্রাপ্ত তথ্যের তুলনায় আক্রান্তের সংখ্যা কয়েক গুণ বেশি হতে পারে। দক্ষিণ এশিয়ায় শুধু ভুটান ও নেপাল যথেষ্ট পরিমাণ পরীক্ষা করছে। আফগানিস্তানে প্রতি হাজারে মাত্র ১.৬ জনের পরীক্ষা করা হচ্ছে। অপরদিকে ভারতে হাজারে ৫.৫ এবং পাকিস্তানে হাজারে ৫.৩ জনের পরীক্ষা হচ্ছে। বাংলাদেশে এ হার হাজারে ৪.১ জন।

ইউনিসেফের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দক্ষিণ এশিয়াতে মহামারীর কারণে দারিদ্র্যের মধ্যে পড়েছে ১২ কোটির বেশি শিশু। বিশ্বজুড়ে এ সংখ্যা ২৪ কোটির বেশি। অর্থনৈতিক দিকের বাইরেও শিশুদের রয়েছে স্বাস্থ্যঝুঁকি। গত কয়েক মাসে দক্ষিণ এশিয়ায় শিশুদের মধ্যে নিউমোনিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে। হাসপাতালগুলো করোনার চিকিৎসায় ব্যস্ত থাকায় বাড়িতে বসে ঝুঁকি নিয়ে গর্ভবতী নারীরা সন্তান জন্ম দিতে বাধ্য হচ্ছেন।

ইউনিসেফের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, দক্ষিণ এশিয়ায় করোনায় ৪৩ কোটির বেশি শিশু স্কুলে যেতে পারছে না। অপরদিকে তাদের ওপর গৃহ নির্যাতন বাড়ছে।

ইউনিসেফের দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক প্রধান জিন গাউহ বলেছেন, কোভিড-১৯ এ অঞ্চলের পুরো একটি প্রজন্মের স্বপ্ন ও ভবিষ্যৎ ধ্বংস করে দিতে পারে।

তিনি বলেন, করোনার ভয়াবহতার কারণে অর্থনীতি খারাপ হচ্ছে। বৈদেশিক আয় কমছে, রেমিটেন্সে ভাটা পড়েছে। ফলে শিশুদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। অপুষ্টিতে পড়ছে শিশুদের একটি বড় অংশ।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

করোনা মহামারীতে উন্নয়ন পিছিয়েছে কয়েক দশক

আপডেট টাইম : ০৮:৩৮:১২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুন ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বিশ্বের অন্যতম তিনটি জনবহুল দেশ বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানে ভয়াবহ গতিতে করোনাভাইরাস সংক্রমণ বাড়ছে। ভারতে করোনা আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা পাঁচ লাখ ছুঁই ছুঁই। পাকিস্তানে দুই লাখ এবং বাংলাদেশে সোয়া লাখের বেশি মানুষের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। করোনার ভয়াবহতার কারণে দক্ষিণ এশিয়ায় উন্নয়ন বা অগ্রগতি কয়েক দশক পিছিয়ে পড়েছে। খবর ফরেন পলিসির (এফপি)।

বৃহস্পতিবার অনলাইনে প্রকাশিত এফপির প্রতিবেদনে বলা হয়, দক্ষিণ এশিয়ায় করোনার সবচেয়ে বড় হটস্পট দিল্লি ও মুম্বাই। তবে দেশগুলোর বড় সব শহরই করোনার উচ্চ সংক্রমণের ঝুঁকিতে রয়েছে। তবে আশার কথা হল- বিশ্বের অন্য সব প্রান্তের চেয়ে এসব দেশে করোনা মহামারীতে তুলনামূলক কম মানুষ মারা যাচ্ছে।

চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা অবশ্য বলছেন, দক্ষিণ এশিয়ায় তরুণের সংখ্যা বয়স্কদের তুলনায় বেশি হওয়ায় এ পার্থক্য দেখা যাচ্ছে। তবে দেশ তিনটির অন্যসব খবরই খারাপ। মহামারীর কারণে স্বাস্থ্য খাত, শিক্ষা ও অর্থনীতি হুমকির মুখে পড়েছে। গত কয়েক দশকে ভারত ও বাংলাদেশ অর্থনীতিতে অনেক দূর এগিয়েছিল। কিন্তু মহামারীর কারণে দেশ দুটিতে দারিদ্র্যের হার বেড়েছে। মৌলবাদের উত্থানে পাকিস্তানের অর্থনীতি এক দশক ধরেই থেমে আছে। এর মধ্যে করোনার থাবায় দেশটি আরও বড় বিপর্যয়ের মধ্যে পড়েছে।

এফপির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, দক্ষিণ এশিয়ার তিনটি দেশেই করোনাভাইরাসের টেস্ট একেবারেই কম হচ্ছে। ফলে প্রাপ্ত তথ্যের তুলনায় আক্রান্তের সংখ্যা কয়েক গুণ বেশি হতে পারে। দক্ষিণ এশিয়ায় শুধু ভুটান ও নেপাল যথেষ্ট পরিমাণ পরীক্ষা করছে। আফগানিস্তানে প্রতি হাজারে মাত্র ১.৬ জনের পরীক্ষা করা হচ্ছে। অপরদিকে ভারতে হাজারে ৫.৫ এবং পাকিস্তানে হাজারে ৫.৩ জনের পরীক্ষা হচ্ছে। বাংলাদেশে এ হার হাজারে ৪.১ জন।

ইউনিসেফের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দক্ষিণ এশিয়াতে মহামারীর কারণে দারিদ্র্যের মধ্যে পড়েছে ১২ কোটির বেশি শিশু। বিশ্বজুড়ে এ সংখ্যা ২৪ কোটির বেশি। অর্থনৈতিক দিকের বাইরেও শিশুদের রয়েছে স্বাস্থ্যঝুঁকি। গত কয়েক মাসে দক্ষিণ এশিয়ায় শিশুদের মধ্যে নিউমোনিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে। হাসপাতালগুলো করোনার চিকিৎসায় ব্যস্ত থাকায় বাড়িতে বসে ঝুঁকি নিয়ে গর্ভবতী নারীরা সন্তান জন্ম দিতে বাধ্য হচ্ছেন।

ইউনিসেফের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, দক্ষিণ এশিয়ায় করোনায় ৪৩ কোটির বেশি শিশু স্কুলে যেতে পারছে না। অপরদিকে তাদের ওপর গৃহ নির্যাতন বাড়ছে।

ইউনিসেফের দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক প্রধান জিন গাউহ বলেছেন, কোভিড-১৯ এ অঞ্চলের পুরো একটি প্রজন্মের স্বপ্ন ও ভবিষ্যৎ ধ্বংস করে দিতে পারে।

তিনি বলেন, করোনার ভয়াবহতার কারণে অর্থনীতি খারাপ হচ্ছে। বৈদেশিক আয় কমছে, রেমিটেন্সে ভাটা পড়েছে। ফলে শিশুদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। অপুষ্টিতে পড়ছে শিশুদের একটি বড় অংশ।