বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেছেন, ‘যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে কালক্ষেপণ, তাদের পুনর্বাসন ও আড়াল করার জন্য বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াসহ সংশ্লিষ্ট সবারই বিচার হওয়া উচিত’। তিনি আজ বিকেলে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে ডিআরইউ আয়োজিত ‘স্বজনদের স্মৃতিতে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতা করছিলেন।
ডিআরইউ সভাপতি জামাল উদ্দীনের সভাপতিত্বে ও নারী বিষয়ক সম্পাদক সুমি খানের পরিচালনায় সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন সংসদ সদস্য ওয়ারেসাত হোসেন বেলাল বীর প্রতীক, সরকারি কর্ম কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. এসএম আনোয়ারা বেগম। সভায় বক্তৃতা করেন ডিআরইউ’র সাবেক সভাপতি শাহেদ চৌধুরী, ডিআরইউ সমবায় সমিতির সাবেক সভাপতি মাহমুদুর রহমান খোকন, ডিআরইউ’র সহ-সভাপতি শরীফুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমেদ, যুগ্ম সম্পাদক মো. সাজ্জাদ হোসেন।
শহীদ বুদ্ধিজীবী অধ্যাপক আব্দুল আহাদ তালুকদারের পুত্র মিজানুর রহমান, শহীদ বুদ্ধিজীবী আব্দুস সাত্তারের পুত্র সাইফুল ইসলাম, শহীদ বুদ্ধিজীবী কাজী শামসুল হকের পুত্র কাজী সাইফুদ্দিন আব্বাস অনুষ্ঠানে স্বজনদের নিয়ে স্মৃতি চারণ করেন।
রাশেদ খান মেনন বলেন, ১৯৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ, ‘পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে সিমলায় যে চুক্তি হয় তার মূল কথা ছিলো স্ব স্ব দেশ চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করবে। সে অনুযায়ী বাংলাদেশ সরকার ১৯৭৩ সালে আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইবুনাল আইন প্রণয়ন ও আদালত গঠন করে’।
তিনি বলেন, ‘চুক্তি অনুসারে মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত ৯০ হাজার পাকিস্তানি সৈন্যের মধ্যে চিহ্নিত ১৯৫ জন যুদ্ধাপরাধীর বিচারের দায়িত্ব পাকিস্তান সরকারের উপর অর্পিত হলেও তারা তা আজও না করে একদিকে শিমলা চুক্তিকে ভঙ্গ করেছে। অন্যদিকে, বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায় কার্যকর হওয়ার পর শিমলা চুক্তি লংঘিত হয়েছে বিবৃতি দিয়ে পাকিস্তান মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছে’।
তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতাত্তোর বাংলাদেশে সাংবাদিকরাই প্রথম বুদ্ধিজীবী হত্যার বিচার দাবি করেছিলেন। সে সময় শহীদ বুদ্ধিজীবী শহীদুল্লাহ কায়সারের অনুজ সাংবাদিক জহির রায়হানকে সদস্য সচিব করে এ সংক্রান্ত একটি কমিটিও গঠিত হয়েছিলো। কিন্তু পরবর্তীতে জহির রায়হান নিখোঁজ হয়ে যাওয়ায় সে প্রক্রিয়া আর অগ্রসর হয়নি’।
রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘স্বাধীন বাংলাদেশকে নেতৃত্ব ও মেধাশূন্য করে দেয়ার জন্য সুপরিকল্পিতভাবে বুদ্ধিজীবী হত্যার নীল নকশা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা হয়। আজকের বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে শুধু বুদ্ধিজীবীদের স্মরণ নয় তাদের চিন্তা-চেতনাকে অনুসরণ করতে হবে।