হাওর বার্তা ডেস্কঃ প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস হাঁচি ও কাশির মাধ্যমে ছড়ায়। সংক্রমিত কেউ হাঁচি বা কাশি দিলে তার দুই মিটারের মধ্যে থাকা যেকেউ এতে আক্রান্ত হতে পারেন। তাই এই ভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা জোর দিয়েছেন সচেতনতাকে।
তারা জানিয়েছেন, নিয়মিত অন্তত ২০ সেকেন্ড ধরে সাবান দিয়ে হাত ধোয়া, সামাজিক মেলামেশা কমিয়ে দেয়া, বাড়িতে থাকা, যতটা সম্ভব বাইরে না বের হওয়া। আর যদি বের হতেই হয় তাহলে অন্যদের কাছ থেকে অন্তত দুই মিটার বা ৬ ফিট দূরে থাকতে হবে। জানেন কি? কেন বিশেষজ্ঞরা একজনের থেকে অন্যজনের দূরত্ব দুই মিটার বা ৬ ফিট রাখার কথা বলছেন? জেনে নিন এর কারণ-
জীবাণুযুক্ত হাতে চোখ, নাম, মুখ স্পর্শ করলে করোনা শরীরে প্রবেশ করে। এছাড়াও হাঁচি বা কাশি থেকে বাতাসের মাধ্যমে করোনাভাইরাস শ্বাস-প্রশ্বাসের সঙ্গে শরীরে প্রবেশ করে। হাঁচি-কাশির সঙ্গে একজন মানুষের মুখ দিয়ে সবেগে বেরিয়ে আসে অগণিত পানির বিন্দু মিশ্রিত বাতাস। যাকে ইংরেজিতে বলে ড্রপলেটস। যা আসছে তার ফুসফুস থেকে। যে ফুসফুস এবং শ্বাসতন্ত্রেই বাসা বাধে করোনাভাইরাস।
যদি হাঁচি বা কাশি দেয়া ব্যক্তি এরই মধ্যে করোনায় সংক্রমিত হয়ে থাকেন তবে তার প্রতিটি কাশির সঙ্গে বাতাসে বের হচ্ছে অসংখ্য করোনাভাইরাস। যা অন্যদেরকেও সংক্রমিত করতে পারে। তবে যদি আপনি কমপক্ষে একটা নির্দিষ্ট দূরত্বে থাকতে পারেন তাহলে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেক কম।
লন্ডনের কিংস কলেজের অধ্যাপক এবং চিকিৎসা বিজ্ঞানী নাতালি ম্যাকডারমট বলছেন, কেউ যখন হাঁচি বা কাশি দিচ্ছে তখন এই ড্রপলেটসগুলোর বেশিরভাগই দুই মিটারের বেশি যেতে পারে না। দুই-চারটি অবশ্যই যায় কিন্তু ভাইরাসে আক্রান্ত হবার ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি হয় যদি আপনি ড্রপলেটসগুলোর দুই মিটারের মধ্যে থাকেন।
অনেক বিজ্ঞানী বলেন, সূর্যের আলোয় যে অতিবেগুনী রশ্মি বা আলট্রাভায়োলেট রে থাকে তা বাতাসে ভাসমান ভাইরাস মেরে ফেলতে পারে। নাতালি ম্যাকডারমট বলছেন, কথাটা ঠিক, কিন্তু বাড়ির বাইরে বা রোদের মধ্যে আছেন বলেই যে আপনি নিরাপদ তা নয়।
তিনি আরো বলেন, আলট্রাভায়োলেট রশ্মি ভাইরাস মেরে ফেলতে পারে ঠিকই কিন্তু এটা কিন্তু এমন নয় যে এ রশ্মি লাগার সঙ্গে সঙ্গে ভাইরাস মারা যায়। সে জন্য করোনাভাইরাসকে একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত রোদের সংস্পর্শে থাকতে হবে।
নাতালি ম্যাকডারমট আরো বলেছেন, লোকে যদি করোনাভাইরাস থেকে নিরাপদ থাকতে চায় তাহলে তাকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার নিয়মগুলো গুরুত্বের সঙ্গে মেনে চলতে হবে। বাড়ির ভেতরে আপনার পরিবারের লোকদের সঙ্গে হয়তো দু মিটার দূরত্বে থাকার দরকার নেই। তবে যখন বাড়ির বাইরে যাচ্ছেন তখন এ নিয়ম মানতে হবে। যদি আপনি বাচ্চাদের নিয়ে পার্কে যান, তাহলে সেখানে অন্য একটা পরিবারের সঙ্গে পিকনিক করবেন না। অন্য লোকের সংস্পর্শে আসাটা যত কম হবে ততই ভালো।
সূত্র: বিবিসি