হাওর বার্তা ডেস্কঃ করোনা ভীতি এখন সমগ্র বিশ্ববাসীর মধ্যে ভর করেছে। সর্বশেষ অর্থাৎ ২৪ মার্চ ২০২০ তারিখ পর্যন্ত ১৯৫টি দেশ এবং অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস। সুতরাং নিজেকে নিরাপদে রাখা এবং অন্যকে ঝুঁকি থেকে রক্ষার জন্য করোনা আক্রান্ত সন্দেহভাজনদের প্রাতিষ্ঠানিক বা হোম কেয়ারেন্টাইন বাধ্যতামূলক।
তবে একজন কর্মব্যস্ত মানুষের পক্ষে ১৪ দিনের গৃহবাস নিঃসন্দেহে কষ্টসাধ্য এবং শরীরিক কর্মকাণ্ডের অভাবে অলসতাও ভর করতে পারে। নিম্ন বর্ণিত কয়েকটি শারীরিক কার্যক্রম করোনাভাইরাস প্রতিরোধে কেয়ারেন্টাইনের সময় আপনাকে সাহায্য করবে।
১। মেডিটেশন
কেয়ারেন্টাইন হয়ত একজনের প্রতিদিনের রুটিনকে ভারসাম্যহীন করে দিতে পারে। এমন সময় মানসিক চাপ কমানোর জন্য অল্প সময় মেডিটেশন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সকালে ঘুম থেকে ওঠার পরপরই ফোন, কম্পিউটার বা অন্য কারো সঙ্গে কথা বলার আগে মেডিটেশন করে নিন। চেষ্টা করুন শ্বাস-প্রশ্বাসের দিকে মনোনিবেশ করতে, এটি সমস্ত চিন্তাকে দূর করতে সহায়তা করবে। শুধু ১০ মিনিটের মেডিটেশন আপনাকে সারা দিন ভারসাম্যপূর্ণ এবং সক্রিয় রাখতে সহায়তা করবে।
২। ইনডোর ওয়াকিং
এসময় বাড়ির মধ্যেই স্বাচ্ছন্দ্যে নিজের ওয়াকিং সার্কিটটি তৈরি করতে পারে। হাঁটা এবং সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করা বা কোনো লম্বা স্থানে হাঁটা যেতে পারেন। কোনো ছোট ঘরে থাকলেও এটা করা সম্ভব। একজন মাত্র দুই হাজার পা হাঁটলেই একদিনের জন্য যথেষ্ট যা করতে মাত্র ১০ মিনিট সময়ের প্রয়োজন হবে।
৩। বারপিস
মাত্র দশ মিনিটের হাঁটা এবং পাঁচ মিনিটের বারপিস ব্যায়াম করেই শরীরের উপরের অংশ, পা এবং অন্যান্য অঙ্গ সচল রাখা সম্ভব। বারপিসকে অনেকে ‘ট্রিপল থ্রেট অ্যাটাক’ও বলে থাকে।
৪। জাম্পিং স্কোয়াট
বারপিস ব্যায়াম করার পর একজন নিয়মিত ১০ মিনিট স্কোয়াট জাম্পিং করতে পারে। যা পুরো শরীর সচল করতে সহায়তা করবে। জাম্পিং স্কোয়াট শরীর ঘামায় এবং সতেজতা ফিরিয়ে আনে।
৫। টেবিল টপ ক্রাঞ্চ
মাদুরের উপর শুয়ে টেবিল টপ ক্রাঞ্চ ব্যায়াম শুরু করুন। আপনার পা ৯০ ডিগ্রি কোণে উপরে রাখুন। কনুই বাঁকাতে হবে, হাত দুটি কানের পিছনে রাখুন। কেবল অ্যাবস ব্যবহার করে মাদুর থেকে সামান্য উপরে কাঁধ রেখে শ্বাস প্রশ্বাসের কার্যক্রম চালাতে হবে।
৬। জাম্পিং জ্যাক
এই ব্যায়াম পুরো শরীরের উপরই প্রভাব ফেলে। এটি দ্রুত শরীরের অঙ্গ প্রত্যঙ্গ সক্রিয় করতে সহয়তা করে এবং মনকে প্রফুল্ল করতে ভূমিকা রাখে। জাম্পিং জ্যাক একজনের নমনীয়তা, ওজন হ্রাস এবং মেজাজ ভাল করতে সহায়তা করে।
৭। নি-সাপোর্ট পুশ-আপ
পুশ-আপ ব্যায়ামটি শুরুতে কঠিন মনে হতে পারে। তবে নি-সাপোর্টের মাধ্যমে এই ব্যায়াম অনেকটা সহজ হয়ে যায়। মাংসপেশী সচল করতে কেয়ারেন্টাইনে থাকা অবস্থায় এটি কার্যকর ব্যায়াম হতে পারে।
৮। স্কিপিং রোপ জাম্পিং বা স্কিপিং
রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখার জন্য বেশ কার্যকর এই ব্যায়ামটি। পুরো শরীর সক্রিয় করায় এই ব্যায়াম প্রতি মিনিটে প্রায় ১০ থেকে ১৫ ক্যালোরি ক্ষয় করে। জাম্পিং রোপের মাধ্যমে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক হয়, শ্বাস-প্রশ্বাসের উন্নতি এবং যকৃতের সক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
৯। হাই নি
এই ব্যায়ামটির মাধ্যমে দৌড়ের গতিবৃদ্ধি এবং পেশীর সহিষ্ণুতা বৃদ্ধি পায়। উরুর মাংসের এবং শারীরিক সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্যেও এটি বেশ উপকারী।
১০। সান স্যালুটেশন
একে সূর্য প্রণামও বলা হয়। সূর্যের প্রতি সম্মান এবং ভক্তি প্রকাশের একটি প্রাচীন পদ্ধতি এই ব্যায়ামটি। এই রীতি একবার সম্পন্ন করতে প্রায় ১৪ ক্যালরি ক্ষয় হয়। প্রতিদিন কমপক্ষে ১২ বার এটি করলে শরীরের সুস্থতা বজায় থাকে।
উপরের এসব ব্যায়ামগুলোর পাশাপাশি মাউন্টেইন ক্লাইম্ব, শ্যাডো বক্সিং বা প্লাঙ্ক করতে পারেন।