ঢাকা ১০:৩৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রোগ প্রতিরোধে সবচেয়ে বেশি শক্তি ও পুষ্টি মিলবে এসব খাবারে

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৩:৩৭:০৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ মার্চ ২০২০
  • ২৪৩ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ করোনার আতঙ্কে কাঁপছে সারা বিশ্ব। বিশ্ববাসীকে তাই বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। যাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, এই ভাইরাস তাদের খুব দ্রুত আক্রান্ত করে। তাই এমন খাবার গ্রহণ করা জরুরি যা শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করবে।

খাবারে কতটুকু পুষ্টি থাকে তা মোটামুটি সবারই জানা। কিন্তু কোন খাবারগুলো পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী ও পুষ্টিকর তা অনেকেরই অজানা। গবেষণায় দেখা গেছে, সুস্থ থাকার জন্য খাদ্য তালিকায় ভিটামিন এবং খনিজ উপাদান প্রয়োজন। সেজন্য শক্তিশালী ও পুষ্টিকর খাবারের দিকে নজর দিতে হবে। চলুন জেনে নেয়া যাক সেই খাবারগুলো সম্পর্কে-

সবুজ শাক

পুষ্টিবিদরা বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সবুজ শাক খাওয়ার পরামর্শ দেন। কারণ সবুজ শাকে প্রচুর পুষ্টি উপাদান থাকে। এটি সারাদিনের পুষ্টি চাহিদা পূরণ করতে সাহায্য করে। স্পিনাচ, কপি, সবুজ শাক কপারের ভালো উৎস। এছাড়াও এগুলো আঁশ, ভিটামিন কে, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং ফলিডের ভালো উৎস।

স্যামন মাছ

এই মাছে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে। শরীরকে একশ শতাংশ সক্রিয় রাখতে এই ফ্যাটি অ্যাসিড অত্যন্ত জরুরি। অনেক রোগ প্রতিরোধেও কার্যকরী এটি। হার্টের রোগ, ডিমেনশিয়া, মানসিক অবসাদ কমাতে কাজে আসে এই মাছ। এটি তৈরি করাও সহজ এবং খেতেও সুস্বাদু। এতে অনেক ভিটামিন, মিনারেল এবং প্রোটিন থাকে।

কালে

কালে এক ধরনের শাক। এটি দেখতে অনেকটা ব্রকোলির মতো। ভারতে আলাদা করে এর কোনো বিশেষ নাম না থাকলেও, সুপারমার্কেটগুলোতে কালে নামেই আপনি পাবেন। অনেকেই একে পালং শাকের খাদ্যগুণের সঙ্গে মিলিয়ে দেন। তবে গবেষণা বলছে, কালে শাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, মিনারেল, ফাইবার এবং অ্যান্টঅক্সিডেন্ট থাকে। এই শাকে রয়েছে পটাশিয়াম, ক্যালশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, কপার ও ম্যাঙ্গানিজ। এই শাক ক্যানসার প্রতিরোধ করে।

সামুদ্রিক শৈবাল

সমুদ্রে শুধু উপকারী মাছ নয়, রয়েছে প্রচুর পরিমাণে সবুদ শাক-সবজিও। এগুলোর মধ্যে অত্যন্ত উপকারী হল সামুদ্রিক শৈবাল। সুশি তৈরির জন্য এই শৈবাল ব্যবহার করা হয়। এছাড়া খাবার পেঁচিয়ে রাখতেও ব্যবহার হয় এই শাক। এতে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেশিয়াম এবং ম্যাঙ্গানিজ থাকে।

রসুন

রসুনের মতো ছোট্ট ওই সবজির কিন্তু বিস্তর গুণাগুণ। শুধু রান্না সুস্বাদু করাই নয়, এর খাদ্যগুণও অসম্ভব বেশি। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, বিওয়ান এবং বিসিক্স থাকে। রসুনে ভরপুর রয়েছে ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, কপার, ম্যাঙ্গানিজ ও সেলেনিয়াম। রসুন ক্যানসার প্রতিরোধ করে এবং উচ্চ রক্তচাপ কমায়।

শেলফিশ

শেলফিশের তালিকায় রয়েছে অনেক কিছুই। তবে সবচেয়ে সহজলভ্য হল ঝিনুক, শামুক, ওয়েস্টার। এগুললোতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি১২, জিঙ্ক থাকে। রয়েছে পটাশিয়াম, ভিটামিন সি, সেলেনিয়াম ও আয়রন। সবচেয়ে পুষ্টিকর প্রাণীর মধ্যে রয়েছে এই শেলফিশ।

আলু

একটি আলুতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, আয়রণ, কপার ও ম্যাঙ্গানিজ। এতে রয়েছে ভিটামিন সি ও ভিটামিন বি। আলু খেতেও অত্যন্ত সুস্বাদু।

যকৃৎ

প্রাণীর সমস্ত দেহাংশের মধ্যে সবচেয়ে পুষ্টিকর হল যকৃৎ। এটি শরীরে মেটাবলিজম বাড়াতে কার্যকরী। এতে রয়েছে ভিটামিন বি১২, বি৫, বি৬, বি২, এ এবং কপার। রয়েছে আয়রন, ফসফরাস, জিঙ্ক, সেলেনিয়াম। তাই সপ্তাহে অন্তত একবার যকৃৎ খেয়ে শরীরের প্রয়োজনীয় পুষ্টি পূরণ করুন।

সার্ডিন

সার্ডিন একধরনের তৈলাক্ত মাছ। এই পুরো মাছটাই খেয়ে নেয়া যায়। এতে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে।

ব্লুবেরি বা জাম

যদি ব্লুবেরি হাতের কাছে না পান তবে দেশি জামও খেতে পারেন। এতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। শরীরে রক্ত তৈরি করে। মস্তিষ্ককে সজাগ রাখতে সাহায্য করে এই জাম।

ডিমের কুসুম

ডিমের কুসুমে কোলেস্টেরল থাকে। কিন্তু গবেষণা বলছে, এতে শরীরের ক্ষতির পরিমাণ নেই। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, প্রোটিন এবং মিনারেল থাকে। থাকে স্বাস্থ্যকর ফ্যাটও। ওজন কমাতে সাহায্য করে ডিমের কুসুম। এটি সহজলভ্য এবং খেতেও সুস্বাদু।

মাশরুম

সুস্বাদু এই খাবার নিউট্রিশনের পাওয়ারহাউস বলা যেতে পারে। কপারের ভালো উৎস এই মাশরুমে সেলেনিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, জিঙ্ক, ফলিত এবং ভিটামিন বি১, বি৫, বি৬ এবং ডি পাওয়া যায়। ছোট একটি মাশরুমে দৈনিক কপারের চাহিদা পূরণ হয়।

ডার্ক চকোলেট

প্রচুর পরিমাণে কোকোয়া দেয়া ডার্ক চকোলেট শরীরের পক্ষে দারুণ উপকারী। এতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, আয়রন, ম্যাগনেশিয়াম, কপার ও ম্যাঙ্গানিজ থাকে। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি অক্সিডেন্টও। উচ্চ রক্তচাপ কমানোর পাশাপাশি এটি শরীরে রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে তোলে। হার্টের রোগ কমাতেও সাহায্য করে ডার্ক চকোলেট।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

রোগ প্রতিরোধে সবচেয়ে বেশি শক্তি ও পুষ্টি মিলবে এসব খাবারে

আপডেট টাইম : ০৩:৩৭:০৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ মার্চ ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ করোনার আতঙ্কে কাঁপছে সারা বিশ্ব। বিশ্ববাসীকে তাই বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। যাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, এই ভাইরাস তাদের খুব দ্রুত আক্রান্ত করে। তাই এমন খাবার গ্রহণ করা জরুরি যা শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করবে।

খাবারে কতটুকু পুষ্টি থাকে তা মোটামুটি সবারই জানা। কিন্তু কোন খাবারগুলো পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী ও পুষ্টিকর তা অনেকেরই অজানা। গবেষণায় দেখা গেছে, সুস্থ থাকার জন্য খাদ্য তালিকায় ভিটামিন এবং খনিজ উপাদান প্রয়োজন। সেজন্য শক্তিশালী ও পুষ্টিকর খাবারের দিকে নজর দিতে হবে। চলুন জেনে নেয়া যাক সেই খাবারগুলো সম্পর্কে-

সবুজ শাক

পুষ্টিবিদরা বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সবুজ শাক খাওয়ার পরামর্শ দেন। কারণ সবুজ শাকে প্রচুর পুষ্টি উপাদান থাকে। এটি সারাদিনের পুষ্টি চাহিদা পূরণ করতে সাহায্য করে। স্পিনাচ, কপি, সবুজ শাক কপারের ভালো উৎস। এছাড়াও এগুলো আঁশ, ভিটামিন কে, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং ফলিডের ভালো উৎস।

স্যামন মাছ

এই মাছে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে। শরীরকে একশ শতাংশ সক্রিয় রাখতে এই ফ্যাটি অ্যাসিড অত্যন্ত জরুরি। অনেক রোগ প্রতিরোধেও কার্যকরী এটি। হার্টের রোগ, ডিমেনশিয়া, মানসিক অবসাদ কমাতে কাজে আসে এই মাছ। এটি তৈরি করাও সহজ এবং খেতেও সুস্বাদু। এতে অনেক ভিটামিন, মিনারেল এবং প্রোটিন থাকে।

কালে

কালে এক ধরনের শাক। এটি দেখতে অনেকটা ব্রকোলির মতো। ভারতে আলাদা করে এর কোনো বিশেষ নাম না থাকলেও, সুপারমার্কেটগুলোতে কালে নামেই আপনি পাবেন। অনেকেই একে পালং শাকের খাদ্যগুণের সঙ্গে মিলিয়ে দেন। তবে গবেষণা বলছে, কালে শাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, মিনারেল, ফাইবার এবং অ্যান্টঅক্সিডেন্ট থাকে। এই শাকে রয়েছে পটাশিয়াম, ক্যালশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, কপার ও ম্যাঙ্গানিজ। এই শাক ক্যানসার প্রতিরোধ করে।

সামুদ্রিক শৈবাল

সমুদ্রে শুধু উপকারী মাছ নয়, রয়েছে প্রচুর পরিমাণে সবুদ শাক-সবজিও। এগুলোর মধ্যে অত্যন্ত উপকারী হল সামুদ্রিক শৈবাল। সুশি তৈরির জন্য এই শৈবাল ব্যবহার করা হয়। এছাড়া খাবার পেঁচিয়ে রাখতেও ব্যবহার হয় এই শাক। এতে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেশিয়াম এবং ম্যাঙ্গানিজ থাকে।

রসুন

রসুনের মতো ছোট্ট ওই সবজির কিন্তু বিস্তর গুণাগুণ। শুধু রান্না সুস্বাদু করাই নয়, এর খাদ্যগুণও অসম্ভব বেশি। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, বিওয়ান এবং বিসিক্স থাকে। রসুনে ভরপুর রয়েছে ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, কপার, ম্যাঙ্গানিজ ও সেলেনিয়াম। রসুন ক্যানসার প্রতিরোধ করে এবং উচ্চ রক্তচাপ কমায়।

শেলফিশ

শেলফিশের তালিকায় রয়েছে অনেক কিছুই। তবে সবচেয়ে সহজলভ্য হল ঝিনুক, শামুক, ওয়েস্টার। এগুললোতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি১২, জিঙ্ক থাকে। রয়েছে পটাশিয়াম, ভিটামিন সি, সেলেনিয়াম ও আয়রন। সবচেয়ে পুষ্টিকর প্রাণীর মধ্যে রয়েছে এই শেলফিশ।

আলু

একটি আলুতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, আয়রণ, কপার ও ম্যাঙ্গানিজ। এতে রয়েছে ভিটামিন সি ও ভিটামিন বি। আলু খেতেও অত্যন্ত সুস্বাদু।

যকৃৎ

প্রাণীর সমস্ত দেহাংশের মধ্যে সবচেয়ে পুষ্টিকর হল যকৃৎ। এটি শরীরে মেটাবলিজম বাড়াতে কার্যকরী। এতে রয়েছে ভিটামিন বি১২, বি৫, বি৬, বি২, এ এবং কপার। রয়েছে আয়রন, ফসফরাস, জিঙ্ক, সেলেনিয়াম। তাই সপ্তাহে অন্তত একবার যকৃৎ খেয়ে শরীরের প্রয়োজনীয় পুষ্টি পূরণ করুন।

সার্ডিন

সার্ডিন একধরনের তৈলাক্ত মাছ। এই পুরো মাছটাই খেয়ে নেয়া যায়। এতে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে।

ব্লুবেরি বা জাম

যদি ব্লুবেরি হাতের কাছে না পান তবে দেশি জামও খেতে পারেন। এতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। শরীরে রক্ত তৈরি করে। মস্তিষ্ককে সজাগ রাখতে সাহায্য করে এই জাম।

ডিমের কুসুম

ডিমের কুসুমে কোলেস্টেরল থাকে। কিন্তু গবেষণা বলছে, এতে শরীরের ক্ষতির পরিমাণ নেই। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, প্রোটিন এবং মিনারেল থাকে। থাকে স্বাস্থ্যকর ফ্যাটও। ওজন কমাতে সাহায্য করে ডিমের কুসুম। এটি সহজলভ্য এবং খেতেও সুস্বাদু।

মাশরুম

সুস্বাদু এই খাবার নিউট্রিশনের পাওয়ারহাউস বলা যেতে পারে। কপারের ভালো উৎস এই মাশরুমে সেলেনিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, জিঙ্ক, ফলিত এবং ভিটামিন বি১, বি৫, বি৬ এবং ডি পাওয়া যায়। ছোট একটি মাশরুমে দৈনিক কপারের চাহিদা পূরণ হয়।

ডার্ক চকোলেট

প্রচুর পরিমাণে কোকোয়া দেয়া ডার্ক চকোলেট শরীরের পক্ষে দারুণ উপকারী। এতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, আয়রন, ম্যাগনেশিয়াম, কপার ও ম্যাঙ্গানিজ থাকে। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি অক্সিডেন্টও। উচ্চ রক্তচাপ কমানোর পাশাপাশি এটি শরীরে রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে তোলে। হার্টের রোগ কমাতেও সাহায্য করে ডার্ক চকোলেট।