ঢাকা ০৮:৫৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আল্লহর রহমত তার চেয়ে অনেক বড় বিপদ যত বড় হোক না কেন

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৬:৫৩:০৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ মার্চ ২০২০
  • ৩১৭ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বর্তমান বিশ্বে সবচেয়ে আলোচিত বিষয় হচ্ছে করোনাভাইরাস। দিনদিন এই ভাইরাসে মৃ’তের সংখ্যা বেড়েই চলছে। সারাবিশ্বে এখন পর্যন্ত এই ভাইরাসে মৃ’ত্যু হয়েছে ৮ হাজার মানুষের। এরইমধ্যে আ’ক্রান্তের সংখ্যা ২ লাখ ছাড়িয়েছে। এছাড়া চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে ৬৩ হাজার ৬৮৮ জন। ইতোমধ্যে এই ভাইরাসে বাংলাদেশে একজনের মৃ’ত্যু হয়েছে। আ’ক্রান্ত হয়েছে ১৮ জন।

এমতাবস্তায়, মসজিদে হারাম ও মসজিদে নববির প্রধান ইমাম শায়খ ড. আব্দুর রহমান সুদাইসি দিন দিন কাবা শরিফ ও মসজিদে নববি মুসল্লিহীন হয়ে যাওয়ায় আগেবপ্রবণ হয়ে পড়েছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটারে তার আবেগমাখা প্রর্থণা সবার হৃদয়কে নাড়া দিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ টুইটারে তিনি উল্লেখ করেন-

– হে আল্লাহ! আপনার ঘর থেকে আমাদের বিচ্ছিন্ন করবেন না। – হে আল্লাহ! আমাদের পাপের কারণে পবিত্র মসজিদের নামাজের জামাআত থেকে বঞ্চিত করবেন না। – হে আল্লাহ! আপনার কাছে আমাদের আবার ফিরিয়ে নিন। – হে আল্লাহ! আমাদের তাওবা কবুল করুন। – হে আল্লাহ! আমাদের এবং মুসলিম উম্মাহকে সব ধরণের মহামা’রি ও দূরারো’গ্য ব্যা’ধি থেকে হেফাজত করুন।

কাবা শরিফের প্রধান ইমাম শায়খ আব্দুর রহমান আস-সুদাইসির আবেগঘন এ আহ্বানগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটারে এভাবেই ওঠে এসেছে। আল্লাহর কাছে তিনি আরও আহ্বান করেন- – হে আল্লাহ! মুসিবত দিন দিন কঠিন থেকে কঠিন হচ্ছে। চারদিক অন্ধকার হয়ে আসছে। তুমি ছাড়া আমাদের ফরিয়াদ শোনার আর কেউ নেই হে আল্লাহ!, তুমি ছাড়া আর কে আছে? হে আল্লাহ! যার কাছে আমরা সাহায্য চাইবো। – হে আল্লাহ! আমাদের এ অবস্থার উপর দয়া করুন। আমাদের অক্ষমতাগুলো দূর করে আমাদের ক্ষমা করুন। হে আল্লাহ! তুমিই আমাদের অভিভাবক।

শায়খ সুদাইসি আবেগঘন সেরা যে আবেদনে মুসলিম হৃদয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে তাহলো- হে আল্লাহ! এই বিপদ মহামা’রির কারণে তোমার ঘরে যেতে না পারার ব্যা’থা আর সইতে পারছি না। হে মহান শক্তিমান, দয়া করে এই মহামা’রি দূর করে দাও।’ এদিকে কাবা শরিফের আজান পরিবর্তন সম্পর্কে টুইটে তিনি আরও লেখেন, ‘আজ থেকে আমরা মুয়াজ্জিনকে এ শব্দ বলতে শুনবো যে, ‘সাল্লু ফি রিহালিকুম’। অর্থাৎ নিজ নিজ জায়গায় নামাজ পড়ে নাও’।

আরেক টুইটে তিনি লেখেন- ‘তুমি থাকতে কার কাছে অভিযোগ করব আল্লাহ! তুমি ছাড়া আর কাছে হাত পাতবো হে আল্লাহ! তুমিই তো একমাত্র মাবুদ। তোমাকে ছেড়ে আমরা কার এবাদত করব? তোমার উপরই আমাদের সব আশা-ভরসা। হে আল্লাহ! আমাদের সেসব লোকদের অন্তর্ভুক্ত কর, যারা নেয়ামত পেলে শোকর আদায় করে। বিপ’দে সবর করে। গোনা’হ হয়ে গেলে তওবা করে।

প্রা’ণঘাতী মহামা’রি করোনাভাই’রাসের এ বি’পদ মুহূর্তে তিনি বেশি বেশি এ দোয়া পড়তে গুরুত্বারোপ করেন। আর তাহলো- لَا حَوْلَ وَ لَا قُوَّةَ اِلَّا بِالله

উচ্চারণ : ‘লা হাউলা ওয়ালা কুয়াতা ইল্লা বিল্লাহিল আলিয়্যিল আজিম।’
অর্থ : ‘আল্লাহ ছাড়া কোনো শক্তি নেই, কোনো ভরসা নেই, যিনি মহান ও সর্বশক্তিমান।’

এ দোয়া সম্পর্কে তিনি টুইটে লেখেন- ‘লা হাওলা’ পড়ার মাধ্যমে কত বিপদ থেকে মুক্তি পাওয়া যায় এবং আল্লাহর প্রশান্তি, দয়া ও মদদ পাওয়া যায় তা যদি মানুষ জানতো তবে এ দোয়া এমনভাবে পড়তো যে, মুহূর্তের জন্য বিরাম নিতো না। বরং চলতে ফিরতে, উঠতে বসতে সব সময় ‘লা হাওলা ওয়া লা কুয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহিল আলিয়্যিল আজিম’ পড়তো।

করোনা থেকে মুক্তিতে তিনি আল্লাহর কাছে এভাবে আবেদন করেন- হে আল্লাহ! তোমার কাছেই আমানত রাখছি এই পবিত্র নগরি হারাম শরীফ ও তার বাসিন্দাদের। নারী পুরুষ যুবক-বৃদ্ধ-শিশু, ঘর-বাড়ি, আকাশ-মাটি সবকিছুই তোমার কাছে আমানত রাখলাম। দয়া করে তুমি এগুলোকে মহামা’রি থেকে হেফাজত কর। তোমার মহান কুদরতে তুমি করোনাভাই’রাস দূর করে দাও।’

পরিশেষে সবার জন্য সাহস যোগাতে আশ্বস্থ করে লেখেন- বিপদ যত বড় হোক, তা চিরদিনের নয়। বরং বিপদ যত বড় হোক না কেন, আল্লহর রহমত তার চেয়ে অনেক বড়। আল্লাহর ইচ্ছায়, আমাদের মুক্তি অতি কাছেই। সুতরাং হতাশ হবেন না। অধৈর্য হবেন না। অস্থিরতা প্রকাশ করবেন না। আল্লাহকে স্মরণ করতে থাকুন। আল্লাহর উপর ভরসা রাখুন। আল্লাহর সিদ্ধান্তের উপর নিজের সবকিছু সমার্পণ করুন। অন্যকেও আল্লাহর ওপর ভরসা করতে নিশ্চিন্ত করুন। আমিন।

 

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

আল্লহর রহমত তার চেয়ে অনেক বড় বিপদ যত বড় হোক না কেন

আপডেট টাইম : ০৬:৫৩:০৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ মার্চ ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বর্তমান বিশ্বে সবচেয়ে আলোচিত বিষয় হচ্ছে করোনাভাইরাস। দিনদিন এই ভাইরাসে মৃ’তের সংখ্যা বেড়েই চলছে। সারাবিশ্বে এখন পর্যন্ত এই ভাইরাসে মৃ’ত্যু হয়েছে ৮ হাজার মানুষের। এরইমধ্যে আ’ক্রান্তের সংখ্যা ২ লাখ ছাড়িয়েছে। এছাড়া চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে ৬৩ হাজার ৬৮৮ জন। ইতোমধ্যে এই ভাইরাসে বাংলাদেশে একজনের মৃ’ত্যু হয়েছে। আ’ক্রান্ত হয়েছে ১৮ জন।

এমতাবস্তায়, মসজিদে হারাম ও মসজিদে নববির প্রধান ইমাম শায়খ ড. আব্দুর রহমান সুদাইসি দিন দিন কাবা শরিফ ও মসজিদে নববি মুসল্লিহীন হয়ে যাওয়ায় আগেবপ্রবণ হয়ে পড়েছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটারে তার আবেগমাখা প্রর্থণা সবার হৃদয়কে নাড়া দিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ টুইটারে তিনি উল্লেখ করেন-

– হে আল্লাহ! আপনার ঘর থেকে আমাদের বিচ্ছিন্ন করবেন না। – হে আল্লাহ! আমাদের পাপের কারণে পবিত্র মসজিদের নামাজের জামাআত থেকে বঞ্চিত করবেন না। – হে আল্লাহ! আপনার কাছে আমাদের আবার ফিরিয়ে নিন। – হে আল্লাহ! আমাদের তাওবা কবুল করুন। – হে আল্লাহ! আমাদের এবং মুসলিম উম্মাহকে সব ধরণের মহামা’রি ও দূরারো’গ্য ব্যা’ধি থেকে হেফাজত করুন।

কাবা শরিফের প্রধান ইমাম শায়খ আব্দুর রহমান আস-সুদাইসির আবেগঘন এ আহ্বানগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটারে এভাবেই ওঠে এসেছে। আল্লাহর কাছে তিনি আরও আহ্বান করেন- – হে আল্লাহ! মুসিবত দিন দিন কঠিন থেকে কঠিন হচ্ছে। চারদিক অন্ধকার হয়ে আসছে। তুমি ছাড়া আমাদের ফরিয়াদ শোনার আর কেউ নেই হে আল্লাহ!, তুমি ছাড়া আর কে আছে? হে আল্লাহ! যার কাছে আমরা সাহায্য চাইবো। – হে আল্লাহ! আমাদের এ অবস্থার উপর দয়া করুন। আমাদের অক্ষমতাগুলো দূর করে আমাদের ক্ষমা করুন। হে আল্লাহ! তুমিই আমাদের অভিভাবক।

শায়খ সুদাইসি আবেগঘন সেরা যে আবেদনে মুসলিম হৃদয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে তাহলো- হে আল্লাহ! এই বিপদ মহামা’রির কারণে তোমার ঘরে যেতে না পারার ব্যা’থা আর সইতে পারছি না। হে মহান শক্তিমান, দয়া করে এই মহামা’রি দূর করে দাও।’ এদিকে কাবা শরিফের আজান পরিবর্তন সম্পর্কে টুইটে তিনি আরও লেখেন, ‘আজ থেকে আমরা মুয়াজ্জিনকে এ শব্দ বলতে শুনবো যে, ‘সাল্লু ফি রিহালিকুম’। অর্থাৎ নিজ নিজ জায়গায় নামাজ পড়ে নাও’।

আরেক টুইটে তিনি লেখেন- ‘তুমি থাকতে কার কাছে অভিযোগ করব আল্লাহ! তুমি ছাড়া আর কাছে হাত পাতবো হে আল্লাহ! তুমিই তো একমাত্র মাবুদ। তোমাকে ছেড়ে আমরা কার এবাদত করব? তোমার উপরই আমাদের সব আশা-ভরসা। হে আল্লাহ! আমাদের সেসব লোকদের অন্তর্ভুক্ত কর, যারা নেয়ামত পেলে শোকর আদায় করে। বিপ’দে সবর করে। গোনা’হ হয়ে গেলে তওবা করে।

প্রা’ণঘাতী মহামা’রি করোনাভাই’রাসের এ বি’পদ মুহূর্তে তিনি বেশি বেশি এ দোয়া পড়তে গুরুত্বারোপ করেন। আর তাহলো- لَا حَوْلَ وَ لَا قُوَّةَ اِلَّا بِالله

উচ্চারণ : ‘লা হাউলা ওয়ালা কুয়াতা ইল্লা বিল্লাহিল আলিয়্যিল আজিম।’
অর্থ : ‘আল্লাহ ছাড়া কোনো শক্তি নেই, কোনো ভরসা নেই, যিনি মহান ও সর্বশক্তিমান।’

এ দোয়া সম্পর্কে তিনি টুইটে লেখেন- ‘লা হাওলা’ পড়ার মাধ্যমে কত বিপদ থেকে মুক্তি পাওয়া যায় এবং আল্লাহর প্রশান্তি, দয়া ও মদদ পাওয়া যায় তা যদি মানুষ জানতো তবে এ দোয়া এমনভাবে পড়তো যে, মুহূর্তের জন্য বিরাম নিতো না। বরং চলতে ফিরতে, উঠতে বসতে সব সময় ‘লা হাওলা ওয়া লা কুয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহিল আলিয়্যিল আজিম’ পড়তো।

করোনা থেকে মুক্তিতে তিনি আল্লাহর কাছে এভাবে আবেদন করেন- হে আল্লাহ! তোমার কাছেই আমানত রাখছি এই পবিত্র নগরি হারাম শরীফ ও তার বাসিন্দাদের। নারী পুরুষ যুবক-বৃদ্ধ-শিশু, ঘর-বাড়ি, আকাশ-মাটি সবকিছুই তোমার কাছে আমানত রাখলাম। দয়া করে তুমি এগুলোকে মহামা’রি থেকে হেফাজত কর। তোমার মহান কুদরতে তুমি করোনাভাই’রাস দূর করে দাও।’

পরিশেষে সবার জন্য সাহস যোগাতে আশ্বস্থ করে লেখেন- বিপদ যত বড় হোক, তা চিরদিনের নয়। বরং বিপদ যত বড় হোক না কেন, আল্লহর রহমত তার চেয়ে অনেক বড়। আল্লাহর ইচ্ছায়, আমাদের মুক্তি অতি কাছেই। সুতরাং হতাশ হবেন না। অধৈর্য হবেন না। অস্থিরতা প্রকাশ করবেন না। আল্লাহকে স্মরণ করতে থাকুন। আল্লাহর উপর ভরসা রাখুন। আল্লাহর সিদ্ধান্তের উপর নিজের সবকিছু সমার্পণ করুন। অন্যকেও আল্লাহর ওপর ভরসা করতে নিশ্চিন্ত করুন। আমিন।