ঢাকা ০৪:১৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিদেশ ফেরতদের ক্ষেত্রে হাইকোর্টের পাঁচ নির্দেশনা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৯:৫৮:০৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ মার্চ ২০২০
  • ২৫৩ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বিদেশ ফেরত প্রতিটি যাত্রীকে ১৪ দিনের বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টিনে রাখাসহ পাঁচটি নির্দেশনা দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে হাসপাতাল অথবা সরকার যেখানে ভাল মনে করবে সেখানে তাদের রেখে মানসম্মত খাদ্য, ও  চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে হবে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব, স্বাস্থ্যসচিব, বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন সচিব, পররাষ্ট্র সচিব এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে এই নির্দেশনা দিয়েছেন হাইকোর্ট। গতকাল বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মহিউদ্দিন শামীমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই নির্দেশনা দেন। একইসঙ্গে বিদেশ থেকে আসা সবাইকে কেন কোয়ারেন্টিনে রাখার নির্দেশ দেয়া হবে না, তা জানতে চেয়েছে হাইকোর্ট রুল জারি করেছেন। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন রিটকারী আইনজীবী ড. ইউনুস আলী আকন্দ ও অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে আদালত ব্যারিস্টার রেজা-ই-রাব্বি খন্দকারের বক্তব্য শুনেন। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন  ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার নওরোজ  মো. রাসেল চৌধুরী। আদেশর পর ডেপুর্টি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী বলেন, হাইকোর্ট আদেশে বলেছেন, বিদেশ থেকে যারা আসছেন তাদেরকে অবশ্যই ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে  থাকতে হবে।

এ বিষয়ে কোয়ারেন্টিন অথরিটি নিশ্চিত করবেন যে, বিমানবন্দর থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যেন প্রয়োজনবোধে তাদের সহায়তা করে। তিনি বলেন, আদালত বলেছেন, কোনো একটা হসপিটাল অথবা সরকার যেখানে ভাল মনে করবে সেখানে রাখবে। তাদের মানসম্মত খাদ্য, মানসম্মত চিকিৎসা ও মানসম্মত পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। যারা চিকিৎসাসেবা দেবেন, বিশেষ করে ডাক্তারসহ অন্যদেরকে সতকর্তামূলক ড্রেসআপ এবং  যা যা দরকার- তা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। ব্যারিস্টার রেজা-ই-রাব্বি খন্দকারের সাংবাদিকদের জানান, আদালত করোনা ভাইরাস ইস্যুতে ৫টি নির্দেশনা দিয়েছেন। বাংলাদেশে তিনটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, পাঁচটি স্থলবন্দর ও দুইটি নৌবন্দর রয়েছে। এসব বন্দর দিয়ে যারাই আসবেন, তাদের ক্ষেত্রে এসব নির্দেশনা প্রতিপালন করার কথা বলা হয়েছে। ১. যারাই বিদেশ থেকে আসবেন, সিভিল এভিয়েশন বিভাগ তাদেরকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে হস্তান্তর বরবেন। ২. আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদেরকে স্বাস্থ্য বিভাগের কাছে হস্তান্তর করবেন।  ৩. স্বাস্থ্য বিভাগ বিদেশ থেকে আসা সন্দেহভাজনদের মেডিকেল চেক আপ/স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে স্বাস্থ্য সচিবের প্রতি নির্দেশ; ৪. বিদেশ ফেরত এসব ব্যক্তিকে হোম কোয়ারেন্টিন করবেন, নাকি প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন করবেন তা নির্ধারণ করবেন। এসব কোয়ারেন্টিনে অবশ্যই তাদেরকে ১৪দিন থাকতে হবে। ৫.জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে কোয়ারেন্টিনে রাখা ব্যক্তিদের তদারকি করতে জনপ্রশাসন সচিবের প্রতি নির্দেশ। এর আগে গত ১৫ই মার্চ বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধে নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ড. মো. ইউনুছ আলী আকন্দ। রিটে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সচিব, শিক্ষা মন্ত্রণালয় সচিব, বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সচিব ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালককে বিবাদী করা হয়।  রিট আবেদনে তিনি দেশের সকল বিমানবন্দর, নৌবন্দর ও স্থলবন্দরে করোনা ভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তিকে শনাক্তে এবং সকল বন্দরের প্রবেশমুখে মনিটরিং, জনগণকে রক্ষায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়াসহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের নির্দেশনা চান। করোনা ভাইরাস থেকে জনগণকে রক্ষায় সরকারের ব্যর্থতা ও নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারির আজিও জানান। রিট আবেদনে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সংবিধানের ১৫ অনুচ্ছেদে রাষ্ট্রের অন্যতম মৌলিক দায়িত্ব হইবে চিকিৎসাসহ জীবন ধারনের মৌলিক উপকরনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা। কিন্তু সরকার করোনা ভাইরাস থেকে রক্ষায় ব্যার্থ। একইসঙ্গে, সংবিধানের ৩১ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে আইনানুযায়ী ব্যাতীত এমন কোনো ব্যবস্থা গ্রহন করা যাবে না যাতে কোন ব্যক্তির জীবন দেহের হানি ঘটে। কিন্তু সরকার সংবিধানের ৩১ অনুচ্ছেদ লংঘন করছে। সরকার জনগনের জীবন ও দেহের হানি ঘটানো রোধে ব্যার্থ। এছাড়া অনুচ্ছেদ ৩২-এর উদ্বৃতি দিয়ে তিনি বলেন, আইনানুযায়ী ব্যতীত জীবন রক্ষা হতে কোনো ব্যক্তিকে বঞ্চিত করাযাবে না। কিন্তু সরকার সংবিধান লংঘন করে, জনগনের স্বাস্থ্যের নিরাপত্তা দিতে ব্যার্থ। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত দেশের সকল বিমান বন্দর, বর্ডার, সমুদ্র বন্দর, স্কুল- কলেজ-মাদরাসা- বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘােষনা করেছে। কিন্তু সরকারের নিশ্চুপ ভূমিকার কারণে বাংলাদেশে করোনা ভাইরাস আক্রান্ত হয়েছে । সরকার বিমান বন্দর বন্ধ না করে এবং করোনা বিষয়ে পরীক্ষার কোনো ব্যবস্থা না করেই বিমান যাত্রীরা চলে যাচ্ছে নিজ নিজ বাসায়। ফলে দেশে করোনা ভাইরাস ছড়াচ্ছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

বিদেশ ফেরতদের ক্ষেত্রে হাইকোর্টের পাঁচ নির্দেশনা

আপডেট টাইম : ০৯:৫৮:০৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ মার্চ ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বিদেশ ফেরত প্রতিটি যাত্রীকে ১৪ দিনের বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টিনে রাখাসহ পাঁচটি নির্দেশনা দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে হাসপাতাল অথবা সরকার যেখানে ভাল মনে করবে সেখানে তাদের রেখে মানসম্মত খাদ্য, ও  চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে হবে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব, স্বাস্থ্যসচিব, বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন সচিব, পররাষ্ট্র সচিব এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে এই নির্দেশনা দিয়েছেন হাইকোর্ট। গতকাল বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মহিউদ্দিন শামীমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই নির্দেশনা দেন। একইসঙ্গে বিদেশ থেকে আসা সবাইকে কেন কোয়ারেন্টিনে রাখার নির্দেশ দেয়া হবে না, তা জানতে চেয়েছে হাইকোর্ট রুল জারি করেছেন। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন রিটকারী আইনজীবী ড. ইউনুস আলী আকন্দ ও অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে আদালত ব্যারিস্টার রেজা-ই-রাব্বি খন্দকারের বক্তব্য শুনেন। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন  ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার নওরোজ  মো. রাসেল চৌধুরী। আদেশর পর ডেপুর্টি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী বলেন, হাইকোর্ট আদেশে বলেছেন, বিদেশ থেকে যারা আসছেন তাদেরকে অবশ্যই ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে  থাকতে হবে।

এ বিষয়ে কোয়ারেন্টিন অথরিটি নিশ্চিত করবেন যে, বিমানবন্দর থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যেন প্রয়োজনবোধে তাদের সহায়তা করে। তিনি বলেন, আদালত বলেছেন, কোনো একটা হসপিটাল অথবা সরকার যেখানে ভাল মনে করবে সেখানে রাখবে। তাদের মানসম্মত খাদ্য, মানসম্মত চিকিৎসা ও মানসম্মত পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। যারা চিকিৎসাসেবা দেবেন, বিশেষ করে ডাক্তারসহ অন্যদেরকে সতকর্তামূলক ড্রেসআপ এবং  যা যা দরকার- তা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। ব্যারিস্টার রেজা-ই-রাব্বি খন্দকারের সাংবাদিকদের জানান, আদালত করোনা ভাইরাস ইস্যুতে ৫টি নির্দেশনা দিয়েছেন। বাংলাদেশে তিনটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, পাঁচটি স্থলবন্দর ও দুইটি নৌবন্দর রয়েছে। এসব বন্দর দিয়ে যারাই আসবেন, তাদের ক্ষেত্রে এসব নির্দেশনা প্রতিপালন করার কথা বলা হয়েছে। ১. যারাই বিদেশ থেকে আসবেন, সিভিল এভিয়েশন বিভাগ তাদেরকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে হস্তান্তর বরবেন। ২. আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদেরকে স্বাস্থ্য বিভাগের কাছে হস্তান্তর করবেন।  ৩. স্বাস্থ্য বিভাগ বিদেশ থেকে আসা সন্দেহভাজনদের মেডিকেল চেক আপ/স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে স্বাস্থ্য সচিবের প্রতি নির্দেশ; ৪. বিদেশ ফেরত এসব ব্যক্তিকে হোম কোয়ারেন্টিন করবেন, নাকি প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন করবেন তা নির্ধারণ করবেন। এসব কোয়ারেন্টিনে অবশ্যই তাদেরকে ১৪দিন থাকতে হবে। ৫.জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে কোয়ারেন্টিনে রাখা ব্যক্তিদের তদারকি করতে জনপ্রশাসন সচিবের প্রতি নির্দেশ। এর আগে গত ১৫ই মার্চ বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধে নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ড. মো. ইউনুছ আলী আকন্দ। রিটে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সচিব, শিক্ষা মন্ত্রণালয় সচিব, বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সচিব ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালককে বিবাদী করা হয়।  রিট আবেদনে তিনি দেশের সকল বিমানবন্দর, নৌবন্দর ও স্থলবন্দরে করোনা ভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তিকে শনাক্তে এবং সকল বন্দরের প্রবেশমুখে মনিটরিং, জনগণকে রক্ষায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়াসহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের নির্দেশনা চান। করোনা ভাইরাস থেকে জনগণকে রক্ষায় সরকারের ব্যর্থতা ও নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারির আজিও জানান। রিট আবেদনে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সংবিধানের ১৫ অনুচ্ছেদে রাষ্ট্রের অন্যতম মৌলিক দায়িত্ব হইবে চিকিৎসাসহ জীবন ধারনের মৌলিক উপকরনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা। কিন্তু সরকার করোনা ভাইরাস থেকে রক্ষায় ব্যার্থ। একইসঙ্গে, সংবিধানের ৩১ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে আইনানুযায়ী ব্যাতীত এমন কোনো ব্যবস্থা গ্রহন করা যাবে না যাতে কোন ব্যক্তির জীবন দেহের হানি ঘটে। কিন্তু সরকার সংবিধানের ৩১ অনুচ্ছেদ লংঘন করছে। সরকার জনগনের জীবন ও দেহের হানি ঘটানো রোধে ব্যার্থ। এছাড়া অনুচ্ছেদ ৩২-এর উদ্বৃতি দিয়ে তিনি বলেন, আইনানুযায়ী ব্যতীত জীবন রক্ষা হতে কোনো ব্যক্তিকে বঞ্চিত করাযাবে না। কিন্তু সরকার সংবিধান লংঘন করে, জনগনের স্বাস্থ্যের নিরাপত্তা দিতে ব্যার্থ। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত দেশের সকল বিমান বন্দর, বর্ডার, সমুদ্র বন্দর, স্কুল- কলেজ-মাদরাসা- বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘােষনা করেছে। কিন্তু সরকারের নিশ্চুপ ভূমিকার কারণে বাংলাদেশে করোনা ভাইরাস আক্রান্ত হয়েছে । সরকার বিমান বন্দর বন্ধ না করে এবং করোনা বিষয়ে পরীক্ষার কোনো ব্যবস্থা না করেই বিমান যাত্রীরা চলে যাচ্ছে নিজ নিজ বাসায়। ফলে দেশে করোনা ভাইরাস ছড়াচ্ছে।