হাওর বার্তা ডেস্কঃ মানবদেহ নানা রোগের বসতঘর। ছোট থেকে বড় নানা রগেই আক্রাত হয় মানবশরীর। তবে রোগ যেমন আছে তেমনি আছে এর প্রতিকারও। আর তা লুকিয়ে আছে আমাদের প্রকৃতিতেই।
এমন অনেক গাছ আছে যা রাস্তার পাশে খুব অবহেলায় বেড়ে ওঠে। অথচ সেই গাছই আমাদের অনেক জটিল রোগের সমাধান। বিচিত্র উদ্ভিদে সমৃদ্ধ এই দেশে তেমনি একটি গাছ হলো কন্টিকারি। এই গাছটি চমৎকার ভেষজগুণে সমৃদ্ধ।
অঞ্চলভেদে কন্টিকারিকে কন্টিকারিকা বা কন্টকিনি বলা হয়। এটি ঘন কন্টকময় মাটিতে গড়ান গুল্ম। পাতা ১০ থেকে ১২ সেন্টিমিটার লম্বা ও ডিম্বাকৃতি। পাতা এবং শাখা-প্রশাখা সবুজ বা হলদে সবুজ রঙের হয়। সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে গাছটি বেড়ে ওঠে। ডিসেম্বর-জানুয়ারি মাসে ফুল ও ফল হয়। গাঢ় নীল ফুলের মাঝখানে হলুদ পরাগধানী। কাঁচা ফল সবুজ, পাকলে হলুদ বা লালচে হলুদ হয়।
> কন্টিকারিতে Tropane alkaloid থাকায় এটি ব্যথানাশক হিসেবে কাজ করে। কোমরে ব্যথা হলে এবং প্রস্রাব মাঝে মধ্যে থেমে থেমে হলে ১০ গ্রাম কন্টিকারি ডাল এবং পাতা, ৫ গ্রাম বেগুনের মূল ৪ কাপ পানিতে সিদ্ধ করে এক কাপ পরিমাণ করে নিন। তারপর ছেঁকে নিন। এবার এর সঙ্গে ৫০ গ্রাম সাদা দই মিশিয়ে সকালে কিছু খাওয়ার পর খান। তাতে উপকার পাওয়া যাবে।
> কন্টিকারির ১০ গ্রাম ডাল ও তিনটি পাতা ৮ কাপ পানিতে সিদ্ধ করে অর্ধেক থাকতে নামিয়ে ছেঁকে নিন। এবার ওই ক্বাথ দিয়ে মুগ ডাল রান্না করে খেলেই কাশির উপশম হবে।
> শ্বাসরোগ জটিল হলে কন্টিকারি গাছ ফলমূলসহ ২৫০ গ্রাম থেঁতো করে ২ লিটার পানিতে সিদ্ধ করে নিন। পানি আধা লিটার থাকতে নামিয়ে ছেঁকে নিয়ে ক্বাথ আলাদা করে নিন। এই ক্লাথ আবার জ্বাল দিয়ে ঘন চিটাগুড়ের মতো করে নিন। তারপর ঘন ক্বাথের সঙ্গে সমপরিমাণ মধু মিশিয়ে নিন। দিনে কয়েকবার একটু একটু করে চেটে ৫-৬ দিন এই মিশ্রণটি খান। এতে শ্বাসকষ্ট এবং কাশি থাকলেও উপশম হবে।
> গেঁটেবাতে কন্টিকারি এবং সজনের ছাল সমপরিমাণ নিয়ে ছেঁচে একটু গরম করে নিন। এবার এটি ফোলা জায়গায় প্রলেপের মতো করে দিলে সেরে যাবে।
> তাছাড়া চোখ ওঠা সারাতেও এটি বেশ কার্যকরী। এর জন্য ২ থেকে ৩ গ্রাম পরিমাণ কন্টিকারির মূল ছেঁচে তার সঙ্গে ২৫০ মিলিলিটার ছাগলের দুধ ও সমপরিমাণ পানি মিশিয়ে নিন। এবার এটি সিদ্ধ করে পানি অর্ধেক পরিমাণ হলে নামিয়ে ছেঁকে নিন। এবার ওই দুধ ব্যবহার করলে দুই-একদিনের মধ্যেই চোখ ওঠা সেরে যাবে।