হাওর বার্তা ডেস্কঃ করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) চিকিৎসায় কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে ঔষধি গাছ ‘নিশিন্দা’। এমনটা ধারণা প্রকাশ করেছেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অল্টানেটিভ ইউডা’র একদল গবেষক। গবেষকদের দাবি, নিশিন্দা গাছটিতে তিনটি উপাদান করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়তে সক্ষম। তবে এ বিষয়ে আরো পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন রয়েছে বলে জানিয়েছন তারা।
শনিবার ইউডা বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিটোরিয়ামে ‘করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) নিরাময়ের সম্ভাব্য ওষুধ আবিস্কারে বায়োইনফরমেটিক্স এর প্রয়োগ’ বিষয়ক এক সেমিনারে এ তথ্য জানানো হয়। বিশ্ববিদ্যালয়টির বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের উদ্যোগে সেমিনার আয়োজন করা হয়।
সেমিনারে বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইফ সায়েন্স অনুষদের ডিন রহমত উল্লাহ বলেন, আমাদের দেশের নিশিন্দা নামের ঔষধি গাছটি কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে কাজ করতে পারে। এ গাছের মধ্যে কিছু কেমিকেল কমপাউন্ড আছে, যা করোনাভাইরাসকে নিষ্ক্রিয় করে, কম্পিউটার স্টাডিজ বলছে এটি। কিন্তু আসলে কাজ করবে কিনা, তা দেখতে হবে ভাইরাসের এগেইনস্টে।
তিনি বলেন, যেকোনো ভাইরাস বা ফাঙ্গাস প্রোটিন দিয়ে গঠিত। কিছু প্রোটিন আছে, যা ভাইরাসের বংশ বিস্তার ও রোগ ছড়াতে কাজ করে। এরকম কোনো প্রোটিনের সঙ্গে যদি কোনো ছোট যৌগিক পদার্থ যুক্ত করে দেয়া যায়, তবে প্রোটিন কাজ করতে পারে না। ফলে বংশবিস্তার ঘটে না।
গবেষণায় নিশিন্দা গাছে অ্যাপিজেনিন, ভিটেক্সিন ও আইসো ভিটেক্সিন নামের তিনটি যৌগিক পদার্থ পাওয়া গেছে। যেগুলো নভেল করোনাভাইরাসের সি-৩ প্রোটিনের সঙ্গে যুক্ত হতে পারে। ইংল্যান্ডের ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়েও এ গবেষণাটি যথার্থ বলে প্রমাণিত হয়েছে বলে তিনি রহমত উল্লাহ।
করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে এ গবেষক বলেন, আমরা দ্ব্যর্থহীনভাবে বলতে চাই তিনটি যৌগিক পদার্থ যথাক্রমে- অ্যাপিজেনিন, ভিটেক্সিন এবং আইসো ভিটেক্সিনের যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে কোভিড-১৯-এর বিরুদ্ধে ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হবার। কিন্তু তার আগে এটা গবেষণাগারে ভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রয়োগ করে পরীক্ষা-নিরীক্ষার আরো প্রয়োজন রয়েছে।
চীনের উহান প্রদেশে গত জানুয়ারি মাসে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পর এর প্রতিষেধক আবিষ্কারে তোড়জোড় শুধু হয়। করোনাভাইরাসের ওষুধ আবিষ্কারে কাজ শুরু করেন বিভিন্ন দেশের গবেষকরা। তবে এখনো কেউ হাল বের করতে পারেনি। ইউডার গবেষকদের এই আবিষ্কার করোনাভাইরাসের প্রথম প্রতিষেধক হতে পারে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে রহমত উল্লাহ বলেন, যেহেতু কোথাও এটা প্রকাশিত হয়নি, আমার জানা মতে আমরাই এটি প্রথম আবিষ্কার করেছি।
সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- ইউডা’র প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি অধ্যাপক মুজিব খান, ইউডা’র উপাচার্য অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম শরীফ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োকেমিস্ট্রি ও মলিকুলার বায়োলোজী বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. মামুন রশিদ চৌধুরী।