হাওর বার্তা ডেস্কঃ নওগাঁর সাপাহার চৌধুরী চাঁন মোহাম্মদ মহিলা ডিগ্রি কলেজে প্রভাষক হিসেবে নিয়োগ পাওয়া মো. জিয়াউর রহমান তিন বছর পার হওয়ার পরও কোন বেতন-ভাতাদি পাননি।
নিয়োগপত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) সুপারিশে ২০১৬ সালের ২৪ অক্টোবর কলেজ কর্তৃপক্ষ ও এনটিআরসিএ মো. জিয়াউর রহমানকে শূন্যপদে এইচএসসি পর্যায়ে রাষ্ট্র বিজ্ঞানের প্রভাষক হিসেবে নিয়োগ দেন। এর প্রেক্ষিতে ২০১৬ সালের ১ নভেম্বর কলেজে যোগদান করেন তিনি।
২০১৫ সালের ৮ সেপ্টেম্বর কলেজ কর্তৃপক্ষের ২৫৮/২০১৫ নম্বর অধিবেশনে পদটি শূন্য ঘোষণা করা হয়। এরপর ২০১৫ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর দৈনিক মানবজমিন ও দৈনিক করতোয়া প্রথমবার, ২০১৫ সালের ১৭ অক্টোবর দৈনিক সমকাল ও দৈনিক করতোয়া দ্বিতীয়বার এবং ২০১৫ সালের ৭ নভেম্বর দৈনিক সমকাল ও দৈনিক করতোয়া তৃতীয়বার অধ্যক্ষ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন। পরে তিনি ২০১৫ সালের ২৩ নভেম্বর এনটিআরসি-এর কাছে শিক্ষক নিয়োগের চাহিদা দেন। এর প্রেক্ষিতে সরকারি বিধিমেনে তার নিয়োগ দেয়া হয়।
অধ্যক্ষ আবু এরফান আলীর দেয়া প্রত্যয়নপত্র অনুযায়ী, জিয়াউর রহমান এইচএসসি পর্যায়ে কলেজ শাখায় পাঠদান করছেন। এর আগে ২০১৭ সালের ৯ এপ্রিল এমপিও আবেদন করা হয়। কিন্তু ২০১২ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর কলেজ কর্তৃপক্ষের ২১৯/২০১২ নম্বর অধিবেশন অনুযায়ী অনার্স শাখায় সৃষ্ট পদে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের প্রভাষক নিয়োগ দেয়া হয় আব্দুল হালিমকে। অনার্স শাখার এই শিক্ষক এইচএসসি পর্যায়ে কলেজ শাখায় এমপিওভুক্তির জন্য হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন। এর জন্য মো. জিয়াউর রহমানের এমপিওভুক্তি করার আবেদনটি সরকারি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা রাজশাহী শাখার ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক ড. শরমিন ফেরদৌস চৌধুরী প্রত্যাখান করেন।
কলেজ অধ্যক্ষের দেয়া আরেকটি প্রত্যয়নপত্র অনুযায়ী, আব্দুল হালিম এই কলেজে সৃষ্টপদে অনার্স শাখায় পাঠদান করছেন। একই সাথে সৃষ্টপদে অনার্স শাখায় পাঠদানের জন্য প্রায় তিন বছর বেতন-ভাতাদি ভোগ করেন।
হাইকোর্টের আদেশে বলা হয়, আইন অনুযায়ী মো. আব্দুল হালিমের এমপিওভুক্তির বিষয়টি নিষ্পত্তি করার জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে নির্দেশ দেন। এছাড়া আপিল বিভাগও আগের আদেশ বহাল রাখেন।
২০১৯ সালের ১১ জুলাই মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের কলেজ শাখা-৩ এর সহকারি পরিচালক ফারহানা আক্তার স্বাক্ষরিত চিঠিতে জনবল কাঠামো অনুযায়ী এমপিওভুক্তির বিষয়টি নিষ্পত্তি করা জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা রাজশাহী শাখার উপ-পরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগকে আদেশ দেন। এছাড়া ২০১৯ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের কলেজ শাখা-৩ এর সহকারি পরিচালক আবদুল কাদের স্বাক্ষরিত চিঠিতে মো. আব্দুল হালিমের নিয়োগের বিষয়টি সরজমিনে তদন্তে করে ১০ কর্মদিবসের মধ্যে রাজশাহী শাখার ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক ড. শরমিন ফেরদৌস চৌধুরীর কাছে প্রতিবেদন চাওয়া হয়। কিন্তু আব্দুল হালিমের নিয়োগের বিষয়টি এখনও সরজমিনে তদন্ত করা হয়নি।
এরপর ২০২০ সালের ১৬ ফ্রেবুয়ারি কলেজ শাখা-৩ এর সহকারি পরিচালক আবদুল কাদের স্বাক্ষরিত চিঠিতে জনবল কাঠামো মোতাবেক আব্দুল হালিমের নিয়োগ প্রক্রিয়া যথাযথ হলে বিধি অনুযায়ী এমপিওভুক্তির জন্য আদেশক্রমে অনুরোধ করা হয়।
প্রসঙ্গত, জনবল কাঠামো অনুযায়ী অনার্স স্তরের সৃষ্টপদে নিয়োগ পাওয়া কোন শিক্ষক এইচএসসি/ডিগ্রি স্তরের এমপিভুক্ত কোন পদে পদ সমন্বয় প্রাপ্তির আইনগত সুযোগ নেই।