ঢাকা ০২:৩৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

১০ রোগের ওষুধ ঢেঁড়স

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:০০:৩৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ মার্চ ২০২০
  • ২০৭ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ঢেঁড়সভাজি বা ঢেঁড়সের তরকারি পছন্দ করেন না এমন লোক পাওয়া কঠিন। গ্রীষ্মকালীন এই সবজিটির ফলন আমাদের প্রচুর। ঢেঁড়স দেখতে অনেকটা নারীর সরু কোমল আঙুলের মতো হওয়ায় একে ‘লেডিস ফিঙ্গার’ ডাকা হলেও এর প্রকৃত ইংরেজি নাম Okra।

বেশ কয়েকটি রোগে ঢেঁড়স খুবই উপকারী। ঢেঁড়স অত্যন্ত পুষ্টিকর ও ঔষধি গুণসম্পন্ন। আপনার হয়ত জানা নেই ঢেঁড়স সুস্বাস্থ্যের জন্য কতটুকু গুরুত্ব রাখতে পারে। ঢেঁড়সে উচ্চমাত্রার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা ক্যান্সার রোগ সৃষ্টিকারী কোষগুলোকে ধ্বংস করে এ রোগ নিরাময়ে সাহায্য করে।

আসুন জেনে নিই কোন কোন অসুখে ঢেঁড়স ঔষধের মতো কাজ করে-

১. হাঁপানিতে খুব ভালো কাজ করে ঢেঁড়স। রোগটির হারবাল চিকিৎসায় ঔষুধ হিসেবে ঢেঁড়স ব্যবহার করা হয়। এটি রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়, শ্বাসকষ্ট প্রতিরোধ করে। এছাড়া ঢেঁড়স বীজের তেলও শ্বাসকষ্ট কমাতে পারে।

২. ব্লাড সুগার কমাতে এর বিকল্প নেই। প্রতি ১০০ গ্রাম ঢেঁড়সে রয়েছে ০.০৭ মিলিগ্রাম থায়ামিন, ০.০৬ মিলিগ্রাম নিয়াসিন, ০.০১ মিলিগ্রাম রিবোফ্লাভিন যা ডায়াবেটিক রোগীর স্নায়ুতন্ত্রে পুষ্টি সরবরাহ করে সতেজ রাখে। তাই ডায়াবেটিক রোগীদের প্রতিদিন খাবারপাতে রাখা উচিত ঢেঁড়স।

৩. নিয়মিত ঢেঁড়স খেলে লোহিত রক্তকণিকার উৎপাদন বেড়ে যায়। ফলে সহজেই রক্তশূন্যতা দূর হয়। এছাড়া ঢেঁড়সের মধ্যে রয়েছে সলিউবল ফাইবার (আঁশ) পেকটিন, যা রক্তের বাজে কোলেস্টেরলকে কমাতে সাহায্য করে এবং অ্যাথেরোসক্লোরোসিস প্রতিরোধ করে। অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় নিয়মিত ঢেঁড়স খেলে এর ফলেট উপাদানটি গর্ভের শিশুর সঠিক বিকাশে সাহায্য করে।

৪. ঢেঁড়সের একটা দারুণ ঔষধিগুণ হলো এটি প্রস্রাবের প্রবাহ বৃদ্ধি করে। এতে প্রোস্টেট গ্ল্যান্ডের বৃদ্ধি কমে যায়। ঢেঁড়স পানিতে সেদ্ধ করে তরল পিচ্ছিল পদার্থ ছেঁকে পান করলে প্রস্রাবের প্রবাহ বাড়বে।

৫. ঢেঁড়সের মধ্যে রয়েছে অনেক ঔষধি গুণ। এর মধ্যে রয়েছে আঁশ, ভিটামিন এ, অ্যান্টি অক্সিডেন্ট। আঁশ কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। সহজে হজম হয় বলে বিপাকক্রিয়ায় সহায়তা করে।

৬. ঢেঁড়স ত্বকের জন্য খুব উপকারী। এটি ত্বকের ময়লা পরিষ্কার করে। রক্ত চলাচল বৃদ্ধি করে বলে, ত্বকের উজ্জলতাও বৃদ্ধি পায়। এছাড়া ত্বকের বিষাক্ত পদার্থ দূর করে ঢেঁড়স ত্বকের বিষাক্ত পদার্থ দূর করে শরীরের টিস্যু পুনর্গঠনে ও ব্রণ দূর করতে সাহায্য করে।

৭. ঢেঁড়সে আছে বেটা ক্যারোটিন, ভিটামিন এ, অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, লিউটিন, যা চোখের গ্লুকোমা, চোখের ছানি প্রতিরোধে সাহায্য করে।

৮. প্রতি ১০০ গ্রাম ঢেঁড়সে রয়েছে ৬৬ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ১.৫ মিলিগ্রাম লোহা। ফলে ঢেঁড়স হাড়কে মজবুত রাখে। দাঁত ও মাড়ির রোগেও ঢেঁড়স উপকারী।

৯. চুলে ঢেঁড়সের রয়েছে প্রাকৃতিক ব্যবহার। ঢেঁড়সকে প্রাকৃতিক কন্ডিশনার হিসেবে ব্যবহার করা যায়। এটি চুল পড়া কমায়, চুলের উজ্জলতা বাড়ায়।

১০. ঢেঁড়স বিষণ্ণতা, দুর্বলতা এবং অবসাদ দূর করতে সাহায্য করে।

এ ছাড়া রয়েছে আরো অনেক গুণ। ঢেঁড়সের গুণের কথা, জানার পর প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় ঢেঁড়স রাখতে চাইবেন আপনি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

১০ রোগের ওষুধ ঢেঁড়স

আপডেট টাইম : ১২:০০:৩৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ মার্চ ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ঢেঁড়সভাজি বা ঢেঁড়সের তরকারি পছন্দ করেন না এমন লোক পাওয়া কঠিন। গ্রীষ্মকালীন এই সবজিটির ফলন আমাদের প্রচুর। ঢেঁড়স দেখতে অনেকটা নারীর সরু কোমল আঙুলের মতো হওয়ায় একে ‘লেডিস ফিঙ্গার’ ডাকা হলেও এর প্রকৃত ইংরেজি নাম Okra।

বেশ কয়েকটি রোগে ঢেঁড়স খুবই উপকারী। ঢেঁড়স অত্যন্ত পুষ্টিকর ও ঔষধি গুণসম্পন্ন। আপনার হয়ত জানা নেই ঢেঁড়স সুস্বাস্থ্যের জন্য কতটুকু গুরুত্ব রাখতে পারে। ঢেঁড়সে উচ্চমাত্রার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা ক্যান্সার রোগ সৃষ্টিকারী কোষগুলোকে ধ্বংস করে এ রোগ নিরাময়ে সাহায্য করে।

আসুন জেনে নিই কোন কোন অসুখে ঢেঁড়স ঔষধের মতো কাজ করে-

১. হাঁপানিতে খুব ভালো কাজ করে ঢেঁড়স। রোগটির হারবাল চিকিৎসায় ঔষুধ হিসেবে ঢেঁড়স ব্যবহার করা হয়। এটি রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়, শ্বাসকষ্ট প্রতিরোধ করে। এছাড়া ঢেঁড়স বীজের তেলও শ্বাসকষ্ট কমাতে পারে।

২. ব্লাড সুগার কমাতে এর বিকল্প নেই। প্রতি ১০০ গ্রাম ঢেঁড়সে রয়েছে ০.০৭ মিলিগ্রাম থায়ামিন, ০.০৬ মিলিগ্রাম নিয়াসিন, ০.০১ মিলিগ্রাম রিবোফ্লাভিন যা ডায়াবেটিক রোগীর স্নায়ুতন্ত্রে পুষ্টি সরবরাহ করে সতেজ রাখে। তাই ডায়াবেটিক রোগীদের প্রতিদিন খাবারপাতে রাখা উচিত ঢেঁড়স।

৩. নিয়মিত ঢেঁড়স খেলে লোহিত রক্তকণিকার উৎপাদন বেড়ে যায়। ফলে সহজেই রক্তশূন্যতা দূর হয়। এছাড়া ঢেঁড়সের মধ্যে রয়েছে সলিউবল ফাইবার (আঁশ) পেকটিন, যা রক্তের বাজে কোলেস্টেরলকে কমাতে সাহায্য করে এবং অ্যাথেরোসক্লোরোসিস প্রতিরোধ করে। অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় নিয়মিত ঢেঁড়স খেলে এর ফলেট উপাদানটি গর্ভের শিশুর সঠিক বিকাশে সাহায্য করে।

৪. ঢেঁড়সের একটা দারুণ ঔষধিগুণ হলো এটি প্রস্রাবের প্রবাহ বৃদ্ধি করে। এতে প্রোস্টেট গ্ল্যান্ডের বৃদ্ধি কমে যায়। ঢেঁড়স পানিতে সেদ্ধ করে তরল পিচ্ছিল পদার্থ ছেঁকে পান করলে প্রস্রাবের প্রবাহ বাড়বে।

৫. ঢেঁড়সের মধ্যে রয়েছে অনেক ঔষধি গুণ। এর মধ্যে রয়েছে আঁশ, ভিটামিন এ, অ্যান্টি অক্সিডেন্ট। আঁশ কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। সহজে হজম হয় বলে বিপাকক্রিয়ায় সহায়তা করে।

৬. ঢেঁড়স ত্বকের জন্য খুব উপকারী। এটি ত্বকের ময়লা পরিষ্কার করে। রক্ত চলাচল বৃদ্ধি করে বলে, ত্বকের উজ্জলতাও বৃদ্ধি পায়। এছাড়া ত্বকের বিষাক্ত পদার্থ দূর করে ঢেঁড়স ত্বকের বিষাক্ত পদার্থ দূর করে শরীরের টিস্যু পুনর্গঠনে ও ব্রণ দূর করতে সাহায্য করে।

৭. ঢেঁড়সে আছে বেটা ক্যারোটিন, ভিটামিন এ, অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, লিউটিন, যা চোখের গ্লুকোমা, চোখের ছানি প্রতিরোধে সাহায্য করে।

৮. প্রতি ১০০ গ্রাম ঢেঁড়সে রয়েছে ৬৬ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ১.৫ মিলিগ্রাম লোহা। ফলে ঢেঁড়স হাড়কে মজবুত রাখে। দাঁত ও মাড়ির রোগেও ঢেঁড়স উপকারী।

৯. চুলে ঢেঁড়সের রয়েছে প্রাকৃতিক ব্যবহার। ঢেঁড়সকে প্রাকৃতিক কন্ডিশনার হিসেবে ব্যবহার করা যায়। এটি চুল পড়া কমায়, চুলের উজ্জলতা বাড়ায়।

১০. ঢেঁড়স বিষণ্ণতা, দুর্বলতা এবং অবসাদ দূর করতে সাহায্য করে।

এ ছাড়া রয়েছে আরো অনেক গুণ। ঢেঁড়সের গুণের কথা, জানার পর প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় ঢেঁড়স রাখতে চাইবেন আপনি।