হাওর বার্তা ডেস্কঃ প্রতিদিনের খাবারে সালাদ হিসেবেই শসার ব্যবহার সবচেয়ে বেশি। তবে খাবারের সঙ্গে অনুষঙ্গ হিসেবে শসার কদর বেশি হলেও পুষ্টিগুণের দিক দিয়ে শসা মোটেও পিছিয়ে নেই। শসা গোর্ড পরিবারের কিউকারবিটাসের অন্তর্গত একটি অতি পরিচিত উদ্ভিদ। শসা এক প্রকারের ফল। লতানো উদ্ভিদে জন্মানো ফলটি লম্বাটে আকৃতির এবং প্রায় ১০-১২ ইঞ্চি লম্বা হয়ে থাকে। এর বাইরের রং সবুজ। তবে পাকলে হলুদ হয়।
ভেতরে সাদাটে সবুজ রঙের হয়, এবং মধ্যভাগে বিচি থাকে। এটি সাধারণত গরমের সময় বেশি পাওয়া যায়। বেশ কয়েক জাতের শসা রয়েছে। এই ফলে ক্যালোরির পরিমাণ কম থাকে এবং জলের পরিমাণ বেশি থাকে। খোসাসহ একটি কাঁচা শসার প্রতি ১০০ গ্রামে ক্যালোরির পরিমাণ ২০ কিলো ক্যালোরি। বাংলাদেশে শশা প্রধানত সালাদ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। শশা যতটাই সাদাসিধে হোক না কেন খাদ্যগুণ বিচারে এটি অনন্য।
শশা ভিটামিন এবং মিনারেলস পরিপূর্ণ একটি সবজি। এর ৯৬ শতাংশ পানি। শশা ভিটামিন-কে, ভিটামিন-সি, ভিটামিন-এ, ফলিক এসিড, পটাশিয়াম এবং ম্যাঙ্গানিজের উত্তম উৎস। এ ছাড়া রিবোফ্লাবিন, প্যান্টোথেনিক এসিড, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, সালফার, সিলিকা এবং ভিটামিন বি-৬ আছে বেশি পরিমাণে। শশা থেকে খাদ্য আঁশ পাওয়া যায়। তবে এতে স্যাচুরেটেড ফ্যাট আর কোলেস্টেরলের পরিমাণ খুব কম বলে এটি প্রায় সব ধরনের মানুষের জন্যই দারুণ উপকারী। এতে আরো রয়েছে ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস,
কিউকারবিটাকিন্স, লিগনান্স এবং ফ্লাভনয়েডস। এ ছাড়া কম কোলেস্টেরল ও কম ফ্যাট-যুক্ত শশা থেকে বাড়তি ক্যালোরি পাওয়া যায় বলে যারা ওজন কমাতে চান তাদের জন্য শশা সব সময়ই আদর্শ একটি খাদ্য হিসেবে বিবেচিত। এতে কোনো সম্পৃক্ত চর্বি বা কোলেস্টেরল নেই। শশার মাল্টি ভিটামিনস ও মাল্টি মিনারেলস প্রাকৃতিক ওষুধ হিসেবে কাজ করে এবং ভিটামিন ও মিনারেলসের অভাবজনিত সমস্যা থেকে রক্ষা করে।
শশার পটাশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। শশার আঁশ কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ এবং কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময় করে। শশার ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস; লিগনান্স হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমানোসহ জরায়ু ও প্রোস্টেট ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। এটি মূত্রবর্ধক হিসেবে কাজ করে। শরীরের জমানো ক্ষতিকর ও বিষাক্ত উপাদানগুলো অপসারণ করে রক্তকে পরিষ্কার রাখে।
শশা বুক জ্বলা, পাকস্থলীর এসিডিটি, এমনকি গ্যাস্ট্রিক থেকে মুক্তি দিতে পারে। প্রতিদিন শশার জুস খেলে অ্যাকজিমা এবং গাউটে উপকার পাওয়া যায়। এটি ডায়াবেটিসও কিছুটা উপশম করে। শশার জুস কিডনি এবং গলব্লাডারের পাথর অপসারণে সহায়তা করে।