হাওর বার্তা ডেস্কঃ প্রতিটি মানুষের জন্যই ঘুম খুব জরুরি। নইলে সুস্থ থাকা তো দূরে থাক, বেঁচে থাকাই কষ্টকর হয়ে পরবে। পর্যাপ্ত ঘুম শরীরে প্রশান্তি, মন প্রফুল্ল, কর্মস্পৃহা বৃদ্ধি করে। তাইতো পর্যাপ্ত ঘুম সবার জন্য প্রয়োজন। নইলে তা আপনার জন্য ডেকে আনবে মারাত্মক বিপদ।
তবে বর্তমান জীবনযাত্রায় মানুষ ঘুমের ব্যাপারে খুব অমনোযোগী। কারণে কিংবা অকাণেই রাত জেগে থাকছেন। যার ফলে ঘুমের সময় ক্রমশ কমে আসছে। অনেকেই হয়তো জানেন না, অনিয়মিত ঘুমের কারণে ছয়টি মারাত্মক রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। চলুন জেনে নেয়া যাক সেগুলো-
ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ে
অনেকেই মনে করেন ডায়াবেটিস বংশগত কারণে হয়ে থাকে। যা সঠিক হলেও, অনিয়মিত ঘুমও এর জন্য দায়ী। দীর্ঘদিন রাতে অনিয়মিত ঘুমানো বা কম ঘুমানোর ফলে শরীরে ইনসুলিন উৎপাদন ব্যহত হয়। যার ফলে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়তে থাকে।
মানসিকতা নষ্ট হয়
পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম না হলে আমাদের মস্তিষ্ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মস্তিষ্কে ওরেক্সিন নামের একটি নিউরোট্রান্সমিটার আছে যা মস্তিষ্ককে সচল রাখতে সহায়তা করে। কিন্তু প্রতিদিন পর্যাপ্ত ঘুমের অভাবে ওরেক্সিন উৎপাদনের গতি মন্থর হয়ে যায়। যার ফলে মস্তিষ্কের কর্ম ক্ষমতা কমতে থাকে। মস্তিষ্ক পর্যাপ্ত পরিমাণ বিশ্রাম না পেলে অতিরিক্ত বিষণ্ণতা, হ্যালুসিনেশনের, স্মৃতিভ্রংশের মতো একাধিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। দিনে দিনে নিজের বিচার বিশ্লেষণ করার ক্ষমতাও লোপ পেতে পারে।
হার্টের সমস্যা বৃদ্ধি
আমাদের ঘুমের সময় হৃদপিণ্ড এবং রক্তনালী কিছুটা হলেও বিশ্রাম পায়। কিন্তু ঘুম না হলে বা কম হলে প্রতিনিয়ত কার্ডিওভ্যস্কুলার সমস্যা বাড়তে থাকে। এর ফলে হার্টের সমস্যা বাড়তে থাকে।
উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা বৃদ্ধি
চিকিৎসকদের মতে আমরা না ঘুমালে আমাদের শরীরের ‘লিভিং অরগানিজম’ গুলো ঠিক মতো কাজ করতে পারে না। নষ্ট হতে পারে শরীরের হরমোনের ভারসাম্য। বাড়তে পারে উচ্চ রক্তচাপ, হাইপার টেনশনের মতো সমস্যা। তাই উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা এড়াতে ঘুম খুব জরুরি।
শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নষ্ট করে
ঘুমের কারণে আমাদের শরীরের ক্ষয়-ক্ষতি পূরণ ও শক্তি সঞ্চয় হয়। যখন আমরা ঘুমাই, তখন আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার জন্য দায়ী ‘লিভিং অরগানিজম’ (Living organisms) কাজ করতে থাকে। কিন্তু আমরা না ঘুমালে এই ‘লিভিং অরগানিজম’গুলো কাজ করতে পারে না। ফলে ক্রমশ আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমতে থাকে।
হজমের সমস্যা বৃদ্ধি করে
প্রতিদিন পর্যাপ্ত ঘুম না হলে হজমের সমস্যাও বাড়ে। না ঘুমালে শরীরের পাচন ক্রিয়ায় সাহায্যকারী অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলো সঠিক ভাবে কাজ করতে পারে না। ফলে খাবার হজমে সহায়ক পাচক রসগুলো উপযুক্ত মাত্রায় নিঃসরণে বাধা পায়। তাই হজমের নানা সমস্যা শুরু হয়।
অতএব বুঝতেই পারছেন, আমাদের দৈহিক প্রায় সব কার্যকলাপই ঘুমের উপরে নির্ভরশীল। তাই নিজের প্রতি অবহেলা নয়। প্রতিদিন অন্তত ৬ থেকে ৭ ঘণ্টা ঘুমানোর অভ্যাস গড়ে তুলুন। তবে ঘুম না আসলে ঘুমের জন্য কোনো ওষুধ সেবনের আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।