ঢাকা ০৩:৪৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সাপের বিষে ক্যান্সার মুক্তি

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৩:৫৫:০৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২০
  • ২০৫ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ক্যান্সার একটি মরণব্যাধি। এতে আক্রান্ত হয়ে অনেক মানুষের মৃত্যু ঘটে। তবে ক্যান্সার আক্রান্তদের জন্য সুখবর দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তারা বলছেন, সাপের বিষে ভালো হবে মরণব্যাধি ক্যান্সার!

সাপের বিষ স্তন ক্যান্সার ও কোলন ক্যান্সারের চিকিৎসায় ব্যবহার করা যেতে পারে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইলের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

তারা বলছেন, এই দুই ধরনের ক্যান্সারের কোষ দ্রুত ধ্বংস করতে সক্ষম সাপের বিষ। তবে এখনই ক্যান্সার চিকিৎসায় সাপের বিষ ব্যবহার করা যাচ্ছে না। এর যথাযথতা যাচাই করতে এখনো সময়ের দরকার আছে বলে জানিয়েছেন গবেষকরা।

ক্যান্সার চিকিৎসায় সাপের বিষ নিয়ে গবেষণা করছেন যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব নর্দান কলোরাডোর (ইউএনসি) একদল জীববিজ্ঞানী। তারা বলছেন, মানবরোগের চিকিৎসায় থেরাপি হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে ভেনম (সাপের বিষ), তবে এজন্য আরো গবেষণার দরকার রয়েছে।

স্নেক ভেনমে উচ্চমাত্রায় বিষ রয়েছে। এর একটিমাত্র কামড়ে মুহূর্তের মধ্যে কোনো প্রাণীর মৃত্যু পর্যন্ত হয়ে যেতে পারে। তবে বিজ্ঞানীরা বলছেন, কোনো ধরনের ঝুঁকি ছাড়াই ক্যান্সার কোষ ধ্বংস করতে শরীরে সরাসরি সাপের বিষের প্রয়োগ তাদের জন্য অনেক চ্যালেঞ্জের।

তবে প্রতিষেধক তৈরিতে সাপের বিষ নিয়ে গবেষণার কারণও রয়েছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, সাপের বিষে প্রচুর পরিমাণ প্রোটিন ও কেমিক্যাল রয়েছে। একটি সাপ থেকে যে পরিমাণ বিষ পাওয়া যায় তাতে কয়েকশ’ উপাদান থাকে। আর পৃথিবীতে যেসব প্রজাতির প্রাণী রয়েছে যাদের শরীরে প্রচুর পরিমাণ প্রোটিন পাওয়া যায়, তার ২৬টিই হলো সরীসৃপ গোত্রীয়।

উচ্চ রক্তচাপে ব্যবহৃত একটি ওষুধের নাম ক্যাপটোপ্রিল। এক ধরনের পেপটাইডের গঠনবিন্যাসের ওপর ভিত্তি করে ওষুধটি তৈরি করা হয়। গবেষকরা পেপটাইডটি সংগ্রহ করেন সাপের বিষ থেকে। ওষুধটি যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে প্রায় ৪০ বছর ধরে ব্যবহার হয়ে আসছে। আর এ কারণেই মূলত সাপের বিষ থেকে ক্যান্সারের ওষুধ তৈরির জন্য নড়েচড়ে বসেছেন বিজ্ঞানীরা।

ইউনিভার্সিটি অব নর্দান কলোরাডোর একজন গবেষক ড. স্টিফেন ম্যাকেসি। তার গবেষণাগারটিই হবে প্রথম কোনো প্রতিষ্ঠান যেখানে ক্যান্সার চিকিৎসায় সাপের বিষ নিয়ে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে।

সিবিএস ডেনভারকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ম্যাকেসি বলেছেন, এখানে একটা জটিল বিষয় হলো এগুলো (সাপের বিষ) বস্তু বা প্রাণীর মৃত্যুর কারণ। আবার স্বাভাবিক বিষয় হলো এগুলো বেঁচে থাকার ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দেয়। সাপের বিষের এই বৈশিষ্ট্যই ওষুধ তৈরির পেছনে যৌক্তিক কারণ। কারণ গবেষণায় দেখা গেছে, অনেক সাপের বিষ ক্যান্সার সেলকে নিখুঁতভাবে ধ্বংস করতে সক্ষম।

বিভিন্ন প্রজাতির কয়েক শ সাপের বিষ নিয়ে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন ইউএনসির শিক্ষার্থীরা। এসব সাপের তালিকায় র্যাটল স্নেকস থেকে শুরু করে ভাইপারও রয়েছে। সম্পূর্ণ নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করে সাপের বিষ নিয়ে গবেষণা করছেন তারা।

তাদের মধ্যে ভাইপার বিষ নিয়ে গবেষণা করছেন পিএইচডি ক্যান্ডিডেট ট্যানার হার্ভে। তিনি বলেন, মাত্র অল্পমাত্রায় প্রয়োগে স্তন ক্যান্সারের কোষ ধ্বংসে দ্রুত কাজ করে ভাইপার ভেনম। কোলন ক্যান্সারের কোষ ধ্বংসেও একইভাবে কাজ করে। তবে এটি মেলানোমা (ত্বকের ক্যান্সারের কোষ)। তবে অন্যান্য সাপের বিষ মেলানোমা ধ্বংসে কাজ করে বলে তিনি জানান।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

সাপের বিষে ক্যান্সার মুক্তি

আপডেট টাইম : ০৩:৫৫:০৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ক্যান্সার একটি মরণব্যাধি। এতে আক্রান্ত হয়ে অনেক মানুষের মৃত্যু ঘটে। তবে ক্যান্সার আক্রান্তদের জন্য সুখবর দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তারা বলছেন, সাপের বিষে ভালো হবে মরণব্যাধি ক্যান্সার!

সাপের বিষ স্তন ক্যান্সার ও কোলন ক্যান্সারের চিকিৎসায় ব্যবহার করা যেতে পারে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইলের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

তারা বলছেন, এই দুই ধরনের ক্যান্সারের কোষ দ্রুত ধ্বংস করতে সক্ষম সাপের বিষ। তবে এখনই ক্যান্সার চিকিৎসায় সাপের বিষ ব্যবহার করা যাচ্ছে না। এর যথাযথতা যাচাই করতে এখনো সময়ের দরকার আছে বলে জানিয়েছেন গবেষকরা।

ক্যান্সার চিকিৎসায় সাপের বিষ নিয়ে গবেষণা করছেন যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব নর্দান কলোরাডোর (ইউএনসি) একদল জীববিজ্ঞানী। তারা বলছেন, মানবরোগের চিকিৎসায় থেরাপি হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে ভেনম (সাপের বিষ), তবে এজন্য আরো গবেষণার দরকার রয়েছে।

স্নেক ভেনমে উচ্চমাত্রায় বিষ রয়েছে। এর একটিমাত্র কামড়ে মুহূর্তের মধ্যে কোনো প্রাণীর মৃত্যু পর্যন্ত হয়ে যেতে পারে। তবে বিজ্ঞানীরা বলছেন, কোনো ধরনের ঝুঁকি ছাড়াই ক্যান্সার কোষ ধ্বংস করতে শরীরে সরাসরি সাপের বিষের প্রয়োগ তাদের জন্য অনেক চ্যালেঞ্জের।

তবে প্রতিষেধক তৈরিতে সাপের বিষ নিয়ে গবেষণার কারণও রয়েছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, সাপের বিষে প্রচুর পরিমাণ প্রোটিন ও কেমিক্যাল রয়েছে। একটি সাপ থেকে যে পরিমাণ বিষ পাওয়া যায় তাতে কয়েকশ’ উপাদান থাকে। আর পৃথিবীতে যেসব প্রজাতির প্রাণী রয়েছে যাদের শরীরে প্রচুর পরিমাণ প্রোটিন পাওয়া যায়, তার ২৬টিই হলো সরীসৃপ গোত্রীয়।

উচ্চ রক্তচাপে ব্যবহৃত একটি ওষুধের নাম ক্যাপটোপ্রিল। এক ধরনের পেপটাইডের গঠনবিন্যাসের ওপর ভিত্তি করে ওষুধটি তৈরি করা হয়। গবেষকরা পেপটাইডটি সংগ্রহ করেন সাপের বিষ থেকে। ওষুধটি যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে প্রায় ৪০ বছর ধরে ব্যবহার হয়ে আসছে। আর এ কারণেই মূলত সাপের বিষ থেকে ক্যান্সারের ওষুধ তৈরির জন্য নড়েচড়ে বসেছেন বিজ্ঞানীরা।

ইউনিভার্সিটি অব নর্দান কলোরাডোর একজন গবেষক ড. স্টিফেন ম্যাকেসি। তার গবেষণাগারটিই হবে প্রথম কোনো প্রতিষ্ঠান যেখানে ক্যান্সার চিকিৎসায় সাপের বিষ নিয়ে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে।

সিবিএস ডেনভারকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ম্যাকেসি বলেছেন, এখানে একটা জটিল বিষয় হলো এগুলো (সাপের বিষ) বস্তু বা প্রাণীর মৃত্যুর কারণ। আবার স্বাভাবিক বিষয় হলো এগুলো বেঁচে থাকার ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দেয়। সাপের বিষের এই বৈশিষ্ট্যই ওষুধ তৈরির পেছনে যৌক্তিক কারণ। কারণ গবেষণায় দেখা গেছে, অনেক সাপের বিষ ক্যান্সার সেলকে নিখুঁতভাবে ধ্বংস করতে সক্ষম।

বিভিন্ন প্রজাতির কয়েক শ সাপের বিষ নিয়ে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন ইউএনসির শিক্ষার্থীরা। এসব সাপের তালিকায় র্যাটল স্নেকস থেকে শুরু করে ভাইপারও রয়েছে। সম্পূর্ণ নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করে সাপের বিষ নিয়ে গবেষণা করছেন তারা।

তাদের মধ্যে ভাইপার বিষ নিয়ে গবেষণা করছেন পিএইচডি ক্যান্ডিডেট ট্যানার হার্ভে। তিনি বলেন, মাত্র অল্পমাত্রায় প্রয়োগে স্তন ক্যান্সারের কোষ ধ্বংসে দ্রুত কাজ করে ভাইপার ভেনম। কোলন ক্যান্সারের কোষ ধ্বংসেও একইভাবে কাজ করে। তবে এটি মেলানোমা (ত্বকের ক্যান্সারের কোষ)। তবে অন্যান্য সাপের বিষ মেলানোমা ধ্বংসে কাজ করে বলে তিনি জানান।