হাওর বার্তা ডেস্কঃ বসন্তের আহ্বানে চায়ের রাজধানী শ্রীমঙ্গলে এখন দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। সকাল ও রাতে হালকা কুয়াশার সঙ্গে অনুভূত হচ্ছে মৃদু শীত। উপভোগযোগ্য মৃদু এ শীত নিমেষেই চাঙা করে তোলে ক্লান্ত মনপ্রাণ।
গত তিন দিন ধরে শ্রীমঙ্গলের প্রকৃতিতে বইছে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। সকালের দিকে অপেক্ষাকৃত কিছুটা বেশি শীত অনুভূত হলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা ফুরিয়ে যাচ্ছে। আবার দিন শেষে রাত গভীর হলে এ বসন্তপ্রকৃতি ছুঁয়ে বাড়ছে শীতের আমেজ।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্র জানায়, শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে শ্রীমঙ্গলে ১২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) ও তার আগের দিন বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সর্বনিম্ন তাপমাত্রা যথাক্রমে ছিল ১১ দশমিক ৩ এবং ১১ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
শনিবার সকালে গিয়ে দেখা গেছে, শহরে শীতের আমেজ দেখা না গেলেও চা বাগানগুলোতে এর প্রত্যক্ষ ছাপ রয়েছে। যতদূর চোখ যায়, সেকশনের (চা বাগানের নির্দিষ্ট অঞ্চল) ছায়াবৃক্ষগুলো ঘিরে দেখা গেছে কুয়াশার দাপট।
শ্রীমঙ্গল আবহাওয়া অফিসের সহকারী মো. জাহেদুল ইসলাম মাসুম বাংলানিউজকে বলেন, তিন দিন ধরে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা আমরা রেকর্ড করছি শ্রীমঙ্গলে। চলতি শীত মৌসুমে বেশির ভাগ সময় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়াতে।
তিনি আরও বলেন, গত বছরের এ সময়ে তাপমাত্রা কিন্তু আরও বেশি থাকতো। ১৫ বা ১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের এর ওপরে থাকতো। বসন্তে শীত থাকতো না বললেই চলে। কিন্তু এখনও সকালের দিকে রয়েছে কনকনে ভাব। ওয়েদার (আবহাওয়া) যে কি হচ্ছে সেটি আসলে বলা মুসকিল। একেক সময় একেক আচরণ করছে।
জাহেদুল বলেন, ফরকাস্ট (পূর্বাভাষ) করার যে মেথড (নিউমেরিক্যাল প্রেডিকশন মেথড) এর উপরই মূলত আবহাওয়ার চালচিত্র নির্ভর করে। আবহাওয়ার দৈনিক বিভিন্ন ডাটাগুলো নিয়ে মেথডের মধ্যে ইমপুট করে মডেল রাফ করা হয়। তারপর আহওয়ার পূর্বাভাষ প্রকাশ করা হয়ে থাকে।
বিগত দুই বছরের তাপমাত্রার বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, গত ২০১৮ ও ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহে শ্রীমঙ্গলে সর্বনিম্ন তাপমাত্রাগুলো চলতি বছরের তুলনায় বেশি ছিল। এরমধ্যে জলবায়ু পরিবর্তনের কিছুটা প্রভাব রয়েছে। তবে এটাও ঠিক যে, আকাশে মেঘ আসার সঙ্গে সঙ্গে দেখবেন যে তাপমাত্রা বেড়ে গেছে।
আমাদের আবহাওয়ার আগের ডাটাগুলো (তথ্য) পর্যালোচনা করে বর্তমান সময়ের তাপমাত্রা চরিত্র আসলে বলা খুবই কঠিন। কারণ, এখন ক্রমশই বৈশ্বিক জলবায়ু ও আবহাওয়ার পরিবর্তন হচ্ছে। এর প্রভাব আমাদের দেশেও রয়েছে বলে জানান এ আবহাওয়াবিদ।