ঢাকা ০৪:৪৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সুস্থ্য থাকতে চাইলে পেঁপের বিচি খান

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:০০:৪৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২০
  • ১৯৭ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বছরজুড়েই পাওয়া যায় এমন একটি ফল পেঁপে। কাঁচা ও পাকা দুইভাবেই এটি খাওয়া যায়। স্বাদ ও  গুণাগুণের কারণেই মানুষের কাছে এর কদরও বেশি। এতে প্রাকৃতিক ফাইবার হিসাবে পুষ্টি এবং ভিটামিন এ, সি, এবং কে, যেমন নিয়াসিন, ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম, প্রোটিন রয়েছে। পেঁপের অসাধারণ উপকারিতা- ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়, দৃষ্টিশক্তি রক্ষা করে, হজমে সহায়তা করে, অর্শ ও কৃমিনাশক, কোলেস্টেরল কমায়, হৃদরোগ থেকে রক্ষা করে এসব সবারই জানা। তবে পেঁপে খাওয়ার পরে আমরা সাধারণত এর বিচি ফেলে দেই। এটি আমাদের একটি বড় ভুল। পেঁপের মতো পেঁপের বিচিতেও রয়েছে নানাবিধ গুণাগুণ। পেঁপের বিচিতেও রয়েছে নানা ভিটামিন ও ফসফরাস, ম্যাগনেশিয়াম, ক্যালসিয়ামের মতো জরুরি কিছু মিনারেল। এটি ফ্ল্যাবনয়েডের অন্যতম উৎস, যা হজমশক্তি বাড়ানোর একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। পেঁপের বিচি ফেলে না দিয়ে খেলে মিলবে অনেক উপকার। চলুন জেনে নেই পেঁপের বিচির উপকাররিতা-

শরীরে জ্বালা-প্রদাহ কমায় : পেঁপের বিচ খেলে আর্থারাইটিস, জয়েন্ট ডিজিজ, ফোলা, ব্যাথা ও লালচে দাগ দূর হয়। ছোট এই বিচিটি যেকোন এন্টি-ইনফ্লেমেটরি (প্রদাহবিরোধী) ওষুধের চেয়ে বেশি শক্তিশালী। এর কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই তবে আপনি পেতে পারেন হাজারো উপকারিতা।
এন্টি ব্যাক্টেরিয়াল ও সংক্রামক রোগ নিরোধক : এক টেবিল চামচ পেঁপের বিচি আপনার শরীরকে সাহায্য করবে ভাইরাল ইনফেকশন্স, স্টেফের মতো জীবাণু, সেলমনেলা এবং ই-কলি এবং টাইফয়েড, ডেঙ্গুর বিরুদ্ধে লড়াই করতে। ভাইরাল ইনফেকশন্স এবং টাইফয়েডের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য পেঁপের বিচির চেয়ে ভালো কোন ওষুধ কিংবা অন্য কোন কিছু আপনি খুঁজেও পাবেন না।

পরাভূক/পরজীবী জীবাণু ও ক্রিমি দূর করে : পেঁপের বিচি প্রোটিওলিটিক এনজায়েম দ্বারা সমৃদ্ধ যেমন- পেপেইন। এটি প্রাথমিক পর্যায়ের পরাভূক বা পরজীবী জীবাণু দূর করে, হজম না হওয়া খাদ্যের প্রোটিনের বর্জ্য ভেঙে ফেলে এবং পরাভূক/পরজীবী ও তাদের অস্তিত্বকেও দূর করে দেয়।

লিভার সুরক্ষা : পেঁপের বিচি পরিপোষক (নিউট্রিয়েন্ট) পদার্থ সমৃদ্ধ, যা লিভারের বর্জ্য পরিষ্কার করতে সাহায্য করে এবং শরীরকে বিষমুক্ত করতে লিভারের কার্যকারিতা বাড়িয়ে দেয়। ৫টি পেঁপের বিচি এক চামচ লেবুর রস দিয়ে মিশিয়ে এক মাস খেলে লিভার সিরোসিস রোগের জন্য অবিশ্বাস্য রকম কাজ করে।
হজম শক্তি বাড়ায় : আমরা যে বিচি ফেলে দেই সেই বিচিতে রয়েছে প্রলিউটিক এনজায়েম যেমন-গিøসিল, এনডোপেপটিডেজ, প্যাপেইন, চাইমোপাপেইন এবং ক্যারিকেইনের মতো উপাদান। যা শরীর থেকে বর্জ্য অপসারণ করে এবং খাবার হজমে সাহায্য করে।

অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট : ক্যান্সার হচ্ছে বর্তমান সময়ের প্লেগ রোগ এবং এখন সময় এসেছে এটির সেলগুলোকে প্রাথমিক পর্যায়ে ধ্বংস করে দিয়ে সকলে সুস্থ্য-সুন্দর জীবন যাপন-করার। শরীর থেকে এর উপসর্গ দূর করার জন্য এবং সুস্থ থাকতে হলে আপনাকে পেঁপের বিচির সাহায্য নিতে হবে। সকলের জন্য সুখবর হচ্ছে- পেঁপের বিচি ক্যান্সার ও টিউমারের সেল ধ্বংস করে, একইরকম কাজ করে লিউকোমিয়ার ক্ষেত্রেও।
রক্তসঞ্চালন নিয়ন্ত্রণ করে : পেঁপে কম্পাউন্ড-কারপেইন সমৃদ্ধ, যা হৃদ সংকোচন সংক্রান্ত ও উচ্চ রক্তচাপ দূর করে।

প্রাকৃতিক গর্ভনিরোধক : গর্ভনিরোধকের জন্য পেঁপের বিচি প্রাকৃতিক ওষুধ হিসেবে কাজ করে। এক চামচ পেঁপের বিচি কামশক্তি না কমিয়েই স্পার্মের কার্যকারিতা কমিয়ে দেয়। ফলে পেঁপের বিচি খেলে গর্ভনিরোধের জন্য অন্য কোন ওষুধ বা পদ্ধতির আশ্রয় নিতে হবে না।

কিডনি সুরক্ষা করে : পেঁপের বিচি কিডনি স্বাস্থ্য সুরক্ষা করে এবং মুত্রাশয়ের ব্যর্থতা থেকে বাঁচায়। কিডনি সম্পর্কিত রোগ এবং বিষাক্ততার ক্ষেত্রেও এটি শক্তিশালী চিকিৎসা উপকরণ হিসেবে কাজ করে।
কিভাবে খাবেন : পেঁপে খাওয়ার সময় চাইলে চামচ দিয়ে তুলে সরাসরিই পেঁপের বিচি খেতে পারেন, অথবা ফলের সাথে মিশিয়েও খাওয়া যায়। এছাড়া এক সপ্তাহের জন্য বিচি সংরক্ষণ করতে পারেন। সংরক্ষণের ফলে বিচিতে শক্তিশালী এন্টি-প্যারাসাইটিক ইফেক্টস থাকে তাই শিশু, গর্ভবতী মহিলা এবং বাচ্চাদের দুগ্ধপান করান এমন কাউকে খাওয়ানো উচিত হবে না।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

সুস্থ্য থাকতে চাইলে পেঁপের বিচি খান

আপডেট টাইম : ১১:০০:৪৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বছরজুড়েই পাওয়া যায় এমন একটি ফল পেঁপে। কাঁচা ও পাকা দুইভাবেই এটি খাওয়া যায়। স্বাদ ও  গুণাগুণের কারণেই মানুষের কাছে এর কদরও বেশি। এতে প্রাকৃতিক ফাইবার হিসাবে পুষ্টি এবং ভিটামিন এ, সি, এবং কে, যেমন নিয়াসিন, ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম, প্রোটিন রয়েছে। পেঁপের অসাধারণ উপকারিতা- ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়, দৃষ্টিশক্তি রক্ষা করে, হজমে সহায়তা করে, অর্শ ও কৃমিনাশক, কোলেস্টেরল কমায়, হৃদরোগ থেকে রক্ষা করে এসব সবারই জানা। তবে পেঁপে খাওয়ার পরে আমরা সাধারণত এর বিচি ফেলে দেই। এটি আমাদের একটি বড় ভুল। পেঁপের মতো পেঁপের বিচিতেও রয়েছে নানাবিধ গুণাগুণ। পেঁপের বিচিতেও রয়েছে নানা ভিটামিন ও ফসফরাস, ম্যাগনেশিয়াম, ক্যালসিয়ামের মতো জরুরি কিছু মিনারেল। এটি ফ্ল্যাবনয়েডের অন্যতম উৎস, যা হজমশক্তি বাড়ানোর একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। পেঁপের বিচি ফেলে না দিয়ে খেলে মিলবে অনেক উপকার। চলুন জেনে নেই পেঁপের বিচির উপকাররিতা-

শরীরে জ্বালা-প্রদাহ কমায় : পেঁপের বিচ খেলে আর্থারাইটিস, জয়েন্ট ডিজিজ, ফোলা, ব্যাথা ও লালচে দাগ দূর হয়। ছোট এই বিচিটি যেকোন এন্টি-ইনফ্লেমেটরি (প্রদাহবিরোধী) ওষুধের চেয়ে বেশি শক্তিশালী। এর কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই তবে আপনি পেতে পারেন হাজারো উপকারিতা।
এন্টি ব্যাক্টেরিয়াল ও সংক্রামক রোগ নিরোধক : এক টেবিল চামচ পেঁপের বিচি আপনার শরীরকে সাহায্য করবে ভাইরাল ইনফেকশন্স, স্টেফের মতো জীবাণু, সেলমনেলা এবং ই-কলি এবং টাইফয়েড, ডেঙ্গুর বিরুদ্ধে লড়াই করতে। ভাইরাল ইনফেকশন্স এবং টাইফয়েডের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য পেঁপের বিচির চেয়ে ভালো কোন ওষুধ কিংবা অন্য কোন কিছু আপনি খুঁজেও পাবেন না।

পরাভূক/পরজীবী জীবাণু ও ক্রিমি দূর করে : পেঁপের বিচি প্রোটিওলিটিক এনজায়েম দ্বারা সমৃদ্ধ যেমন- পেপেইন। এটি প্রাথমিক পর্যায়ের পরাভূক বা পরজীবী জীবাণু দূর করে, হজম না হওয়া খাদ্যের প্রোটিনের বর্জ্য ভেঙে ফেলে এবং পরাভূক/পরজীবী ও তাদের অস্তিত্বকেও দূর করে দেয়।

লিভার সুরক্ষা : পেঁপের বিচি পরিপোষক (নিউট্রিয়েন্ট) পদার্থ সমৃদ্ধ, যা লিভারের বর্জ্য পরিষ্কার করতে সাহায্য করে এবং শরীরকে বিষমুক্ত করতে লিভারের কার্যকারিতা বাড়িয়ে দেয়। ৫টি পেঁপের বিচি এক চামচ লেবুর রস দিয়ে মিশিয়ে এক মাস খেলে লিভার সিরোসিস রোগের জন্য অবিশ্বাস্য রকম কাজ করে।
হজম শক্তি বাড়ায় : আমরা যে বিচি ফেলে দেই সেই বিচিতে রয়েছে প্রলিউটিক এনজায়েম যেমন-গিøসিল, এনডোপেপটিডেজ, প্যাপেইন, চাইমোপাপেইন এবং ক্যারিকেইনের মতো উপাদান। যা শরীর থেকে বর্জ্য অপসারণ করে এবং খাবার হজমে সাহায্য করে।

অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট : ক্যান্সার হচ্ছে বর্তমান সময়ের প্লেগ রোগ এবং এখন সময় এসেছে এটির সেলগুলোকে প্রাথমিক পর্যায়ে ধ্বংস করে দিয়ে সকলে সুস্থ্য-সুন্দর জীবন যাপন-করার। শরীর থেকে এর উপসর্গ দূর করার জন্য এবং সুস্থ থাকতে হলে আপনাকে পেঁপের বিচির সাহায্য নিতে হবে। সকলের জন্য সুখবর হচ্ছে- পেঁপের বিচি ক্যান্সার ও টিউমারের সেল ধ্বংস করে, একইরকম কাজ করে লিউকোমিয়ার ক্ষেত্রেও।
রক্তসঞ্চালন নিয়ন্ত্রণ করে : পেঁপে কম্পাউন্ড-কারপেইন সমৃদ্ধ, যা হৃদ সংকোচন সংক্রান্ত ও উচ্চ রক্তচাপ দূর করে।

প্রাকৃতিক গর্ভনিরোধক : গর্ভনিরোধকের জন্য পেঁপের বিচি প্রাকৃতিক ওষুধ হিসেবে কাজ করে। এক চামচ পেঁপের বিচি কামশক্তি না কমিয়েই স্পার্মের কার্যকারিতা কমিয়ে দেয়। ফলে পেঁপের বিচি খেলে গর্ভনিরোধের জন্য অন্য কোন ওষুধ বা পদ্ধতির আশ্রয় নিতে হবে না।

কিডনি সুরক্ষা করে : পেঁপের বিচি কিডনি স্বাস্থ্য সুরক্ষা করে এবং মুত্রাশয়ের ব্যর্থতা থেকে বাঁচায়। কিডনি সম্পর্কিত রোগ এবং বিষাক্ততার ক্ষেত্রেও এটি শক্তিশালী চিকিৎসা উপকরণ হিসেবে কাজ করে।
কিভাবে খাবেন : পেঁপে খাওয়ার সময় চাইলে চামচ দিয়ে তুলে সরাসরিই পেঁপের বিচি খেতে পারেন, অথবা ফলের সাথে মিশিয়েও খাওয়া যায়। এছাড়া এক সপ্তাহের জন্য বিচি সংরক্ষণ করতে পারেন। সংরক্ষণের ফলে বিচিতে শক্তিশালী এন্টি-প্যারাসাইটিক ইফেক্টস থাকে তাই শিশু, গর্ভবতী মহিলা এবং বাচ্চাদের দুগ্ধপান করান এমন কাউকে খাওয়ানো উচিত হবে না।