ঢাকা ০৫:৪৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ব্যাপক ভাঙনে আতঙ্কিত যমুনাপাড়ের মানুষ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:১৩:৫০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৩ মে ২০১৫
  • ৩৭৭ বার

যমুনা নদীসংলগ্ন প্রায় পাঁচ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে শুরু হয়েছে ব্যাপক ভাঙন। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন নদীতীরবর্তী এলাকার মানুষ।

সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার বালিঘুগরী, ইটালী, সিমলা ও বাহুকা পয়েন্টে এ ভাঙন শুরু হয়েছে।

এদিকে, বালিঘুগরী পয়েন্টে তিন মাস আগে ৩৬০ মিটার এলাকায় তিন কোটি টাকা ব্যয়ে জিও ব্যাগ নিক্ষেপ এবং আট কোটি টাকায় বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণ করা হলেও তা কোনো কাজে আসেনি বলে অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী।

স্থানীয়রা জানান, ১৫ দিনের ভাঙনে এরই মধ্যে চার গ্রামের প্রায় তিন হাজার হেক্টর আবাদি জমিসহ ৫০টি বসতবাড়ি-শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নদীতে চলে গেছে। একদিকে ভাঙন, অন্যদিকে বর্ষায় গ্রামগুলো তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় আতঙ্কে দিন কাটছে হাজার হাজার মানুষের। এ সময় কেউ কেউ নিজেদের বাড়ির জিনিসপত্র সরিয়ে নিয়েছেন। ভাঙনে পাড়ের জিও ব্যাগগুলোও স্রোতে ভেসে যায় নদীতে। এ ছাড়া বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধের ৩৮০ মিটারসহ আশপাশের চার কিলিমিটার এলাকার অর্ধশতাধিক বসতভিটা ও বহু জমি বিলীন হয়েছে। ভাঙন ক্রমশ বাড়লেও তা রোধে কোনো কাজ শুরু করেনি পাউবো।

বিলীন হওয়া বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধের পাশ দিয়ে যাতে বর্ষা মৌসুমে শহরে পানি ঢুকতে না পারে সেজন্য শুধু বিকল্প বালুর বাঁধ তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। কিন্তু বর্ষায় এ বাঁধ টেকা-না টেকা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন খোদ পাউবো কর্মকর্তারা।

পাউবো জানায়, ফান্ড না থাকায় ভাঙনরোধে কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না।

স্থানীয় বালিঘুরঘুরি গ্রামের বাসিন্দা ময়েজ উদ্দিন (৭৫) বলেন, ‘নিজের চোখেই ১০ থেকে ১২ বার নদীভাঙন দেখলাম। জীবন আর চলে না। সহায়সম্বল যা ছিল এবারের ভাঙনে নদীতে চলে যাচ্ছে।’

সিমলা বালুর বাঁধ এলাকায় শনিবার ভোরে নতুন করে ধসে যাওয়া স্থান দেখিয়ে সমিরন নেছা (৬৫) এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘বাবা আপনেরা তো সরকারের লোক। সরকার এতো ট্যাহা-পয়সা দেয় তাও আমাগোর ঘর থাকে না কে?’

পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ হাসান ইমাম দ্য রিপোর্টকে জানান, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতির কারণে ১১ থেকে ১৭ নম্বর প্যাকেজগুলোর কাজ হয়নি। তাই তাদের বাদ দিয়ে চলতি বছরের জানুয়ারিতে নতুন করে টেন্ডার সম্পন্ন করা হয়েছে। কিন্তু এখনও কার্যাদেশ দেওয়া হয়নি। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

তিনি আরও জানান, যমুনার পানি ডান তীরে আঘাত হানছে। আঘাত যাতে কম হানে, সে জন্য ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে যমুনার দিক পরিবর্তনের চেষ্টা করা হচ্ছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

ব্যাপক ভাঙনে আতঙ্কিত যমুনাপাড়ের মানুষ

আপডেট টাইম : ১০:১৩:৫০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৩ মে ২০১৫

যমুনা নদীসংলগ্ন প্রায় পাঁচ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে শুরু হয়েছে ব্যাপক ভাঙন। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন নদীতীরবর্তী এলাকার মানুষ।

সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার বালিঘুগরী, ইটালী, সিমলা ও বাহুকা পয়েন্টে এ ভাঙন শুরু হয়েছে।

এদিকে, বালিঘুগরী পয়েন্টে তিন মাস আগে ৩৬০ মিটার এলাকায় তিন কোটি টাকা ব্যয়ে জিও ব্যাগ নিক্ষেপ এবং আট কোটি টাকায় বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণ করা হলেও তা কোনো কাজে আসেনি বলে অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী।

স্থানীয়রা জানান, ১৫ দিনের ভাঙনে এরই মধ্যে চার গ্রামের প্রায় তিন হাজার হেক্টর আবাদি জমিসহ ৫০টি বসতবাড়ি-শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নদীতে চলে গেছে। একদিকে ভাঙন, অন্যদিকে বর্ষায় গ্রামগুলো তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় আতঙ্কে দিন কাটছে হাজার হাজার মানুষের। এ সময় কেউ কেউ নিজেদের বাড়ির জিনিসপত্র সরিয়ে নিয়েছেন। ভাঙনে পাড়ের জিও ব্যাগগুলোও স্রোতে ভেসে যায় নদীতে। এ ছাড়া বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধের ৩৮০ মিটারসহ আশপাশের চার কিলিমিটার এলাকার অর্ধশতাধিক বসতভিটা ও বহু জমি বিলীন হয়েছে। ভাঙন ক্রমশ বাড়লেও তা রোধে কোনো কাজ শুরু করেনি পাউবো।

বিলীন হওয়া বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধের পাশ দিয়ে যাতে বর্ষা মৌসুমে শহরে পানি ঢুকতে না পারে সেজন্য শুধু বিকল্প বালুর বাঁধ তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। কিন্তু বর্ষায় এ বাঁধ টেকা-না টেকা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন খোদ পাউবো কর্মকর্তারা।

পাউবো জানায়, ফান্ড না থাকায় ভাঙনরোধে কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না।

স্থানীয় বালিঘুরঘুরি গ্রামের বাসিন্দা ময়েজ উদ্দিন (৭৫) বলেন, ‘নিজের চোখেই ১০ থেকে ১২ বার নদীভাঙন দেখলাম। জীবন আর চলে না। সহায়সম্বল যা ছিল এবারের ভাঙনে নদীতে চলে যাচ্ছে।’

সিমলা বালুর বাঁধ এলাকায় শনিবার ভোরে নতুন করে ধসে যাওয়া স্থান দেখিয়ে সমিরন নেছা (৬৫) এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘বাবা আপনেরা তো সরকারের লোক। সরকার এতো ট্যাহা-পয়সা দেয় তাও আমাগোর ঘর থাকে না কে?’

পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ হাসান ইমাম দ্য রিপোর্টকে জানান, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতির কারণে ১১ থেকে ১৭ নম্বর প্যাকেজগুলোর কাজ হয়নি। তাই তাদের বাদ দিয়ে চলতি বছরের জানুয়ারিতে নতুন করে টেন্ডার সম্পন্ন করা হয়েছে। কিন্তু এখনও কার্যাদেশ দেওয়া হয়নি। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

তিনি আরও জানান, যমুনার পানি ডান তীরে আঘাত হানছে। আঘাত যাতে কম হানে, সে জন্য ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে যমুনার দিক পরিবর্তনের চেষ্টা করা হচ্ছে।