হাওর বার্তা ডেস্কঃ হাঁটা সবচেয়ে ভালো ব্যায়াম। ছোটো-বড়ো যে কেউ নিয়মিত হাঁটার অভ্যাস করতে পারেন। হাঁটলে প্রাকৃতিকভাবে সুস্থতা ও প্রাণবন্ত অনুভূতি মেলে। হাঁটার ফলে মানুষের চিন্তার সৃজনশীলতা বৃদ্ধি পায়, মেজাজ ভালো থাকে, কমে মানসিক চাপ। এর বাইরেও রয়েছে হাঁটার অনেক উপকারিতা। চিকিত্সা বিজ্ঞানীরা নানা সময়েই মানুষকে হাঁটার বিষয়ে উত্সাহ পরামর্শ দিয়ে থাকেন। কিন্তু বেশির ভাগ মানুষই বিজ্ঞানীদের দেখানো নিয়ম অনুসরণ করে হাঁটেন না।
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এই হাঁটার আছে অনেক উপকারিতা। এর ফলে পেশী সুগঠিত হয়, শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সুরক্ষিত থাকে ও মেরামত হয়, হজমে সাহায্য করে এবং মস্তিষ্ককেও সতেজ রেখে বার্ধক্য প্রতিরোধ করে। স্নায়ুবিজ্ঞানী প্রফেসর শেন ওমারা হাঁটার জন্য আটটি কারণ ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি ডাবলিনে ট্রিনিটি কলেজে মস্তিষ্ক বিষয়ে গবেষণা করেন।
হাঁটার জন্য যে আটটি কারণের কথা তিনি বলেছেন তার মধ্যে অন্যতম মস্তিষ্ক সক্রিয় থাকা। নিষ্ক্রিয় থাকার অর্থ শরীরে পেশীর শক্তি কমে যাওয়া। কিন্তু তারচেয়ে বড়ো কথা এর ফলে মস্তিষ্কও শুকিয়ে মারা যেতে শুরু করে। আমরা যখন হাঁটি তখন পেশীতে তৈরি হওয়া মলিকিউল বা অণু আমাদের মস্তিষ্ককে সচল রাখতে সাহায্য করে। এর মধ্যে একটি বিশেষ অণু মস্তিষ্কে রক্ত চলাচলে সাহায্য করে। এর ফলে আমাদের মস্তিষ্কের কোষগুলো বিকশিত হয়। ফলে হাঁটলে মস্তিষ্ক আরো শক্তিশালী হয়।
আরেকটি কারণ হার্ট ভালো থাকে। হূিপণ্ড ভালো থাকার জন্য হাঁটা খুবই উপকারী। আমাদের পূর্বপুরুষরা, যারা শিকার করে জীবন ধারণ করতেন, তারা দিনে ১৫ থেকে ১৭ মাইল হাঁটতেন। শেন ওমারা বলেন, এখনকার মানুষের হার্টের তুলনায় তাদের হার্ট সত্যিই অনেক ভালো ছিল।
নিয়মিত হাঁটলে তা হজমে সাহায্য করে। হাঁটা মানুষের পরিপাকতন্ত্রের জন্যও বন্ধুর মতো কাজ করে। তিনি বলেন, মানুষ যখন অনেক হাঁটাচলা করে তখন তার খাবারও বেশি হজম হয়। তার পরামর্শ—কোষ্ঠকাঠিন্য কাটাতে ওষুধ না খেয়ে আপনি যদি হাঁটতে বের হন, সেটা অনেক ভালো। এর সাহায্যে আপনি খুব সহজেই হজমের সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পেতে পারেন।
হাঁটলে মানুষের সৃজনশীলতা বৃদ্ধি পায়। হাঁটা যে আমাদের সৃজনশীলতা বৃদ্ধি করে সেটা বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত। এর ফলে অনেক সমস্যা সমাধান করাও সহজ হয়। আপনি যখন কোনো কিছু নিয়ে চিন্তা করছেন তখন হতাশ হয়ে এক জায়গায় বসে না থেকে একটু হাঁটাহাঁটি করলে সেটা সমস্যা সমাধানে অনেক সহায়ক হয়।
হাঁটার আকেটি উপকারী দিক হলো এটি বিষণ্নতা কাটাতে সাহায্য করে। শেন ওমারা বলেছেন, বিষণ্নতার সঙ্গে বসে থাকার সম্পর্কে রয়েছে। অন্যভাবে বললে নিয়মিত হাঁটাচলা করলে বিষণ্নতা কেটে যায়। তিনি বলেন, আপনি যদি প্রচুর হাঁটেন, রক্ত প্রবাহের ক্ষেত্রে সমস্যা থাকলে সেগুলো কমে যায়।—বিবিসি