ঢাকা ১১:২৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
শীতে কাঁপছে চুয়াডাঙ্গা, বেড়েছে ঠাণ্ডাজনিত রোগ চুনারুঘাটে জনতার হাতে আটক সাবেক এমপি পাচারের টাকা ফেরাতে সহায়তা দেবে যুক্তরাজ্য দুই বছর পর বেনাপোল বন্দর দিয়ে চাল আমদানি শুরু জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিয়ালের আক্রমণে আহত ৩ জুলাই গণঅভ্যুত্থান কাজলকে পাঠানো হলো থাইল্যান্ডে, বিমানে তুলে দিলেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা সাবেক ১০ মন্ত্রীসহ হেভিওয়েট আসামিদের আজ হাজির করা হবে ট্রাইব্যুনালে জমজমের পানি পানে নতুন নির্দেশনা দিলো সৌদি আরব আবারও ব্যর্থ বাংলাদেশের টপ অর্ডার, জাকের-অঙ্কনের ব্যাটে ঝলক একতাবদ্ধ হয়ে নারীদের সহিংসতা মুক্ত দেশ গড়তে হবে : শারমীন এস মুরশিদ

বগুড়ায় খেজুর রস সংগ্রহে মহাব্যস্ত গাছিরা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:২৮:১৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ নভেম্বর ২০১৫
  • ৪৮০ বার

হেমন্তের কালে এই মধ্যপ্রান্তে শীতের হিমেল আলিঙ্গনে বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার গ্রাম-গঞ্জে খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহে গাছিরা প্রস্তুতিতে মহাব্যস্ত। কার্তিক পেরিয়ে অগ্রাহায়ণ মাসে শীতের অনুভব পেতেই প্রতি বছরের মত এবারও গাছিরা উপজেলার বিভিন্ন গ্রামগঞ্জে খেজুর গাছের মালিকদের সাথে চুক্তি করে গাছ তৈরী শুরু করেছে।

আদমদীঘি উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, পতিত জমি, ভিটা, জমির আইলে সহ বিভিন্ন জায়গায় খেজুর গাছ রয়েছে। এসব খেজুর গাছ রোপন না করলেও এমনিতেই হয়েছে। এক সময় এই উপজেলায় প্রচুর খেজুর গাছ ছিল। খেজুর গাছের কাঠ দিয়ে কোন আসবার পত্র তৈরী না হওয়ায় অনেকে গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। তার পড়েও গ্রাম অঞ্চলে এখনও প্রচুর খেজুর গাছ রয়েছে। উপজেলার পল্লী গ্রামের মাটির ঘরে তীর হিসেবে খেজুর গাছ আজও ব্যবহার করছে অনেকে।

শীত মৌসুমে খেজুর রস আহরণ হয়। আর এই আশায় গাছিরা রস সংগ্রহের অপেক্ষায় থাকে। অগ্রহায়ণ মাসে নতুন ধান ওঠে প্রতিটি ঘরে। নতুন ধানের চালের গুড়া দিয়ে খেজুর রস ও গুড় দিয়ে পাঠি সাপটা পিঠে তৈরীর ধুম পড়ে গ্রাম-গঞ্জ গুলোতে। বছরে একবার শীত মৌসুমে খেজুর গাছ রস দেয়। এই রস গাছিরা গাছ থেকে অহরন করে বড় পাত্রে ঢেলে চুলাই আগুনে জাল দিয়ে লালি, দানাদার ও পাটারী গুড় তৈরী করে। গুড়ের স্বাদ ও গদ্ধে ভরে ওঠে সকলের মন।

উপজেলার তেতুলিয়া গ্রামের গাছি, ইয়াচিন সরদার, বন্তইর গ্রামের সুকুমার চন্দ্র, জিনইর গ্রামের টুয়েল, বশিকোড়া গ্রামের আব্দুস সালাম সহ বেশ কিছু গাছিরা জানান, গত কয়েক বছর আগে যে পরিমান খেজুর গাছ ছিল বর্তমানে তা আর নেই। তার পড়েও যা আছে তা একেবারে কমও না। শীত শুরু হলেই গাছে রস আসে। আর সেই কারণেই শীতের আগাম বার্তা আসা মাত্র বিশেষ করে কার্তিক মাসে আমরা গাছ তৈরীতে ব্যস্ত হয়ে পড়ি। গাছিরা আরো জানান, অগ্রহায়ণ থেকে মাঘ মাস পর্যন্ত (তিন মাস) খেজুর রস আহরণ করা হয়।

সপ্তাহের দুই থেকে তিন দিন রস সংগ্রহ বন্ধ রাখা হয়। এ ফলে গাছের রস ভাল হয়। গাছের মালিকদের তিন মাসে দশ কেজি করে গুড় দিতে হয়। রস থেকে তৈরী গুড় গাছিরা বাজারে বিক্রি করে লাভবান হয়ে থাকে। গাছিরা তিন মাসে একটি গাছের রসের গুড় বিক্রি করে দেড় থেকে দুই হাজার টাকা রোজগার করে থাকে। গ্রামের মানুষ সকালে ঘুম থেকে উঠে চাদর মুরি দিয়ে কাাঁপছে আর খেজুর রস ও মুড়ি এক সঙ্গে নিয়ে শীতের রসালো সাধ অনুভব করে থাকে। এ ছাড়া প্রতিটি ঘরে নতুন চালের আটা আর খেজুর গুড়ের পিঠা খাওয়ার ধুম পড়ে। আর শুরু হয় শীতের পিঠা তৈরী করে জামাই-মেয়ে আপ্যায়ন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

শীতে কাঁপছে চুয়াডাঙ্গা, বেড়েছে ঠাণ্ডাজনিত রোগ

বগুড়ায় খেজুর রস সংগ্রহে মহাব্যস্ত গাছিরা

আপডেট টাইম : ১১:২৮:১৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ নভেম্বর ২০১৫

হেমন্তের কালে এই মধ্যপ্রান্তে শীতের হিমেল আলিঙ্গনে বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার গ্রাম-গঞ্জে খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহে গাছিরা প্রস্তুতিতে মহাব্যস্ত। কার্তিক পেরিয়ে অগ্রাহায়ণ মাসে শীতের অনুভব পেতেই প্রতি বছরের মত এবারও গাছিরা উপজেলার বিভিন্ন গ্রামগঞ্জে খেজুর গাছের মালিকদের সাথে চুক্তি করে গাছ তৈরী শুরু করেছে।

আদমদীঘি উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, পতিত জমি, ভিটা, জমির আইলে সহ বিভিন্ন জায়গায় খেজুর গাছ রয়েছে। এসব খেজুর গাছ রোপন না করলেও এমনিতেই হয়েছে। এক সময় এই উপজেলায় প্রচুর খেজুর গাছ ছিল। খেজুর গাছের কাঠ দিয়ে কোন আসবার পত্র তৈরী না হওয়ায় অনেকে গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। তার পড়েও গ্রাম অঞ্চলে এখনও প্রচুর খেজুর গাছ রয়েছে। উপজেলার পল্লী গ্রামের মাটির ঘরে তীর হিসেবে খেজুর গাছ আজও ব্যবহার করছে অনেকে।

শীত মৌসুমে খেজুর রস আহরণ হয়। আর এই আশায় গাছিরা রস সংগ্রহের অপেক্ষায় থাকে। অগ্রহায়ণ মাসে নতুন ধান ওঠে প্রতিটি ঘরে। নতুন ধানের চালের গুড়া দিয়ে খেজুর রস ও গুড় দিয়ে পাঠি সাপটা পিঠে তৈরীর ধুম পড়ে গ্রাম-গঞ্জ গুলোতে। বছরে একবার শীত মৌসুমে খেজুর গাছ রস দেয়। এই রস গাছিরা গাছ থেকে অহরন করে বড় পাত্রে ঢেলে চুলাই আগুনে জাল দিয়ে লালি, দানাদার ও পাটারী গুড় তৈরী করে। গুড়ের স্বাদ ও গদ্ধে ভরে ওঠে সকলের মন।

উপজেলার তেতুলিয়া গ্রামের গাছি, ইয়াচিন সরদার, বন্তইর গ্রামের সুকুমার চন্দ্র, জিনইর গ্রামের টুয়েল, বশিকোড়া গ্রামের আব্দুস সালাম সহ বেশ কিছু গাছিরা জানান, গত কয়েক বছর আগে যে পরিমান খেজুর গাছ ছিল বর্তমানে তা আর নেই। তার পড়েও যা আছে তা একেবারে কমও না। শীত শুরু হলেই গাছে রস আসে। আর সেই কারণেই শীতের আগাম বার্তা আসা মাত্র বিশেষ করে কার্তিক মাসে আমরা গাছ তৈরীতে ব্যস্ত হয়ে পড়ি। গাছিরা আরো জানান, অগ্রহায়ণ থেকে মাঘ মাস পর্যন্ত (তিন মাস) খেজুর রস আহরণ করা হয়।

সপ্তাহের দুই থেকে তিন দিন রস সংগ্রহ বন্ধ রাখা হয়। এ ফলে গাছের রস ভাল হয়। গাছের মালিকদের তিন মাসে দশ কেজি করে গুড় দিতে হয়। রস থেকে তৈরী গুড় গাছিরা বাজারে বিক্রি করে লাভবান হয়ে থাকে। গাছিরা তিন মাসে একটি গাছের রসের গুড় বিক্রি করে দেড় থেকে দুই হাজার টাকা রোজগার করে থাকে। গ্রামের মানুষ সকালে ঘুম থেকে উঠে চাদর মুরি দিয়ে কাাঁপছে আর খেজুর রস ও মুড়ি এক সঙ্গে নিয়ে শীতের রসালো সাধ অনুভব করে থাকে। এ ছাড়া প্রতিটি ঘরে নতুন চালের আটা আর খেজুর গুড়ের পিঠা খাওয়ার ধুম পড়ে। আর শুরু হয় শীতের পিঠা তৈরী করে জামাই-মেয়ে আপ্যায়ন।