ঢাকা ০৯:৪৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ব্যাংকগুলোর কৃষিঋণ বিতরণ বাড়ছে

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৮:২৩:০০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ নভেম্বর ২০১৫
  • ২৭৭ বার

চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইতে মাত্র ৮৬১ কোটি টাকার কৃষিঋণ বিতরণ করেছিল দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো। কৃষিঋণ বিতরণ কমার কারণ ছিল বন্যার কারণে সঠিক সময়ে জমি প্রস্তুত করতে না পারা। ফলে কৃষক থেকে ঋণের চাহিদা কমেছিল। কিন্তু জুলাইয়ের পর থেকে টানা বাড়ছে কৃষিঋণ বিতরণ। অক্টোবর মাসে দেশের ব্যাংকগুলো কৃষি খাতে ঋণ বিতরণ করেছে ১ হাজার ৪২৭ কোটি, যা সেপ্টেম্বরের তুলনায় ৩৭ কোটি টাকা বেশি। এটি গেল বছরের অক্টোবরের চেয়ে ২৯৫ কোটি টাকা বেশি। এদিকে, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৪ মাসে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) ব্যাংকগুলো কৃষি খাতে যে পরিমাণ ঋণ বিতরণ করেছে তা গেল অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ১৯ শতাংশ বেশি। মূলত বোরো মৌসুমকে কেন্দ্র করেই কৃষিঋণ বিতরণ বাড়ছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা।
চলতি ২০১৫-১৬ অর্থবছরে কৃষিঋণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৬ হাজার ৪০০ কোটি, যা গেল অর্থবছরের চেয়ে সাড়ে ৫ শতাংশ বা ৮৫০ কোটি টাকা বেশি। এবার মোট ঋণের মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর জন্য ৯ হাজার ২৯০ কোটি টাকা, বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে ৬ হাজার ৭১৭ হাজার কোটি ও বিদেশি ব্যাংকগুলোর ২৯৩ কোটি টাকা ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। এছাড়া চলতি অর্থবছরেও ব্যাংকগুলোকে মোট ঋণের নূনতম আড়াই শতাংশ কৃষি ও পল্লী খাতে বিতরণ করতে হবে। নতুন ব্যাংকগুলোর জন্য এ হার ৫ শতাংশ। যারা লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সক্ষম হবে না তাদের অর্থবছর শেষে লক্ষ্যমাত্রার অনর্জিত অংশ বাংলাদেশ ব্যাংকে বাধ্যতামূলক জমা করতে হবে। ব্যাংক এ জমার ওপর কোনো সুদ পাবে না। গেল অর্থবছরের কৃষি ও পল্লী ঋণ নীতিমালায় টার্গেট পূরণে ব্যর্থ ব্যাংকের অনর্জিত অংশের ওপর ৩ শতাংশ হারে অর্থ বাংলাদেশ ব্যাংকে বাধ্যতামূলক জমা রাখার বিধান ছিল।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের (জুলাই-অক্টোবর) প্রথম চার মাসে ব্যাংকগুলো মোট কৃষিঋণ বিতরণ করেছে ৪ হাজার ৬৩১ কোটি ২৯ লাখ, যা গেল অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৭৪৮ কোটি ৫৯ লাখ টাকা বা ১৯ দশমিক ২৮ শতাংশ বেশি। গেল অর্থবছরের জুলাই-অক্টোবর এ ৪ মাসে কৃষিঋণ বিতরণ হয়েছিল ৩ হাজার ৮৮২ কোটি ৭০ লাখ টাকা। প্রতিবেদন পর্যালোচনায় আরও দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের জুলাই মাসে কৃষিঋণ বিতরণ হয়েছিল মাত্র ৮৬১ কোটি ৯১ লাখ টাকা। কিন্তু এরপর আগস্ট, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে টানা কৃষিঋণ বিতরণ বেড়েছে। আগস্ট মাসে কৃষিঋণ বিতরণ হয় ৯৫২ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। সেপ্টেম্বর মাসে তা আরও বেড়ে হয় ১ হাজার ৩৮৯ কোটি ৯০ লাখ টাকা। আর অক্টোবরে বিতরণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৪২৭ কোটি টাকা। গেল অর্থবছরের অক্টোবর মাসে কৃষিঋণ বিতরণের পরিমাণ ছিল ১ হাজার ১৩২ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, গেল অর্থবছরে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও ৩ শতাংশ বেশি কৃষিঋণ বিতরণ করতে সক্ষম হয় ব্যাংকগুলো। গেল অর্থবছরে মোট কৃষিঋণ বিতরণের পরিমাণ ছিল ১৫ হাজার ৯৭৮ কোটি টাকা। এছাড়া গেল অর্থবছরে আদায়যোগ্য ঋণের ৭০ শতাংশ আদায় হয়, যা আগের অর্থবছরের তুলনায় বেশি। অন্যদিকে, গেল অর্থবছরে আমদানি বিকল্প ফসল চাষে ৪ শতাংশ রেয়াতি সুদ হারে সাড়ে ৯৫ কোটি টাকা ঋণ প্রদানের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ৮২ শতাংশ অর্জিত হয়।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

ব্যাংকগুলোর কৃষিঋণ বিতরণ বাড়ছে

আপডেট টাইম : ০৮:২৩:০০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ নভেম্বর ২০১৫

চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইতে মাত্র ৮৬১ কোটি টাকার কৃষিঋণ বিতরণ করেছিল দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো। কৃষিঋণ বিতরণ কমার কারণ ছিল বন্যার কারণে সঠিক সময়ে জমি প্রস্তুত করতে না পারা। ফলে কৃষক থেকে ঋণের চাহিদা কমেছিল। কিন্তু জুলাইয়ের পর থেকে টানা বাড়ছে কৃষিঋণ বিতরণ। অক্টোবর মাসে দেশের ব্যাংকগুলো কৃষি খাতে ঋণ বিতরণ করেছে ১ হাজার ৪২৭ কোটি, যা সেপ্টেম্বরের তুলনায় ৩৭ কোটি টাকা বেশি। এটি গেল বছরের অক্টোবরের চেয়ে ২৯৫ কোটি টাকা বেশি। এদিকে, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৪ মাসে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) ব্যাংকগুলো কৃষি খাতে যে পরিমাণ ঋণ বিতরণ করেছে তা গেল অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ১৯ শতাংশ বেশি। মূলত বোরো মৌসুমকে কেন্দ্র করেই কৃষিঋণ বিতরণ বাড়ছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা।
চলতি ২০১৫-১৬ অর্থবছরে কৃষিঋণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৬ হাজার ৪০০ কোটি, যা গেল অর্থবছরের চেয়ে সাড়ে ৫ শতাংশ বা ৮৫০ কোটি টাকা বেশি। এবার মোট ঋণের মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর জন্য ৯ হাজার ২৯০ কোটি টাকা, বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে ৬ হাজার ৭১৭ হাজার কোটি ও বিদেশি ব্যাংকগুলোর ২৯৩ কোটি টাকা ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। এছাড়া চলতি অর্থবছরেও ব্যাংকগুলোকে মোট ঋণের নূনতম আড়াই শতাংশ কৃষি ও পল্লী খাতে বিতরণ করতে হবে। নতুন ব্যাংকগুলোর জন্য এ হার ৫ শতাংশ। যারা লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সক্ষম হবে না তাদের অর্থবছর শেষে লক্ষ্যমাত্রার অনর্জিত অংশ বাংলাদেশ ব্যাংকে বাধ্যতামূলক জমা করতে হবে। ব্যাংক এ জমার ওপর কোনো সুদ পাবে না। গেল অর্থবছরের কৃষি ও পল্লী ঋণ নীতিমালায় টার্গেট পূরণে ব্যর্থ ব্যাংকের অনর্জিত অংশের ওপর ৩ শতাংশ হারে অর্থ বাংলাদেশ ব্যাংকে বাধ্যতামূলক জমা রাখার বিধান ছিল।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের (জুলাই-অক্টোবর) প্রথম চার মাসে ব্যাংকগুলো মোট কৃষিঋণ বিতরণ করেছে ৪ হাজার ৬৩১ কোটি ২৯ লাখ, যা গেল অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৭৪৮ কোটি ৫৯ লাখ টাকা বা ১৯ দশমিক ২৮ শতাংশ বেশি। গেল অর্থবছরের জুলাই-অক্টোবর এ ৪ মাসে কৃষিঋণ বিতরণ হয়েছিল ৩ হাজার ৮৮২ কোটি ৭০ লাখ টাকা। প্রতিবেদন পর্যালোচনায় আরও দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের জুলাই মাসে কৃষিঋণ বিতরণ হয়েছিল মাত্র ৮৬১ কোটি ৯১ লাখ টাকা। কিন্তু এরপর আগস্ট, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে টানা কৃষিঋণ বিতরণ বেড়েছে। আগস্ট মাসে কৃষিঋণ বিতরণ হয় ৯৫২ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। সেপ্টেম্বর মাসে তা আরও বেড়ে হয় ১ হাজার ৩৮৯ কোটি ৯০ লাখ টাকা। আর অক্টোবরে বিতরণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৪২৭ কোটি টাকা। গেল অর্থবছরের অক্টোবর মাসে কৃষিঋণ বিতরণের পরিমাণ ছিল ১ হাজার ১৩২ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, গেল অর্থবছরে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও ৩ শতাংশ বেশি কৃষিঋণ বিতরণ করতে সক্ষম হয় ব্যাংকগুলো। গেল অর্থবছরে মোট কৃষিঋণ বিতরণের পরিমাণ ছিল ১৫ হাজার ৯৭৮ কোটি টাকা। এছাড়া গেল অর্থবছরে আদায়যোগ্য ঋণের ৭০ শতাংশ আদায় হয়, যা আগের অর্থবছরের তুলনায় বেশি। অন্যদিকে, গেল অর্থবছরে আমদানি বিকল্প ফসল চাষে ৪ শতাংশ রেয়াতি সুদ হারে সাড়ে ৯৫ কোটি টাকা ঋণ প্রদানের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ৮২ শতাংশ অর্জিত হয়।