রাষ্ট্রপতির অনুমতি ছাড়া কোন সরকারি কর্মচারী বিদেশি নাগরিককে বিয়ে করলে তাকে চাকরিচ্যুত করা হবে। এমনকি বিয়ের প্রতিশ্রুতিও দিতে পারবেন না। সোমবার রাতে জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম দশম জাতীয় সংসদের অষ্টম অধিবেশনে গণকর্মচারী (বিদেশি নাগরিকের সাথে বিবাহ) বিল, ২০১৫ পাসের জন্য উত্থাপন করেন । যদিও বিলটিতে জাতীয় পার্টির ফখরুল ইমাম, সেলিম উদ্দিন, স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য রুস্তম আলী ফরাজী ও হাজী মো. সেলিমসহ বেশ কয়েকজন সদস্য জনমত যাচাইয়ের প্রস্তাব তুলে ধরে যুক্তি উপস্থাপন করেন। পরে জনমত যাচাইয়ের প্রস্তাব কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়।
ফখরুল ইমাম অভিযোগ করেন, এতে ব্যক্তিস্বাধীনতা হরণ ও সংবিধান লঙ্ঘন হচ্ছে। এর জবাবে মন্ত্রী বলেন, অধ্যাদেশটি আগেই ছিল। এখন শুধু বিল আকারে পাস করা হলো। রাত ৮টা ৪০ মিনিটে বিলটি পাস করার প্রস্তাব করার জন্য স্পিকারের অনুমতি চান মন্ত্রী। পরে স্পিকার বিলটি পাসের প্রস্তাব কণ্ঠভোটে দিলে তা সর্বসম্মতিক্রমে পাস হয়। এর আগে গত ৯ সেপ্টেম্বর বিলটি সংসদে উত্থাপন করা হয়।
গণকর্মচারী (বিদেশী নাগরিকের সাথে বিবাহ) বিল হলে, গণকর্মচারী (বিদেশী নাগরিকের সাথে বিবাহ) আইন, ২০১৫ নামে অবহিত হবে। প্রস্তাবিত এই বিলে বলা হয়েছে, অন্য কোনো আইনে যা-ই থাকুক না কেন, কোনো গণকর্মচারী পূর্ব অনুমতি ছাড়া কোনো বিদেশি নাগরিককে বিয়ে করলে তাকে বিধি লংঘনের দায়ে চাকুরিচ্যুত করা যাবে। অনুমতিপ্রাপ্ত না হলে কোনো গণকর্মচারী বিদেশি নাগরিককে বিয়ে করতে বা বিয়ে করার আশ্বাস দিতে পারবেন না। এজন্য প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের বিয়ে করার বা এ বিষয়ে কাউকে প্রতিশ্রুতি দেয়ার আগে রাষ্ট্রপতি বরাবরে অনুমতি চেয়ে আবেদন করতে হবে। অনুমতি পাওয়ার পরই কেবল বিয়ে করা যাবে।
বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্বলিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দ্য পাবলিক সার্ভেন্টস ( ম্যারিজ উইথ ফরেইন ন্যাশনালস) অর্ডিন্যান্স ১৯৭৬ সালের ১০ জুলাই জারি হয়। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট থেকে ১৯৭৯ সালের ৯ এপ্রিল পর্যন্ত সময়ের মধ্যে জারিকৃত কতিপয় অধ্যাদেশ কার্যকরণ (বিশেষ বিধান) অধ্যাদেশ ২০১৩ দ্বারা কার্যকর রাখা হয়েছে। অধ্যাদেশগুলো বাংলায় প্রণয়নের সিদ্ধান্ত হয়। সে অনুযায়ী সংশ্লিষ্টদের মতামত গ্রহণ করে গণকর্মচারী (বিদেশী নাগরিকের সাথে বিবাহ) আইন, ২০১৫-এর বিল প্রণয়ন করা হয়।