ঢাকা ০১:৫১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৪ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
ভারতে ১৩ বাংলাদেশি নাগরিক গ্রেপ্তার কবরের পাশে দিন-রাত বসে থাকি, ছেলে ফিরে আসে না সংস্কার না করলে শহীদদের রক্তের সঙ্গে অন্যায় করা হবে : উপদেষ্টা সাখাওয়াত কাকে ‘ননসেন্স’ বললেন বুবলী ভোটার হওয়ার ন্যূনতম বয়সসীমা প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যে আপত্তি বিএনপি মহাসচিবের সচিবালয়ে প্রবেশে অস্থায়ী পাসের ব্যাপারে বিশেষ সেল গঠন জর্জিনাকে ‘স্ত্রী’ সম্বোধন, তবে কি বিয়েটা সেরেই ফেলেছেন রোনালদো ৩১ ডিসেম্বর আসছে জুলাই বিপ্লবের ঘোষণা মহাখালীতে আবাসিক ভবনে আগুন, নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ২ ইউনিট ভোটার হওয়ার ন্যূনতম বয়সসীমা প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যে আপত্তি বিএনপি মহাসচিবের

গোলটেবিল আলোচনায় বক্তারা সীমাবদ্ধতার বেড়াজালে আটকা নারীর স্বাধীনতা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০২:৪৬:০১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০১৯
  • ১৯৮ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বর্তমান সমাজব্যবস্থায় নারীর অংশগ্রহণ লক্ষণীয়। এত কিছুর পরও অনেক সীমাবদ্ধতার বেড়াজালে আটকে আছে এ দেশের নারীর স্বাধীনতা। নারী নির্যাতনের মাত্রা এখনও এত বেশি যে, আমরা এ নিয়ে আতঙ্কগ্রস্ত।

বৃহস্পতিবার স কাল ১০টায় দৈনিক যুগান্তরে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের আয়োজনে ‘বেইজিং + ২৫ : নারী মানবাধিকার অর্জন, চ্যালেঞ্জ এবং করণীয়’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এসব কথা বলেন।

১৯৯৫ সালে চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে জাতিসংঘ আয়োজিত ৪র্থ বিশ্ব নারী সম্মেলনের ২৫ বছরপূর্তি হবে ২০২০ সালে। এ সম্মেলনে গৃহীত বেইজিং ঘোষণা ও কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন, পর্যালোচনার মাধ্যমে বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে অগ্রগতি, চ্যালেঞ্জ এবং চ্যালেঞ্জ উত্তরণে করণীয় নির্ধারণের লক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে এ বৈঠকে আলোচনা হয়।

যুগান্তরের প্রধান প্রতিবেদক মাসুদ করিমের সঞ্চালনায় বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাখী দাশ পুরকায়স্থ।

স্বাগত বক্তব্য রাখেন দৈনিক যুগান্তরের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি সাইফুল আলম। তিনি বলেন, বর্তমান সমাজব্যবস্থা এতটাই এগিয়েছে যেখানে নারীর অংশগ্রহণ লক্ষণীয়, যা ২০ বছর আগে ভাবাই যেত না। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে নারীর ক্ষমতায়নে বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। আজকে নারীরা পুরুষের সঙ্গে সমানতালে চলছে। আত্মপরিচয়ের ক্ষেত্রে এখন আমরা পিতার নামের পাশে মায়ের নাম লিখছি। মায়ের পরিচয়ে নিজেকে পরিচিত করতে পারছি। নারী ও শিশু নির্যাতন আইন- নারী ট্রাইব্যুনাল গঠিত হয়েছে। পেশাভিত্তিক বিধিবিধানের যে সীমাবদ্ধতা ছিল, সেটিও কোনো কোনো ক্ষেত্রে অতিক্রম করেছি আমরা।

তিনি বলেন, আমরা বিশ্বাস করি এই সরকার নারীবান্ধব সরকার। এত কিছুর পরও অনেক সীমাবদ্ধতার বেড়াজালে আটকে আছে এ দেশের নারীর স্বাধীনতা। নারী নির্যাতনের মাত্রা এখনও এত বেশি যে, আমরা এ নিয়ে আতঙ্কগ্রস্ত। বাল্যবিবাহ ও ধর্ষণের ঘটনা পত্রিকার পাতায় এখনও অনেক দেখা যাচ্ছে। আমরা মনে করি, এ দেশে নারীর অগ্রগতি এবং নারী অধিকার প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের কার্যকরী ভূমিকা রয়েছে। তাদের অবদান স্বীকৃত ও স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। এই সংগঠনকে যুগান্তরের পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা জানাই।

আলোচনায় অংশ নিয়ে বাংলাদেশ মহিলা ঐক্য পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সীমা মোসলেম বলেন, ‘বেইজিং কর্মপরিকল্পনার ঘোষণার ২৫ বছরপূর্তিতে এর মূল্যায়ন ও পর্যালোচনার যে সভা আগামী বছর নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত হবে, তার আগে আমরা বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সেই কর্মপরিকল্পনার একটি মূল্যায়ন পর্যালোচনা করছি এ বৈঠকে। বাংলাদেশে নারী অধিকার লঙ্ঘনগুলো চিহ্নিত করে তা উত্তরণের বিষয় আলোচনা করে ভবিষ্যতে আমাদের কর্মপরিকল্পনায় সেসব বিষয় যুক্ত করতে এ বৈঠক আমাদের সাহায্য করবে।

তিনি বলেন, দীর্ঘ আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ‘৭০-এর দশকে এসে নারী অধিকার প্রতিষ্ঠা, নারী সমতা ও নারী ক্ষমতায়নের বিষয়টি বিশেষভাবে দানা বাঁধে। তারই ভিত্তিতে বেইজিংয়ে যে আন্তর্জাতিক ৪র্থ বিশ্ব নারী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হলো, তা নারী অধিকার প্রতিষ্ঠায় মাইলফলক হিসেবে জাতিসংঘের আওতাভুক্ত নারী মর্যাদাবিষয়ক কমিশন (সিএসডব্লিউ) বৈশ্বিকভাবে নারী অধিকার প্রতিষ্ঠায় অসমতা, বৈষম্য চিহ্নিত করে তা বাস্তবায়নে চাপ সৃষ্টি করে কাজ করে যাচ্ছে। তবে বিশ্ব নারী সম্মেলনে সাংবিধানিক ও প্রাতিষ্ঠানিকভাবে নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠা করার বিষয়টি উঠে আসে। এ সম্মেলনের মাধ্যমে রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে নারীর সিদ্ধান্ত ও ভূমিকা চিহ্নিত করা হয়।

বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের নির্বাহী পরিচালক রোকেয়া কবীর বলেন, ‘নারী অধিকার প্রতিষ্ঠায় বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশ অনেক অগ্রগতি লক্ষ্য করা গেলেও প্রতিবন্ধকতার শেষ নেই। বিশেষ করে সমাজ ও রাষ্ট্রে পুরুষতান্ত্রিক মনোভাব-এর জন্য দায়ী।’

অনুষ্ঠানে আরও বক্তৃতা রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজের অধ্যাপক অনিয়া হক, জেন্ডার জাস্টিস অ্যান্ড ডাইভারসিটি কর্মসূচির হাসনে আরা বেগম, মহিলা ঐক্য পরিষদের সভাপতি সুপ্রিয় ভট্টাচার্য, বাংলাদেশ আদিবাসী নারী নেটওয়ার্কের সমন্বয়কারী ফাল্গুনী ত্রিপুরা, প্রতিবন্ধী নারীদের প্রতিনিধি নাজমা আর বেগম পপি, বনানী বিশ্বাস প্রমুখ।

বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন যুগান্তরের ফিচার সম্পাদক রফিকুল হক দাদুভাই, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রিসার্চ সোসাইটির মোহাম্মদ ইউনুস, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং সোসাইটির সাদ মোহাম্মদ উল্লা ও যুগান্তরের সুরঞ্জনা সম্পাদক রীতা ভৌমিক প্রমুখ।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

ভারতে ১৩ বাংলাদেশি নাগরিক গ্রেপ্তার

গোলটেবিল আলোচনায় বক্তারা সীমাবদ্ধতার বেড়াজালে আটকা নারীর স্বাধীনতা

আপডেট টাইম : ০২:৪৬:০১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০১৯

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বর্তমান সমাজব্যবস্থায় নারীর অংশগ্রহণ লক্ষণীয়। এত কিছুর পরও অনেক সীমাবদ্ধতার বেড়াজালে আটকে আছে এ দেশের নারীর স্বাধীনতা। নারী নির্যাতনের মাত্রা এখনও এত বেশি যে, আমরা এ নিয়ে আতঙ্কগ্রস্ত।

বৃহস্পতিবার স কাল ১০টায় দৈনিক যুগান্তরে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের আয়োজনে ‘বেইজিং + ২৫ : নারী মানবাধিকার অর্জন, চ্যালেঞ্জ এবং করণীয়’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এসব কথা বলেন।

১৯৯৫ সালে চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে জাতিসংঘ আয়োজিত ৪র্থ বিশ্ব নারী সম্মেলনের ২৫ বছরপূর্তি হবে ২০২০ সালে। এ সম্মেলনে গৃহীত বেইজিং ঘোষণা ও কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন, পর্যালোচনার মাধ্যমে বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে অগ্রগতি, চ্যালেঞ্জ এবং চ্যালেঞ্জ উত্তরণে করণীয় নির্ধারণের লক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে এ বৈঠকে আলোচনা হয়।

যুগান্তরের প্রধান প্রতিবেদক মাসুদ করিমের সঞ্চালনায় বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাখী দাশ পুরকায়স্থ।

স্বাগত বক্তব্য রাখেন দৈনিক যুগান্তরের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি সাইফুল আলম। তিনি বলেন, বর্তমান সমাজব্যবস্থা এতটাই এগিয়েছে যেখানে নারীর অংশগ্রহণ লক্ষণীয়, যা ২০ বছর আগে ভাবাই যেত না। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে নারীর ক্ষমতায়নে বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। আজকে নারীরা পুরুষের সঙ্গে সমানতালে চলছে। আত্মপরিচয়ের ক্ষেত্রে এখন আমরা পিতার নামের পাশে মায়ের নাম লিখছি। মায়ের পরিচয়ে নিজেকে পরিচিত করতে পারছি। নারী ও শিশু নির্যাতন আইন- নারী ট্রাইব্যুনাল গঠিত হয়েছে। পেশাভিত্তিক বিধিবিধানের যে সীমাবদ্ধতা ছিল, সেটিও কোনো কোনো ক্ষেত্রে অতিক্রম করেছি আমরা।

তিনি বলেন, আমরা বিশ্বাস করি এই সরকার নারীবান্ধব সরকার। এত কিছুর পরও অনেক সীমাবদ্ধতার বেড়াজালে আটকে আছে এ দেশের নারীর স্বাধীনতা। নারী নির্যাতনের মাত্রা এখনও এত বেশি যে, আমরা এ নিয়ে আতঙ্কগ্রস্ত। বাল্যবিবাহ ও ধর্ষণের ঘটনা পত্রিকার পাতায় এখনও অনেক দেখা যাচ্ছে। আমরা মনে করি, এ দেশে নারীর অগ্রগতি এবং নারী অধিকার প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের কার্যকরী ভূমিকা রয়েছে। তাদের অবদান স্বীকৃত ও স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। এই সংগঠনকে যুগান্তরের পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা জানাই।

আলোচনায় অংশ নিয়ে বাংলাদেশ মহিলা ঐক্য পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সীমা মোসলেম বলেন, ‘বেইজিং কর্মপরিকল্পনার ঘোষণার ২৫ বছরপূর্তিতে এর মূল্যায়ন ও পর্যালোচনার যে সভা আগামী বছর নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত হবে, তার আগে আমরা বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সেই কর্মপরিকল্পনার একটি মূল্যায়ন পর্যালোচনা করছি এ বৈঠকে। বাংলাদেশে নারী অধিকার লঙ্ঘনগুলো চিহ্নিত করে তা উত্তরণের বিষয় আলোচনা করে ভবিষ্যতে আমাদের কর্মপরিকল্পনায় সেসব বিষয় যুক্ত করতে এ বৈঠক আমাদের সাহায্য করবে।

তিনি বলেন, দীর্ঘ আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ‘৭০-এর দশকে এসে নারী অধিকার প্রতিষ্ঠা, নারী সমতা ও নারী ক্ষমতায়নের বিষয়টি বিশেষভাবে দানা বাঁধে। তারই ভিত্তিতে বেইজিংয়ে যে আন্তর্জাতিক ৪র্থ বিশ্ব নারী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হলো, তা নারী অধিকার প্রতিষ্ঠায় মাইলফলক হিসেবে জাতিসংঘের আওতাভুক্ত নারী মর্যাদাবিষয়ক কমিশন (সিএসডব্লিউ) বৈশ্বিকভাবে নারী অধিকার প্রতিষ্ঠায় অসমতা, বৈষম্য চিহ্নিত করে তা বাস্তবায়নে চাপ সৃষ্টি করে কাজ করে যাচ্ছে। তবে বিশ্ব নারী সম্মেলনে সাংবিধানিক ও প্রাতিষ্ঠানিকভাবে নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠা করার বিষয়টি উঠে আসে। এ সম্মেলনের মাধ্যমে রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে নারীর সিদ্ধান্ত ও ভূমিকা চিহ্নিত করা হয়।

বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের নির্বাহী পরিচালক রোকেয়া কবীর বলেন, ‘নারী অধিকার প্রতিষ্ঠায় বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশ অনেক অগ্রগতি লক্ষ্য করা গেলেও প্রতিবন্ধকতার শেষ নেই। বিশেষ করে সমাজ ও রাষ্ট্রে পুরুষতান্ত্রিক মনোভাব-এর জন্য দায়ী।’

অনুষ্ঠানে আরও বক্তৃতা রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজের অধ্যাপক অনিয়া হক, জেন্ডার জাস্টিস অ্যান্ড ডাইভারসিটি কর্মসূচির হাসনে আরা বেগম, মহিলা ঐক্য পরিষদের সভাপতি সুপ্রিয় ভট্টাচার্য, বাংলাদেশ আদিবাসী নারী নেটওয়ার্কের সমন্বয়কারী ফাল্গুনী ত্রিপুরা, প্রতিবন্ধী নারীদের প্রতিনিধি নাজমা আর বেগম পপি, বনানী বিশ্বাস প্রমুখ।

বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন যুগান্তরের ফিচার সম্পাদক রফিকুল হক দাদুভাই, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রিসার্চ সোসাইটির মোহাম্মদ ইউনুস, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং সোসাইটির সাদ মোহাম্মদ উল্লা ও যুগান্তরের সুরঞ্জনা সম্পাদক রীতা ভৌমিক প্রমুখ।