হাওর বার্তা ডেস্কঃ গ্যাস, বিদ্যুৎসহ অবকাঠামো খাতে বিদ্যমান বিভিন্ন সমস্যার টেকসই সমাধান না হলে দেশের উন্নয়ন ব্যাহত হবে, এটি বহুল আলোচিত। দেশের সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিতকরণে বিদ্যুৎ খাতে ব্যাপক সাফল্য অর্জন করতে চায় সরকার। সংশ্লিষ্ট সবাই দায়িত্ব সচেতন না হলে সরকারের এ লক্ষ্য অর্জনে নানা অনিশ্চয়তা দেখা দিতে পারে।
নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ দেয়ার নামে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি) জনগণের সঙ্গে কী ধরনের প্রতারণা করছে, সোমবার যুগান্তরে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে তা তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি দেশের অর্থনীতির অন্যতম প্রধান চালিকাশক্তি শিল্প-কলকারখানাতে ঠিকমতো বিদ্যুৎ দিতে পারছে না।
বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে দেশের প্রায় সব এলাকার শিল্পপ্রতিষ্ঠানের উৎপাদন চরমভাবে ব্যাহত হওয়ার বিষয়টি উদ্বেগজনক। এ সংকটের কারণে বহু শিল্পপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। অনেক প্রতিষ্ঠান ব্যাংক ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে উৎপাদনের লক্ষ্য অর্জন করতে পারছে না। এ অবস্থা অব্যাহত থাকলে দেশের শিল্প খাতে যে বিপর্যয়কর অবস্থা তৈরি হবে তা সহজেই অনুমান করা যায়।
বিদ্যুতের সঞ্চালন-বিতরণ লাইনের সমস্যা দীর্ঘদিনের। আরইবি কেন সেগুলো মেরামতের উদ্যোগ নিচ্ছে না, এটি এক প্রশ্ন। বিদ্যমান অন্যান্য সমস্যার সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ না নিলেও নতুন সংযোগের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানটির আগ্রহের বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যে অনেক প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
আধুনিক মেশিনারিজগুলো চালু অবস্থায় বিদ্যুৎ বিভ্রাটে বড় ধরনের ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। এ পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছেন অনেক শিল্পপ্রতিষ্ঠানের মালিক।
জানা গেছে, শুধু গ্রাহকদেরই নয় আরইবি বিদ্যুতে সাফল্য নিয়ে খোদ প্রধানমন্ত্রীকেও ভুল তথ্য দিচ্ছে। এতে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আরইবির কাছ থেকে বিদ্যুৎ নিয়ে শিল্পকারখানার মালিকরাও প্রতিনিয়ত প্রতারিত হচ্ছেন। একদিকে ব্যাংকের উচ্চ সুদ, অপরদিকে লোডশেডিংসহ নানা যন্ত্রণায় তাদের নাভিশ্বাস অবস্থা।
তারা বিদেশি ক্রেতাদের কাছে সময়মতো পণ্য সরবরাহ করতে পারছেন না; অন্যদিকে বিদ্যুৎ সংকটের কারণে অনেক শিল্পকারখানায় উৎপাদিত পণ্যের মান ঠিক থাকছে না। এ অবস্থায় হুমকির মুখে রয়েছে দেশের শিল্প খাত। রাজধানীর বাইরে শিল্প জোন হিসেবে পরিচিত হবিগঞ্জে পল্লী বিদ্যুতের পরিস্থিতি উদ্বেগজনক।
দিনে দু’-তিনবার বিদ্যুৎ বিভ্রাট যেন নিয়মে পরিণত হয়েছে। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় সংকট আরও তীব্র আকার ধারণ করে। এ থেকেই রাজধানীর বাইরের বিদ্যুৎ পরিস্থিতির চিত্রটি কিছুটা অনুমান করা যায়।
যেখানে ১ মিনিটের জন্য বিদ্যুৎ বিভ্রাটেই পণ্যের মান নেমে যায়, সেখানে ঘন ঘন বিদ্যুৎ বিভ্রাটে উদ্যোক্তারা কতটা ক্ষতির মুখে পড়ছেন, তা সহজেই অনুমান কার যায়। আরইবির কর্মকর্তাদের অদক্ষতা, অবহেলা, অসহযোগিতা ও দুর্নীতি খতিয়ে দেখা দরকার। প্রতিষ্ঠানটিকে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে।