ঢাকা ০৯:৪৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

তৃষ্ণা মেটাল ফোকফেস্ট

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:১০:৩২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০১৯
  • ১৮২ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ উলস্নাস দিয়ে শুরু, উলস্নাসেই শেষ। দেখতে দেখতে শেষ হয়ে গেল তিনদিনব্যাপী ‘ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ফোক ফেস্ট ২০১৯’। কিন্তু শেষ হলেও এখনও যেন রেশ কাটেনি সংগীতপিপাসুদের। হেমন্তের ঠান্ডা পরশে সুরের মূর্ছনায় তিন রাত জমে উঠেছিল রাজধানীর আর্মি স্টেডিয়াম। বিদায়লগ্নে পৃথিবীর তিন প্রান্ত মিলেছিল একসঙ্গে। ভাষাগত দূরত্ব ঘুচে এক হয়েছিল লোকগানের সুরে। শেষ রজনীতেও মেতে উঠেছিল আর্মি স্টেডিয়াম। উপস্থিত হাজার হাজার দর্শক নেচে-গেয়ে স্মরণীয় করে রাখলেন ঢাকা আন্তর্জাতিক লোকসংগীত উৎসবের পঞ্চম আসরের শেষ মুহূর্ত। তিনদিনের লোকসংগীতের এই উৎসবে ব্যস্ত নগরীর মানুষ যেন খুঁজে পেয়েছিল নিজের অস্তিত্বকে। দর্শকের উচ্ছ্বাসে আপস্নুত আয়োজকরাও জানিয়ে রাখলেন, আসছে বছর আবার হবে। বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও রাশিয়ার শিল্পীদের অনবদ্য পরিবেশনার মধ্য দিয়ে গতকাল শনিবার ভাঙল লোকগানের সুরের আসর।
জমজমাট এ উৎসবে যেমন ছিল পালাগানের লড়াই, তেমনি ছিল সুফি, রক লোকগানও। গত বৃহস্পতিবার থেকে আর্মি স্টেডিয়ামে বসেছিল এ লোকগানের উৎসব। গত তিন রাতে বাংলাদেশসহ বিশ্বের ৬টি দেশের প্রায় ২ শতাধিক শিল্পীর পরিবেশনায় মুখর ছিল অনুষ্ঠান প্রাঙ্গণ। সন্ধ্যা ৬টা থেকে মধ্যরাত অবধি এ আয়োজনে শ্রোতারা লোকগানের সুরে যেমন করেছেন আত্মানুন্ধান, তেমনি নেচে-গেয়ে প্রিয় বান্ধবের সঙ্গে কেটেছে মধুর সময়। এই আয়োজনে বাংলাদেশ থেকে সংগীত পরিবেশন করেন শাহ আলম সরকার, মালেক কাওয়াল, কাজল দেওয়ান, ফকির শাহাবুদ্দিন, চন্দনা মজুমদার, বাউলিয়ানা’র কামরুজ্জামান রাক ও শফিকুল ইসলাম, প্রেমা ও ভাবনা নৃত্যদল। বিদেশিদের মধ্যে ভারতের দালের মেহেন্দি, পাকিস্তানের জুনন ও হিনা নাসরুলস্নাহ, রাশিয়ার সাত্তুমা, জর্জিয়ার শেভেনেবুরেবি এবং মালি থেকে হাবিব কইটে অ্যান্ড হামাদ। উৎসবের প্রথম সন্ধ্যায় সর্বপ্রথম মঞ্চে ওঠে প্রেমা ও ভাবনা নৃত্যদল, তাদের লোকনৃত্য পরিবেশনা নিয়ে সুবীর নন্দী, বারী সিদ্দিকী, শাহনাজ রহমতউলস্নাহ, আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল, ফকির আব্দুর রব শাহ এবং আইয়ুব বাচ্চু। বাংলা গানের এই ছয় মহারথীর উপর নির্মিত একটি ভিডিওচিত্র দেখানো হয় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে। বাংলা গানের এই কিংবদন্তিদের উৎসর্গ করেই শুরু হয় ‘ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ফোক ফেস্ট ২০১৯’। উৎসবের উদ্বোধন করেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। প্রথম আসরে গান পরিবেশন করেন বাংলাদেশের প্রখ্যাত বাউলশিল্পী শাহ আলম সরকার, ভারতের দালের মেহেন্দি ও জর্জিয়ার শেভেনেবুরেবি। দ্বিতীয় দিন সুরের মূর্ছনায় দর্শক মাতান বাংলাদেশের মালেক কাওয়াল, ফকির শাহাবুদ্দিন, ম্যাজিক বাউলিয়ানা’র কামরুজ্জামান রাব্বি ও শফিকুল ইসলাম, পাকিস্তানের হিনা নাসরুলস্নাহ, এবং মালির হাবিব কইটে অ্যান্ড বামাদা।
গতকাল উৎসবের সমাপনী দিনে ছিল সংক্ষিপ্ত অনুষ্ঠান। প্রথম পরিবেশনা নিয়ে মঞ্চে হাজির হন বাংলাদেশের প্রখ্যাত দুই লোকশিল্পী কাজল দেওয়ান, চন্দনা মজুমদার। বাংলাদেশি শিল্পীদের পরিবেশনার পর মঞ্চে আসেন পাকিস্তানের জুনুন এবং রাশিয়ার সাত্তুমা।
প্রতিবারের মতো এবারো দর্শকরা বিনামূল্যে শুধুমাত্র অনলাইন রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানটি সরাসরি উপভোগ করার সুযোগ পান। সরাসরি অনুষ্ঠানটির প্রচার করেছে মাছরাঙা টেলিভিশন। এছাড়াও অনুষ্ঠানটির লাইভ শোনা গেছে রেডিও দিনরাত-এ। ‘ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ফোকফেস্ট ২০১৯’-এর টাইটেল স্পন্সর ছিল মেরিল, পাওয়ার্ড বাই ঢাকা ব্যাংক লিমিটেড, মেডিকেল পার্টনার স্কয়ার হসপিটালস্‌ লিমিটেড, পিআর পার্টনার মিডিয়াকম ও ব্রডকাস্ট পার্টনার মাছরাঙা টেলিভিশন। ২০১৫ সাল থেকে সান ফাউন্ডেশন এই উৎসবের আয়োজন করে আসছেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

তৃষ্ণা মেটাল ফোকফেস্ট

আপডেট টাইম : ১২:১০:৩২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০১৯

হাওর বার্তা ডেস্কঃ উলস্নাস দিয়ে শুরু, উলস্নাসেই শেষ। দেখতে দেখতে শেষ হয়ে গেল তিনদিনব্যাপী ‘ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ফোক ফেস্ট ২০১৯’। কিন্তু শেষ হলেও এখনও যেন রেশ কাটেনি সংগীতপিপাসুদের। হেমন্তের ঠান্ডা পরশে সুরের মূর্ছনায় তিন রাত জমে উঠেছিল রাজধানীর আর্মি স্টেডিয়াম। বিদায়লগ্নে পৃথিবীর তিন প্রান্ত মিলেছিল একসঙ্গে। ভাষাগত দূরত্ব ঘুচে এক হয়েছিল লোকগানের সুরে। শেষ রজনীতেও মেতে উঠেছিল আর্মি স্টেডিয়াম। উপস্থিত হাজার হাজার দর্শক নেচে-গেয়ে স্মরণীয় করে রাখলেন ঢাকা আন্তর্জাতিক লোকসংগীত উৎসবের পঞ্চম আসরের শেষ মুহূর্ত। তিনদিনের লোকসংগীতের এই উৎসবে ব্যস্ত নগরীর মানুষ যেন খুঁজে পেয়েছিল নিজের অস্তিত্বকে। দর্শকের উচ্ছ্বাসে আপস্নুত আয়োজকরাও জানিয়ে রাখলেন, আসছে বছর আবার হবে। বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও রাশিয়ার শিল্পীদের অনবদ্য পরিবেশনার মধ্য দিয়ে গতকাল শনিবার ভাঙল লোকগানের সুরের আসর।
জমজমাট এ উৎসবে যেমন ছিল পালাগানের লড়াই, তেমনি ছিল সুফি, রক লোকগানও। গত বৃহস্পতিবার থেকে আর্মি স্টেডিয়ামে বসেছিল এ লোকগানের উৎসব। গত তিন রাতে বাংলাদেশসহ বিশ্বের ৬টি দেশের প্রায় ২ শতাধিক শিল্পীর পরিবেশনায় মুখর ছিল অনুষ্ঠান প্রাঙ্গণ। সন্ধ্যা ৬টা থেকে মধ্যরাত অবধি এ আয়োজনে শ্রোতারা লোকগানের সুরে যেমন করেছেন আত্মানুন্ধান, তেমনি নেচে-গেয়ে প্রিয় বান্ধবের সঙ্গে কেটেছে মধুর সময়। এই আয়োজনে বাংলাদেশ থেকে সংগীত পরিবেশন করেন শাহ আলম সরকার, মালেক কাওয়াল, কাজল দেওয়ান, ফকির শাহাবুদ্দিন, চন্দনা মজুমদার, বাউলিয়ানা’র কামরুজ্জামান রাক ও শফিকুল ইসলাম, প্রেমা ও ভাবনা নৃত্যদল। বিদেশিদের মধ্যে ভারতের দালের মেহেন্দি, পাকিস্তানের জুনন ও হিনা নাসরুলস্নাহ, রাশিয়ার সাত্তুমা, জর্জিয়ার শেভেনেবুরেবি এবং মালি থেকে হাবিব কইটে অ্যান্ড হামাদ। উৎসবের প্রথম সন্ধ্যায় সর্বপ্রথম মঞ্চে ওঠে প্রেমা ও ভাবনা নৃত্যদল, তাদের লোকনৃত্য পরিবেশনা নিয়ে সুবীর নন্দী, বারী সিদ্দিকী, শাহনাজ রহমতউলস্নাহ, আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল, ফকির আব্দুর রব শাহ এবং আইয়ুব বাচ্চু। বাংলা গানের এই ছয় মহারথীর উপর নির্মিত একটি ভিডিওচিত্র দেখানো হয় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে। বাংলা গানের এই কিংবদন্তিদের উৎসর্গ করেই শুরু হয় ‘ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ফোক ফেস্ট ২০১৯’। উৎসবের উদ্বোধন করেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। প্রথম আসরে গান পরিবেশন করেন বাংলাদেশের প্রখ্যাত বাউলশিল্পী শাহ আলম সরকার, ভারতের দালের মেহেন্দি ও জর্জিয়ার শেভেনেবুরেবি। দ্বিতীয় দিন সুরের মূর্ছনায় দর্শক মাতান বাংলাদেশের মালেক কাওয়াল, ফকির শাহাবুদ্দিন, ম্যাজিক বাউলিয়ানা’র কামরুজ্জামান রাব্বি ও শফিকুল ইসলাম, পাকিস্তানের হিনা নাসরুলস্নাহ, এবং মালির হাবিব কইটে অ্যান্ড বামাদা।
গতকাল উৎসবের সমাপনী দিনে ছিল সংক্ষিপ্ত অনুষ্ঠান। প্রথম পরিবেশনা নিয়ে মঞ্চে হাজির হন বাংলাদেশের প্রখ্যাত দুই লোকশিল্পী কাজল দেওয়ান, চন্দনা মজুমদার। বাংলাদেশি শিল্পীদের পরিবেশনার পর মঞ্চে আসেন পাকিস্তানের জুনুন এবং রাশিয়ার সাত্তুমা।
প্রতিবারের মতো এবারো দর্শকরা বিনামূল্যে শুধুমাত্র অনলাইন রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানটি সরাসরি উপভোগ করার সুযোগ পান। সরাসরি অনুষ্ঠানটির প্রচার করেছে মাছরাঙা টেলিভিশন। এছাড়াও অনুষ্ঠানটির লাইভ শোনা গেছে রেডিও দিনরাত-এ। ‘ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ফোকফেস্ট ২০১৯’-এর টাইটেল স্পন্সর ছিল মেরিল, পাওয়ার্ড বাই ঢাকা ব্যাংক লিমিটেড, মেডিকেল পার্টনার স্কয়ার হসপিটালস্‌ লিমিটেড, পিআর পার্টনার মিডিয়াকম ও ব্রডকাস্ট পার্টনার মাছরাঙা টেলিভিশন। ২০১৫ সাল থেকে সান ফাউন্ডেশন এই উৎসবের আয়োজন করে আসছেন।