ঢাকা ১০:১৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

তাই বলে তিন দিনেই শেষ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:৫০:৩৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০১৯
  • ১৯২ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ টেস্টে দর্শক হয় না! তাই ভারতের তরুণ অধিনায়ক বিরাট কোহলি প্রস্তাব করে বসেছেন ভারতের মাত্র পাঁচটি অঞ্চলে টেস্ট  ক্রিকেট আয়োজনের। সেখানে নেই ইন্দোরের নাম! এটি যেন কোনোভাবেই মানতে পারেননি ইন্দোরের ক্রিকেটপাগল মানুষ। প্রায় প্রতিদিনই ১০ থেকে ১৫ হাজার দর্শক মাঠে হাজির। কিন্তু তাদের দারুণ হতাশ করেছে বাংলাদেশ দল। ভারতের সঙ্গে মাত্র তিন দিনেই হেরে গেছে বাজেভাবে। ন্যূনতম প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়তে ব্যর্থ টাইগাররা। হেরেছে ইনিংস ও ১৩০ রানের বড় ব্যবধানে। ভারতকে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নামতেই হয়নি।

অথচ অধিনায়ক মুমিনুল হক সৌরভ টসে জিতে ভরসা রেখেছিলেন তার ব্যাটসম্যানদের ওপর। প্রথম ইনিংসে ১৫০ রানে অলআউট! জবাবে ৪৯৩ রানে ৪ উইকেট হাতে রেখেই তৃতীয় দিন সকালে ইনিংস ঘোষণা করে দিল ভারত। আর ২১৩ রানে থামলো বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংস।
টাইগারদের এমন পারফরম্যান্স মেনে নিতে পারছে না ভারতীয়রাও। বিশেষ করে দর্শকরা। মাঠ ছেড়ে বের হতে হতে সবারই একই প্রশ্ন- ‘তাই বলে তিন দিনেই শেষ হয়ে গেলো!’ তিন দিনে ম্যাচ শেষ হতে দেখে অবাক ভারতের ব্যাটিং কোচ বিক্রম রাঠোরও। চলতি বছরই নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশ দুটি টেস্ট ম্যাচই হেরেছিল ইনিংস ব্যবধানে। তবে ভারতের বিপক্ষে ২০০৭ এর পর ইনিংস ব্যবধানে হার বলে দিচ্ছে নিজেদের পরিচিত কন্ডিশনে টাইগারদের টেস্ট ক্রিকেটের জন্য কতটা কঠিন সময় চলছে। বিশেষ করে দলের ব্যাটিং সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন খুব সহজেই তোলা যায়। প্রথম ইনিংসে মুশফিক ৪৩ আর মুমিনুল ৩৭ রান। কিন্তু যাদের কাছে আশা ছিল সেই সাদমান ইসলাম, ইমরুল কায়েস, লিটন দাস, মোহাম্মদ মিঠুনরা পারেননি ব্যর্থতার বৃত্ত থেকে বের হতে। দ্বিতীয় ইনিংসে শুধুই আশা ছিল যে ভুল থেকে শিক্ষা নিবেন তারা। কিন্তু একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি।
টাইগারদের দুই ওপেনার ফিরলেন সমান সমান ৬ রান করে। যেন প্রথম ইনিংসের স্কোর কার্ডটা অনুসরণ করলেন তারা। এদিন ব্যাট হাতে অধিনায়কও ব্যর্থ। মাত্র ৭ রান করে ফিরে গেলেন সাজঘরে। ব্যক্তিগত ১২ রানে হাল ছাড়লেন মিঠুন । মধ্যাহ্নবিরতির আগেই ৪৪ রানে ৪ উইকেট নেই টাইগারদের।
তবে লজ্জা বাঁচাতে ব্যাটে দায়িত্ব তুলে নিলেন মুশফিকুর রহীম। কিছুটা সময় তাকে সঙ্গ দিলেন আরেক অভিজ্ঞ মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। কিন্তু ১৫ রানের বেশি অবদান রাখতে পারলেন না। ক্রিজে এসে দারুণ শুরু করলেন লিটন। কিন্তু ৩৫ রান করে ইনিংসটি শেষ হলো বাজেভাবে। ভাঙলো দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৬৩ রানের জুটি। এরপর মেহেদী হাসান মিরাজের সঙ্গে ফের ৫৯ রানের জুটি বাঁধলেন দলের সাবেক অধিনায়ক মুশফিক। কিন্তু ৩২ রান করে মিরাজ আউট হলে ইনিংস হারের শুধু অপেক্ষাই থাকলো। তাইজুল ইসলাম এলেন আর গেলেন। তাই দেখে মুশফিকও ভাবলেন আর কত! তিনিও গোটা ইন্দোর টেস্টে দলের পক্ষে এক মাত্র ফিফটি তুলে আউট হলেন ১৫০ বলে ৬৪ রান করে। তার বিদায়ের পর বাকি রইলো শুধুই আনুষ্ঠানিকতার। শেষ পর্যন্ত ৬৯.২ ওভারে ২১৩ রানে থামে দল।
দ্বিতীয় ইনিংসেও ভারতের পেসার মোহাম্মদ শামি নেন ৪ উইকেট। আরেক পেসার উমেশ যাদব ২ ও ইশান্ত শর্মা একটি উইকেট। প্রথম ইনিংসে তারা নিয়েছেন টাইগারদের ৭ উইকেট। দ্বিতীয় ইনিংসেও একই কাজ করলের। তাতে স্পষ্ট পেস খেলতেই নাকাল মুমিনুল বাহিনী!
ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে এলেন ভারতের ব্যাটিং ও বোলিং দুই কোচ। আসবেন না কেন! একদিকে দারুণ বোলিং অন্যদিকে দারুণ ব্যাটিং কৃতিত্বটা তাদেরই। তবে বেরসিকের মতো ভারতীয় এক সংবাদকর্মী ব্যাটিং কোচ বিক্রম রাঠোরকে প্রশ্ন ছুড়ে দিলেন-‘আপনি কি ভেবেছিলেন তিন দিনেই জিতে যাবেন?’ জবাবে বিক্রম রাঠোর বলেন, ‘না, আমি কোনভাবেই ভাবিনি যে তিন দিনেই বাংলাদেশ ম্যাচটা হেরে যাবে। কারণ ওরা দারুণ একটি দল। আমার কাছে ওদের হারের কারণ মনে হয়েছে টসের সিদ্ধান্ত। আমি বলতে চাইছি টসে জিতে যে ব্যাটিং নিয়েছিল সেই পরিকল্পনাটা ওরা সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারেনি। যে কারণে তিন দিনেই এমন ফলাফল। তবে আমি সত্যি ভাবিনি।’
অন্যদিকে বোলিং কোচ ভরত অরুণ নিজেদের বোলিং নিয়ে দারুণ আত্মবিশ্বাসী। শুরুতেই বলে দিলেন এটি বিশ্বের এক নম্বর বোলিং শক্তি। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি আমাদের বোলিং বিশ্বের অন্যতম সেরা। তারা এক নম্বর বললেও ভুল হবে না। তবে এজন্য আমাদের পেসাররা দারুণ পরিশ্রম করে। শামির কথাই বলি সে গতি ঠিক রাখতে ফিটনেস নিয়ে অনুশীলনে অনেক সময় দেয়। আর সুইং আদায়ের জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করে যায়।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

তাই বলে তিন দিনেই শেষ

আপডেট টাইম : ১০:৫০:৩৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০১৯

হাওর বার্তা ডেস্কঃ টেস্টে দর্শক হয় না! তাই ভারতের তরুণ অধিনায়ক বিরাট কোহলি প্রস্তাব করে বসেছেন ভারতের মাত্র পাঁচটি অঞ্চলে টেস্ট  ক্রিকেট আয়োজনের। সেখানে নেই ইন্দোরের নাম! এটি যেন কোনোভাবেই মানতে পারেননি ইন্দোরের ক্রিকেটপাগল মানুষ। প্রায় প্রতিদিনই ১০ থেকে ১৫ হাজার দর্শক মাঠে হাজির। কিন্তু তাদের দারুণ হতাশ করেছে বাংলাদেশ দল। ভারতের সঙ্গে মাত্র তিন দিনেই হেরে গেছে বাজেভাবে। ন্যূনতম প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়তে ব্যর্থ টাইগাররা। হেরেছে ইনিংস ও ১৩০ রানের বড় ব্যবধানে। ভারতকে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নামতেই হয়নি।

অথচ অধিনায়ক মুমিনুল হক সৌরভ টসে জিতে ভরসা রেখেছিলেন তার ব্যাটসম্যানদের ওপর। প্রথম ইনিংসে ১৫০ রানে অলআউট! জবাবে ৪৯৩ রানে ৪ উইকেট হাতে রেখেই তৃতীয় দিন সকালে ইনিংস ঘোষণা করে দিল ভারত। আর ২১৩ রানে থামলো বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংস।
টাইগারদের এমন পারফরম্যান্স মেনে নিতে পারছে না ভারতীয়রাও। বিশেষ করে দর্শকরা। মাঠ ছেড়ে বের হতে হতে সবারই একই প্রশ্ন- ‘তাই বলে তিন দিনেই শেষ হয়ে গেলো!’ তিন দিনে ম্যাচ শেষ হতে দেখে অবাক ভারতের ব্যাটিং কোচ বিক্রম রাঠোরও। চলতি বছরই নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশ দুটি টেস্ট ম্যাচই হেরেছিল ইনিংস ব্যবধানে। তবে ভারতের বিপক্ষে ২০০৭ এর পর ইনিংস ব্যবধানে হার বলে দিচ্ছে নিজেদের পরিচিত কন্ডিশনে টাইগারদের টেস্ট ক্রিকেটের জন্য কতটা কঠিন সময় চলছে। বিশেষ করে দলের ব্যাটিং সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন খুব সহজেই তোলা যায়। প্রথম ইনিংসে মুশফিক ৪৩ আর মুমিনুল ৩৭ রান। কিন্তু যাদের কাছে আশা ছিল সেই সাদমান ইসলাম, ইমরুল কায়েস, লিটন দাস, মোহাম্মদ মিঠুনরা পারেননি ব্যর্থতার বৃত্ত থেকে বের হতে। দ্বিতীয় ইনিংসে শুধুই আশা ছিল যে ভুল থেকে শিক্ষা নিবেন তারা। কিন্তু একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি।
টাইগারদের দুই ওপেনার ফিরলেন সমান সমান ৬ রান করে। যেন প্রথম ইনিংসের স্কোর কার্ডটা অনুসরণ করলেন তারা। এদিন ব্যাট হাতে অধিনায়কও ব্যর্থ। মাত্র ৭ রান করে ফিরে গেলেন সাজঘরে। ব্যক্তিগত ১২ রানে হাল ছাড়লেন মিঠুন । মধ্যাহ্নবিরতির আগেই ৪৪ রানে ৪ উইকেট নেই টাইগারদের।
তবে লজ্জা বাঁচাতে ব্যাটে দায়িত্ব তুলে নিলেন মুশফিকুর রহীম। কিছুটা সময় তাকে সঙ্গ দিলেন আরেক অভিজ্ঞ মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। কিন্তু ১৫ রানের বেশি অবদান রাখতে পারলেন না। ক্রিজে এসে দারুণ শুরু করলেন লিটন। কিন্তু ৩৫ রান করে ইনিংসটি শেষ হলো বাজেভাবে। ভাঙলো দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৬৩ রানের জুটি। এরপর মেহেদী হাসান মিরাজের সঙ্গে ফের ৫৯ রানের জুটি বাঁধলেন দলের সাবেক অধিনায়ক মুশফিক। কিন্তু ৩২ রান করে মিরাজ আউট হলে ইনিংস হারের শুধু অপেক্ষাই থাকলো। তাইজুল ইসলাম এলেন আর গেলেন। তাই দেখে মুশফিকও ভাবলেন আর কত! তিনিও গোটা ইন্দোর টেস্টে দলের পক্ষে এক মাত্র ফিফটি তুলে আউট হলেন ১৫০ বলে ৬৪ রান করে। তার বিদায়ের পর বাকি রইলো শুধুই আনুষ্ঠানিকতার। শেষ পর্যন্ত ৬৯.২ ওভারে ২১৩ রানে থামে দল।
দ্বিতীয় ইনিংসেও ভারতের পেসার মোহাম্মদ শামি নেন ৪ উইকেট। আরেক পেসার উমেশ যাদব ২ ও ইশান্ত শর্মা একটি উইকেট। প্রথম ইনিংসে তারা নিয়েছেন টাইগারদের ৭ উইকেট। দ্বিতীয় ইনিংসেও একই কাজ করলের। তাতে স্পষ্ট পেস খেলতেই নাকাল মুমিনুল বাহিনী!
ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে এলেন ভারতের ব্যাটিং ও বোলিং দুই কোচ। আসবেন না কেন! একদিকে দারুণ বোলিং অন্যদিকে দারুণ ব্যাটিং কৃতিত্বটা তাদেরই। তবে বেরসিকের মতো ভারতীয় এক সংবাদকর্মী ব্যাটিং কোচ বিক্রম রাঠোরকে প্রশ্ন ছুড়ে দিলেন-‘আপনি কি ভেবেছিলেন তিন দিনেই জিতে যাবেন?’ জবাবে বিক্রম রাঠোর বলেন, ‘না, আমি কোনভাবেই ভাবিনি যে তিন দিনেই বাংলাদেশ ম্যাচটা হেরে যাবে। কারণ ওরা দারুণ একটি দল। আমার কাছে ওদের হারের কারণ মনে হয়েছে টসের সিদ্ধান্ত। আমি বলতে চাইছি টসে জিতে যে ব্যাটিং নিয়েছিল সেই পরিকল্পনাটা ওরা সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারেনি। যে কারণে তিন দিনেই এমন ফলাফল। তবে আমি সত্যি ভাবিনি।’
অন্যদিকে বোলিং কোচ ভরত অরুণ নিজেদের বোলিং নিয়ে দারুণ আত্মবিশ্বাসী। শুরুতেই বলে দিলেন এটি বিশ্বের এক নম্বর বোলিং শক্তি। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি আমাদের বোলিং বিশ্বের অন্যতম সেরা। তারা এক নম্বর বললেও ভুল হবে না। তবে এজন্য আমাদের পেসাররা দারুণ পরিশ্রম করে। শামির কথাই বলি সে গতি ঠিক রাখতে ফিটনেস নিয়ে অনুশীলনে অনেক সময় দেয়। আর সুইং আদায়ের জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করে যায়।