ঢাকা ০৭:২৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ২২ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম

এমপিদের তোপে এবার শিক্ষামন্ত্রী

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০১:৫৮:৫৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ নভেম্বর ২০১৫
  • ২৯৫ বার

সংসদ সদস্যদের অপমান করার অভিযোগে সংসদে কঠোর সমালোচনার মুখে পড়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল। এবার একই অভিযোগে এমপিদের সমালোচনার শিকার হলেন শিক্ষামন্ত্রী।

এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগ বন্ধে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জারিকৃত প্রজ্ঞাপনে ঢালাওভাবে সংসদ সদস্যদের অভিযুক্ত করা হয়েছে- এমন অভিযোগেই ক্ষিপ্ত হয়েছেন সংসদ সদস্যরা।

বৃহস্পতিবার ১০ম জাতীয় সংসদের ৮ম অধিবেশনে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে সংসদ সদস্যরা এ ধরনের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।

স্বতন্ত্র সাংসদ হাজী মো. সেলিম তার বক্তৃতায় বলেন, ‘শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে সংসদ সদস্যদের যেভাবে অপমান করা হয়েছে- তার মানে কি সংসদ নাচের পুতুল? তাহলে কি টিআইবিই ঠিক? হয় টিআইবি ঠিক না হয় আমরা ঠিক।’

সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা দুর্নীতিমুক্ত শিক্ষক নিয়োগের বিষয়ে বলেন, ‘বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে জেলা প্রসাশনের প্রতিনিধি, মন্ত্রণালয় প্রতিনিধি, স্থানীয় সংসদ, প্রিন্সিপাল নিয়োগ বোর্ডে থাকেন। দু-এক জন সংসদ সদস্য দুর্নিতির সঙ্গে জড়িত হয়তো থাকতে পারেন। তাই বলে ঢালাওভাবে সমস্ত সাংসদদেরকে দোষারোপ করাটা শিক্ষামন্ত্রীর ঠিক হয়নি।’

মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরাও অধিকাংশ সময় শিক্ষক নিয়োগের দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত থাকে বলে দাবি করেন ফজলে হোসেন বাদশা। তিনি বলেন, ‘নিয়োগকৃত শিক্ষকরা অধিকাংশ সময়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠদান থেকে বিরত থেকে কোচিং সেন্টার বা ব্যাক্তিগত টিউশনি নিয়ে ব্যস্ত থাকে। মন্ত্রণালয় থেকে তার কোন তদারকি করা হয় না। এর ফলে শিক্ষা ব্যবস্থা যাচ্ছে-তাই হয়ে যাচ্ছে।’

এর আগে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য ড. রুস্তম আলী ফরাজী বিষয়টি উত্থাপন করেন এবং শিক্ষামন্ত্রীকে খোঁচা মেরে বলেন (এই সময়ই শিক্ষামন্ত্রী অধিবেশন কক্ষ থেকে বের হয়ে যান), ‘মন্ত্রীদের দায়বদ্ধতা এড়িয়ে যাবার প্রবণতা রয়েছে। তিনি (শিক্ষামন্ত্রী) জানতেন আমরা সাংসদরা আজকে এই বিষয়টি নিয়ে কথা বলবো বা তার কাছে জানতে চাইবো, এ জন্যই তিনি আগেভাগে বেরিয়ে গেছেন।’

জাসদের এমপি মঈনুদ্দিন খান বাদল বলেন, ‘সমস্ত বাংলাদেশের ভরকেন্দ্র এই পার্লামেন্ট। সাংসদদের অপমান করা একটি সচেতন অপরাধ বলে আমি মনে করি। বর্তমানে প্রজাতন্ত্রের একজন কর্মচারীকেও আমার ওপরে ঠাঁই দেয়া হয়।’

আরেক সাংসদ ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দুর্বলতা তুলে ধরে বলেন, ‘বেসরকারি শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে আমরা সাংসদরা মেধার প্রশ্নে কোনো আপস করি না। আমরা অনেক দেখেছি সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অনেক শিক্ষকই আছেন যারা সারাবছরে ঠিকমত ছেলেমেয়েদের সিলেবাসই শেষ করতে পারে না।’

সংসদ সদস্যদের বেসরকারি বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগে জড়িত থাকার অভিযোগের ভিত্তিতে তারা এভাবে শিক্ষামন্ত্রীর বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। এসব প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগ বন্ধে জারিকৃত প্রজ্ঞাপনে এমন কথাই বলা হয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

মদনে লুৎফুজ্জামান বাবর’র মুক্তির দাবীতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল

এমপিদের তোপে এবার শিক্ষামন্ত্রী

আপডেট টাইম : ০১:৫৮:৫৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ নভেম্বর ২০১৫

সংসদ সদস্যদের অপমান করার অভিযোগে সংসদে কঠোর সমালোচনার মুখে পড়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল। এবার একই অভিযোগে এমপিদের সমালোচনার শিকার হলেন শিক্ষামন্ত্রী।

এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগ বন্ধে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জারিকৃত প্রজ্ঞাপনে ঢালাওভাবে সংসদ সদস্যদের অভিযুক্ত করা হয়েছে- এমন অভিযোগেই ক্ষিপ্ত হয়েছেন সংসদ সদস্যরা।

বৃহস্পতিবার ১০ম জাতীয় সংসদের ৮ম অধিবেশনে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে সংসদ সদস্যরা এ ধরনের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।

স্বতন্ত্র সাংসদ হাজী মো. সেলিম তার বক্তৃতায় বলেন, ‘শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে সংসদ সদস্যদের যেভাবে অপমান করা হয়েছে- তার মানে কি সংসদ নাচের পুতুল? তাহলে কি টিআইবিই ঠিক? হয় টিআইবি ঠিক না হয় আমরা ঠিক।’

সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা দুর্নীতিমুক্ত শিক্ষক নিয়োগের বিষয়ে বলেন, ‘বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে জেলা প্রসাশনের প্রতিনিধি, মন্ত্রণালয় প্রতিনিধি, স্থানীয় সংসদ, প্রিন্সিপাল নিয়োগ বোর্ডে থাকেন। দু-এক জন সংসদ সদস্য দুর্নিতির সঙ্গে জড়িত হয়তো থাকতে পারেন। তাই বলে ঢালাওভাবে সমস্ত সাংসদদেরকে দোষারোপ করাটা শিক্ষামন্ত্রীর ঠিক হয়নি।’

মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরাও অধিকাংশ সময় শিক্ষক নিয়োগের দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত থাকে বলে দাবি করেন ফজলে হোসেন বাদশা। তিনি বলেন, ‘নিয়োগকৃত শিক্ষকরা অধিকাংশ সময়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠদান থেকে বিরত থেকে কোচিং সেন্টার বা ব্যাক্তিগত টিউশনি নিয়ে ব্যস্ত থাকে। মন্ত্রণালয় থেকে তার কোন তদারকি করা হয় না। এর ফলে শিক্ষা ব্যবস্থা যাচ্ছে-তাই হয়ে যাচ্ছে।’

এর আগে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য ড. রুস্তম আলী ফরাজী বিষয়টি উত্থাপন করেন এবং শিক্ষামন্ত্রীকে খোঁচা মেরে বলেন (এই সময়ই শিক্ষামন্ত্রী অধিবেশন কক্ষ থেকে বের হয়ে যান), ‘মন্ত্রীদের দায়বদ্ধতা এড়িয়ে যাবার প্রবণতা রয়েছে। তিনি (শিক্ষামন্ত্রী) জানতেন আমরা সাংসদরা আজকে এই বিষয়টি নিয়ে কথা বলবো বা তার কাছে জানতে চাইবো, এ জন্যই তিনি আগেভাগে বেরিয়ে গেছেন।’

জাসদের এমপি মঈনুদ্দিন খান বাদল বলেন, ‘সমস্ত বাংলাদেশের ভরকেন্দ্র এই পার্লামেন্ট। সাংসদদের অপমান করা একটি সচেতন অপরাধ বলে আমি মনে করি। বর্তমানে প্রজাতন্ত্রের একজন কর্মচারীকেও আমার ওপরে ঠাঁই দেয়া হয়।’

আরেক সাংসদ ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দুর্বলতা তুলে ধরে বলেন, ‘বেসরকারি শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে আমরা সাংসদরা মেধার প্রশ্নে কোনো আপস করি না। আমরা অনেক দেখেছি সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অনেক শিক্ষকই আছেন যারা সারাবছরে ঠিকমত ছেলেমেয়েদের সিলেবাসই শেষ করতে পারে না।’

সংসদ সদস্যদের বেসরকারি বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগে জড়িত থাকার অভিযোগের ভিত্তিতে তারা এভাবে শিক্ষামন্ত্রীর বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। এসব প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগ বন্ধে জারিকৃত প্রজ্ঞাপনে এমন কথাই বলা হয়েছে।