হাওর বার্তা ডেস্কঃ ইরাকে দুর্নীতি বিরোধী বিক্ষোভে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১০৯ জনে দাঁড়িয়েছে। আহতের সংখ্যা অন্তত ৬ হাজার। বিক্ষোভের ষষ্ঠতম দিন রাতেই নিহত হয়েছে অন্তত ১২ বিক্ষোভকারী।
বিবিসি, আলজাজিরা, ফ্রান্স টুয়েন্টি ফোর জানাচ্ছে, বেকারত্ব নিরসন, জনসেবার মানোন্নয়ন আর সীমাহীন দুর্নীতি রোধের দাবিতে সাতদিন ধরে আন্দোলন চালাচ্ছে দেশটির জনগণ। বিক্ষোভকারীদের অধিকাংশই তরুণ বলে জানা গেছে।
রাজধানী বাগদাদ সহ ইরাকের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহরগুলোতে গত মঙ্গলবার থেকে এই বিক্ষোভ শুরু হয়। বিক্ষোভ দমনে জলকামান, টিয়ারগ্যাস এবং তাজা বন্ধুক ছুড়েছে সরকারি নিরাপত্তা বাহিনী।
তবে বিক্ষোভে নিরাপত্তা বাহিনী সরাসরি কোনো গুলি চালায়নি বলে দাবি করেছে ইরাক সরকার।
কর্তৃপক্ষে দাবি, ‘অজ্ঞাত স্নাইপাররা’ বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালাচ্ছে। স্নাইপারদের গুলিতে একাধিক পুলিশ কর্মকর্তাও নিহত হয়েছে বলে ইরাকি সেনাবাহিনী দাবি করেছে।
স্নাইপারদের গুলিতে একাধিক নিহতের হওয়ার ঘটনাও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের শিরোনাম হয়েছে। হোসেইন হুসাম নামে ১৮ বছর বয়সী বিক্ষোভকারীকে শুক্রবার রাতে স্নাইপাররা গুলি করে হত্যা করেছে বলে তার পরিবার দাবি করেছে। প্রতিবেশীর বিয়েতে যাওয়ার জন্য ডেকে তাকে হত্যা করা হয়।
তবে এর জন্য হুসামের পরিবার সরকারকে দায়ী করছে। তার বোনের ভাষ্য, ‘সরকার এখন কি তাকে আমার কাছে ফিরিয়ে দিতে পারবে? আল্লাহ তাদের ক্ষমা করবেন না।’
একইভাবে ইয়াসিন আব্বাস নামে আরেক ব্যক্তি দুইটি হত্যার সাক্ষী। যার চোখের সামনে স্নাইপাররা তাদের হত্যা করে। যার মধ্যে একজন তার সম্পর্কিত ভাইও।
ইয়াসিন বলছেন, ‘যখন বিক্ষোভ চলছিল আমরা একটি দোকানে বসে ছিলাম। তখন এক ব্যক্তি সেখানে আসলেন। অল্প মুহূর্ত পর ধূমপানের জন্য তিনি উঠে গেলেন। এরপরই দেখলাম একজন স্নাইপার তাকে গুলি করেছে। আমার এক ভাই ছুটে গেলে তাকেও মাথায় গুলি করে হত্যা করা হয়।’
এদিকে বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালানোর একাধিক অভিযোগ উঠেছে সরকারি বাহিনীর বিরুদ্ধে। রয়টার্স জানাচ্ছে, শুক্রবার বিক্ষোভকারীরা বাগদাদের তাহরির স্কয়ারের দিকে যেতে চাইলে নিরাপত্তা বাহিনী তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে। এতে কয়েকজনের মাথা এবং পেটে গুলি লাগে।
হত্যার অভিযোগ অনুসন্ধান করতে গেলে আল জাজিরা জানিয়েছে, হাসপাতালের কর্মকর্তারা নিহতদের মেডিকেল রিপোর্ট দেখাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। সরকারের শীর্ষমহল থেকে এই ব্যাপারে তাদের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে।