ঢাকা ১১:৩৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইরাকে সরকার বিরোধী বিক্ষোভে নিহত বেড়ে ১০৯

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৩:০১:৪০ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ অক্টোবর ২০১৯
  • ১৮৩ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ইরাকের রাজধানী বাগদাদসহ বিভিন্ন শহরে সোমবারও সরকার বিরোধী বিক্ষোভ অব্যাহত ছিলো। এদিন বিক্ষোভে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের গুলিতে কমপক্ষে ১২ জন নিহত হয়েছে বলে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমগুলো জানিয়েছে।

স্থানীয় হাসপাতালের এক মেডিকেল কর্মকর্তা ও নিরাপত্তা কর্মকর্তার বরাত দিয়ে সংবাদ মাধ্যম এপি জানায়, সোমবার সকালে বিক্ষোভে কমপক্ষে আরো ১২ জন নিহত হয়েছেন বলে নিশ্চিত হওয়া সম্ভব হয়েছে। তবে নিহতদের ব্যাপারে বিস্তারিত বলতে রাজি হননি নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই সরকারি কর্মকর্তারা।

এ নিয়ে গত মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া বিক্ষোভে নিহতের সংখ্যা বেড়ে গিয়ে দাঁড়ালো ১০৯য়ে। গত সাত দিনের বিক্ষোভে আহত হয়েছে ৬ হাজারের বেশি মানুষ।

গত মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া এই সরকার বিরোধী বিক্ষোভে ব্যাপক সংখ্যক প্রাণহানির কথা স্বীকার করেছে ইরাক সরকারও। ইরাকের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে দেয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত কয়েক দিনের অস্থিরতায় নিরাপত্তা বাহিনীর আট সদস্যসহ কমপক্ষে ১০৪ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরো ৬১০৭ জন।

বেকারত্ব, অর্থনৈতিক দুরবস্থা, ঘুষ ও সরকারের নানা অনিয়মের বিরুদ্ধে গত ৭ দিন ধরে রাজধানী বাগদাদসহ ইরাকের বিভিন্ন শহরে একটানা বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছে বিক্ষেুব্ধ জনতা। বিক্ষোভে অংশগ্রহণতকারীদের সিংহভাগই বয়সে তরুণ। তাদের তীব্র স্লোগানে প্রকম্পিত হচ্ছে শহরের আকাশ বাতাশ। সরকার গত বৃহস্পতিবার কারফিউ দিয়েও বিক্ষোভকারীদের নিবৃত্ত করতে পারেনি।

তারা কারফিউ ভেঙে জড়ো হয়েছিলো শহরের কেন্দ্রস্থলে। ফলে কারফিউ শিথিল করতে বাধ্য হয়েছে ইরাকি সরকার। বিক্ষোভকারীদের প্রতি শান্ত থাকার বাণী প্রচার করেছেন প্রধানমন্ত্রী আদেল আবদুল মাহদি। তবে কারফিউ শিথিল করলেও এখনও বন্ধ রয়েছে রাজধানী বাগদাদসহ চারটি প্রধান শহরের টেলিফোন ও ইন্টারনেট সংযোগ। কেননা বিক্ষোভকারীরা ইন্টারনেটের মাধ্যমেই বিক্ষোভের খবরাখবর ও তথ্যাদি প্রচার করে থাকেন।

শনিবার ইরাকের মানবাধিকার হাই কমিশন এক বিৃতিতে জানায়, বিক্ষোভে এ পর্যন্ত প্রায় ১শ মানুষ নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরো ৪ হাজারের বেশি মানুষ। আটক করা হয়েছে আরো হাজার হাজার মানুষকে।

শনিবার তাহরির স্কয়ারের বিক্ষোভে অংশ নেয়া মধ্যবয়সী শোওকি ভাগ্যক্রমে বেঁচে গেছেন। তিনি পুলিশের বুলেট আর টিয়ার গ্যাসের ধুঁয়া এড়িয়ে পালিয়ে আসতে পেরেছেন। তিনি বলেন, ‘যারা সরকারি স্নেপারদের (গুপ্ত ঘাতক) হামলার শিকার হয়নি তারা ভাগ্যবান।’

৫১ বছর বয়সী শোওকি জানান, শুধু টিয়ার গ্যাস বা রাবার বুলেট নয়, বিক্ষোভকারীদের বেধরক পেটাচ্ছে দাঙ্গা পুলিশ। অনেককে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

তিনি এই বিক্ষোভে যোগ দেয়ার কারণ উল্লেখ করতে গিয়ে বলেন, ‘মানুষজন অনাহারে থাকতে না পেরে রাস্তায় নেমে এসেছে। আমাদের এখানে প্রচুর তেল মজুদ অছে। কিন্তু তারওপরও দেশের কোনো উন্নয়ন দেখতে পাচ্ছি না। তাহলে এখানে কি হচ্ছে?’

আর এ কারণেই বিক্ষোভ অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্তে অটল রয়েছে সে দেশের সাধারণ মানুষ। তার বলছে, ‘আমাদের তো হারানোর কিছু নাই। চলমান অবস্থার পুরোপুরি পরিবর্তন না হওয়া অব্দি আমরা থামবো না।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

ইরাকে সরকার বিরোধী বিক্ষোভে নিহত বেড়ে ১০৯

আপডেট টাইম : ০৩:০১:৪০ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ অক্টোবর ২০১৯

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ইরাকের রাজধানী বাগদাদসহ বিভিন্ন শহরে সোমবারও সরকার বিরোধী বিক্ষোভ অব্যাহত ছিলো। এদিন বিক্ষোভে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের গুলিতে কমপক্ষে ১২ জন নিহত হয়েছে বলে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমগুলো জানিয়েছে।

স্থানীয় হাসপাতালের এক মেডিকেল কর্মকর্তা ও নিরাপত্তা কর্মকর্তার বরাত দিয়ে সংবাদ মাধ্যম এপি জানায়, সোমবার সকালে বিক্ষোভে কমপক্ষে আরো ১২ জন নিহত হয়েছেন বলে নিশ্চিত হওয়া সম্ভব হয়েছে। তবে নিহতদের ব্যাপারে বিস্তারিত বলতে রাজি হননি নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই সরকারি কর্মকর্তারা।

এ নিয়ে গত মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া বিক্ষোভে নিহতের সংখ্যা বেড়ে গিয়ে দাঁড়ালো ১০৯য়ে। গত সাত দিনের বিক্ষোভে আহত হয়েছে ৬ হাজারের বেশি মানুষ।

গত মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া এই সরকার বিরোধী বিক্ষোভে ব্যাপক সংখ্যক প্রাণহানির কথা স্বীকার করেছে ইরাক সরকারও। ইরাকের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে দেয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত কয়েক দিনের অস্থিরতায় নিরাপত্তা বাহিনীর আট সদস্যসহ কমপক্ষে ১০৪ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরো ৬১০৭ জন।

বেকারত্ব, অর্থনৈতিক দুরবস্থা, ঘুষ ও সরকারের নানা অনিয়মের বিরুদ্ধে গত ৭ দিন ধরে রাজধানী বাগদাদসহ ইরাকের বিভিন্ন শহরে একটানা বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছে বিক্ষেুব্ধ জনতা। বিক্ষোভে অংশগ্রহণতকারীদের সিংহভাগই বয়সে তরুণ। তাদের তীব্র স্লোগানে প্রকম্পিত হচ্ছে শহরের আকাশ বাতাশ। সরকার গত বৃহস্পতিবার কারফিউ দিয়েও বিক্ষোভকারীদের নিবৃত্ত করতে পারেনি।

তারা কারফিউ ভেঙে জড়ো হয়েছিলো শহরের কেন্দ্রস্থলে। ফলে কারফিউ শিথিল করতে বাধ্য হয়েছে ইরাকি সরকার। বিক্ষোভকারীদের প্রতি শান্ত থাকার বাণী প্রচার করেছেন প্রধানমন্ত্রী আদেল আবদুল মাহদি। তবে কারফিউ শিথিল করলেও এখনও বন্ধ রয়েছে রাজধানী বাগদাদসহ চারটি প্রধান শহরের টেলিফোন ও ইন্টারনেট সংযোগ। কেননা বিক্ষোভকারীরা ইন্টারনেটের মাধ্যমেই বিক্ষোভের খবরাখবর ও তথ্যাদি প্রচার করে থাকেন।

শনিবার ইরাকের মানবাধিকার হাই কমিশন এক বিৃতিতে জানায়, বিক্ষোভে এ পর্যন্ত প্রায় ১শ মানুষ নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরো ৪ হাজারের বেশি মানুষ। আটক করা হয়েছে আরো হাজার হাজার মানুষকে।

শনিবার তাহরির স্কয়ারের বিক্ষোভে অংশ নেয়া মধ্যবয়সী শোওকি ভাগ্যক্রমে বেঁচে গেছেন। তিনি পুলিশের বুলেট আর টিয়ার গ্যাসের ধুঁয়া এড়িয়ে পালিয়ে আসতে পেরেছেন। তিনি বলেন, ‘যারা সরকারি স্নেপারদের (গুপ্ত ঘাতক) হামলার শিকার হয়নি তারা ভাগ্যবান।’

৫১ বছর বয়সী শোওকি জানান, শুধু টিয়ার গ্যাস বা রাবার বুলেট নয়, বিক্ষোভকারীদের বেধরক পেটাচ্ছে দাঙ্গা পুলিশ। অনেককে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

তিনি এই বিক্ষোভে যোগ দেয়ার কারণ উল্লেখ করতে গিয়ে বলেন, ‘মানুষজন অনাহারে থাকতে না পেরে রাস্তায় নেমে এসেছে। আমাদের এখানে প্রচুর তেল মজুদ অছে। কিন্তু তারওপরও দেশের কোনো উন্নয়ন দেখতে পাচ্ছি না। তাহলে এখানে কি হচ্ছে?’

আর এ কারণেই বিক্ষোভ অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্তে অটল রয়েছে সে দেশের সাধারণ মানুষ। তার বলছে, ‘আমাদের তো হারানোর কিছু নাই। চলমান অবস্থার পুরোপুরি পরিবর্তন না হওয়া অব্দি আমরা থামবো না।