হাওর বার্তা ডেস্কঃ বংশপরম্পরার রাজনীতিই ভারতের লোকসভা ও কয়েকটি রাজ্যে বিধানসভা ভোটে দেশটির সর্বপ্রাচীন দল কংগ্রেসের ভরাডুবি হয়েছে বলে জানিয়েছে তদন্ত কমিটি। এটিই অন্যতম প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করে এই অবস্থা থেকে উত্তরণের পথ খুঁজছে কংগ্রেস।
গতকাল শনিবার কলকাতার শীর্ষ সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার এসব কথা বলেছে। মে মাসের নির্বাচনে কেন হার হলো- তা অনুসন্ধানে গঠিত ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাবা বা দাদা অনেক দিনের রাজনীতিক, মন্ত্রী, দলের প্রভাবশালী নেতা, তাই যথাক্রমে ছেলে বা ভাইকে ভোটে কংগ্রেসের টিকিট দেওয়া হয়েছে আর যেনতেন প্রকারে তাদের জিতিয়ে আনার চেষ্টা চলছে, ভোটাররা এটা মেনে নিতে পারেননি। বংশপরম্পরার রাজনীতিতেই বীতস্পৃহা এসে গেছে ভোটারদের। আর সেটাই লোকসভা ও কয়েকটি রাজ্যে বিধানসভা ভোটে কংগ্রেসের ভরাডুবির অন্যতম প্রধান কারণ।
চার মাস আগে লোকসভা ভোটে কর্নাটকে পর্যুদস্ত হতে হয়েছিল কংগ্রেসকে। রাজ্যের ২৮টি লোকসভা আসনের মধ্যে মাত্র একটিতে জয়ী হয়েছিল কংগ্রেস। আর এক বছর আগের বিধানসভা ভোটেও কর্নাটকে ধরাশায়ী হয়েছিল কংগ্রেস। কিন্তু এক সময়ের জনপ্রিয় দলটির কেন হার হলো ভোটে, জানতে যে তথ্য অনুসন্ধান (ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং) কমিটি গড়েছিল কংগ্রেস, তারাই এই রিপোর্ট দিয়েছে। সে সময় দলের সভাপতি হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন রাহুল গান্ধী; যাকে তার মা সোনিয়া গান্ধী এই আসনে বসিয়েছেন। কিন্তু ভোটে হেরে পরিবারতন্ত্রের বাইরে যাওয়ার ঘোষণা দেন তিনি। ছেড়ে দেন পদ। কিন্তু বংশের বাইরে নতুন কোনো রাজনীতিককে এই আসনে না দিয়ে সোনিয়া গান্ধী নিজেই ফিরে আসেন প্রাক্তন থেকে বর্তমানে।
কংগ্রেসের তথ্য অনুসন্ধান কমিটি এও বলেছে, এসব থেকে শিক্ষা নিয়েই এ বার প্রার্থী বাছাই করতে হবে মহারাষ্ট্র ও হরিয়ানার বিধানসভা ভোটে। আগামী মাসে যে কয়েকটি উপনির্বাচন রয়েছে, সেখানেও এই শিক্ষাকে মনে রাখতে হবে। ২০১৮ সালে কর্নাটক বিধানসভা নির্বাচনে দলের প্রার্থী তালিকায় এমন বহু নাম ছিল, যারা বিধায়ক বা সাংসদদের ছেলেমেয়ে বা তাদের খুব ঘনিষ্ঠ আত্মীয়।
প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়ার পুত্র যতীন্দ্র তার বাবার নির্বাচন কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়েছিলেন। কিন্তু সিদ্দারামাইয়া যে দুটি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন, তার একটিতে হেরে গিয়েছিলেন। প্রাক্তন মন্ত্রী টি বি জয়চন্দ্র ও তার পুত্র দুজনেই ধরাশায়ী হয়েছিলেন। মে মাসে লোকসভা ভোটে হেরে গিয়েছিলেন প্রাক্তন সাংসদ মল্লিকার্জুন খড়গে।