ঢাকা ১২:২৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভারত থেকে কেনা বিআরটিসি বাসের মান নিয়ে প্রশ্ন

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৮:১২:২৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৫ অক্টোবর ২০১৯
  • ১৮৫ বার

বাইরে চাকচিক্য দিয়েই দিনের পর দিন চলাচল করছে বিআরটিসি’র নতুন বাসগুলো। ভারত থেকে আনা বিআরটিসি বাসগুলোর ভেতরে পা দিতেই দেখা যায় ভিন্ন দৃশ্য। বাসের মেঝে কাঠের তৈরি। সামান্য চাপ দিলেই বেঁকে যায় বডি। চালক, হেলপার ও কন্ডাক্টরদের অভিযোগ শুধু বাসের বডি নয়, অন্যান্য ‘স্পেসিফিকেশনে’ও রয়েছে যথেষ্ঠ ঘাটতি। সচারাচর এসি বাসগুলো প্রতি লিটার জ্বালানিতে প্রায় তিন কিলোমিটার পর্যন্ত যায়। কিন্তু নতুন এই বাসগুলোর মাইলেজ মাত্র ১ দশমিক ২ কিলোমিটার। বাসের সামনের অংশের এসিতে করা হয়েছে কারসাজি।

কম কাজ করে। এই বাসে সিট বসানো হয়েছে ৪১টি। ফলে যাত্রী পরিবহন কম হচ্ছে।

মিরপুর ডিপোর দোতলা বাসচালক দুলাল আহমেদ জানান, বাসের গতি সর্বোচ্চ ৯০ কিলোমিটারে উঠলেই ইঞ্জিন গরম হয়ে যাচ্ছে। দুর পাল্লায় ঘণ্টায় ৭৫ কিলোমিটারের বেশি গতি ওঠেনা এসব গাড়ির। এছাড়া বাসের মেঝে কাঠের তৈরি হওয়ায় এটা খুব ঝুঁকিপূর্ণ। বিআরটিসি বাসের মিরপুর, শেওড়া, উত্তরাসহ একাধিক ডিপো ঘুরে অনুসন্ধানে জানা গেছে, সম্প্রতি ভারত থেকে বিআরটিসির ৬শ বাস ক্রয় করা হয়েছে। যার মধ্যে সাড়ে ৪শ বাস ইতিমধ্যে এসেছে দেশে। এর মধ্যে একতলা এসি বাস দুইশ, নন-এসি একতলা বাস একশ এবং দোতলা বাস কেনা হয়েছে তিনশটি। একতলা এসি বাসের মধ্যে এসেছে ১২৯টি। নন-এসি একতলা টাটা বাস এসেছে একশটি। দোতলা বাস এসেছে ১৬৮টি। টাটা কোম্পানি থেকে এসেছে নন এসি একতলা। অশোক লিলেন কোম্পানি থেকে এসেছে এসি ডাবল ডেকার বাস। ইতোমধ্যে নতুন এই বাসগুলোর কিছু বাসে ছাদ ফুটো হয়ে পানি পড়ছে। বাসের ডিপো ঘুরে সরেজমিনে দেখা যায়, এই বাসগুলোর বডিশিট অত্যন্ত নিম্নমানের। এ অবস্থায় অন্য কোনো বাসের সঙ্গে জোরে ধাক্কা লাগলে দুমড়ে-মুচড়ে যাওয়ার অবস্থা। অভিযোগ রয়েছে, বাসের বডি তৈরিতে নিম্নমানের শিট ব্যবহার করায় এমনটা হয়েছে। ওজনেও রয়েছে তারতম্য। বাসের ‘স্পেসিফিকেশন’ নথিতে উল্লেখ রয়েছে, বাংলাদেশ চেয়েছিল ১৬ হাজার দুইশ কেজি ওজনের বাস। সেখানে আমদানিকৃত এই বাসগুলোর ওজন ১৫ হাজার কেজিরও নিচে।

বিআরটিসি সূত্র জানায়, বিআরটিসি বাস তৈরি প্রক্রিয়ার তদারকিতে বহুবার ভারত সফরে গেছেন বিআরটিসির সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান ফরিদ আহমেদ ভূঁইয়া। বাসের এসব ত্রুটির ব্যাপারে তিনি কোন উচ্চবাচ্য করেননি। সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, সাবেক চেয়ারম্যান ফরিদ আহমেদ ভূঁইয়াকে ‘ম্যানেজ’ করেছে ভারতীয় কোম্পানী। ফলে বিআরটিসিকে ভারতীয় টাটা কোম্পানি এমন নিম্নমানের বাস ‘ধরিয়ে’ দিয়েছে।

গাবতলী বিআরটিসির সাবেক ডিপো ম্যানেজার বলেন, সম্প্রতি আমি গাবতলী থেকে বদলী হয়ে তেজগাঁও বিআরটিসির একটি ট্রেনিং সেন্টারে এসেছি। গাবতলী ডিপোতে থাকাকালে কয়েকটি টাটা কোম্পানির বাসের বিষয়ে অভিযোগ এসেছে। এসব বাসের ছাদ ফুটো হয়ে পানি পরার বিষয়টি আমি দেখেছি। পরে ছাদে উঠে দেখলাম কেনো পানি পড়ে। ছাদে যে ওয়েল্ডিং এর কাজ করা হয়েছে সেখানে কিছুটা ত্রুটি ছিল। যার কারণে ছাদের বিভিন্ন যায়গায় ফুটো হয়ে গেছে। সেখান দিয়ে বৃষ্টির পানি পড়তো। এ বিষয়ে হেড অফিসে আমি লিখিতভাবে এবং ছবি তুলে অভিযোগ পাঠিয়েছি। এটা নিয়ে একটি তদন্ত কমিটি হয়েছে। সেখানে বুয়েটের প্রফেসর এবং বিআরটিএর অফিসাররা ছিলেন। ছিলেন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। আমাদের ডিপার্টমেন্টের কর্মকর্তারাও ছিলেন। ওনারা সব দেখে একটি তদন্ত কমিটির রিপোর্ট সাবমিট করার পর বাসের সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তারা দফায় দফায় অনেকগুলো বৈঠক করে ছাদ দিয়ে পানি পড়া বন্ধ করতে তাদের দেশের এক্সপার্টদের নিয়ে বাংলাদেশে আসেন। একাধিক পলিসি তারা আমাদের কাছে সাবমিট করেছিলেন। সম্প্রতি দুই ডিপোর মোট ৪টি গাড়িতে দুই রকমের পদ্ধতিতে এটা মেরামত করে দেয়া হয়েছে। মেরামত করার পরে তদন্ত কমিটির সদস্যরা পর্যক্ষেণ করে দেখেছেন। এ সম্পর্কে মন্ত্রণালয়ে একটি রিপোর্ট সাবমিট করা হবে। এরপর মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নিবেন কোনটি রিপেয়ার করলে এটা আমরা যেমন চাচ্ছি তেমন হবে। এ বিষয়ে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান মেরামত পরবর্তী একটি ওয়ারেন্টি দিবেন বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। রিপোর্টে আরেকটি বিষয় উল্লেখ ছিল যে, ওয়েল্ডিং ছুটে যাওয়ার কারণে গাড়ি চলার সময় বডির সিট শব্দ করতো। আমার সন্দেহ ছিল হয়তো গাড়ির সিট প্রয়োজনের তুলনায় পাতলা দিয়েছে। যার কারণে এই শব্দটা হতো। এ বিষয়ে আমি সর্বপ্রথম রিপোর্ট করার পর জানা গেছে অধিকাংশ গাড়িতেই এ রকম সমস্যা হয়ে গেছে ইতোমধ্যে। তবে আমার ডিপোর অধিনে ডাবল ডেকার এসি চারটি বাসের বিষয়ে তেমন কোনো অভিযোগ পাইনি। ছোটখাটো সমস্যা থাকলেও এক বছরের ওয়ারেন্টি থাকায় ফোন করলে সঙ্গে সঙ্গে তারা এসে সমস্যা সমাধান করে দিয়ে গেছেন।

এ বিষয়ে অতিরিক্ত সচিব ও বিআরটিসির চেয়ারম্যান মো. এহছানে এলাহী বলেন, সম্প্রতি আমি যোগদানের পর অভিযোগ ছিল আমাদের নন এসি বাসের ছাদ দিয়ে পানি পরে। ইতিমধ্যে এর সমাধান হয়ে গেছে। এ বিষয়ে ভারত থেকে টাটা কোম্পানির লোক এসেছে। তারা পরীক্ষা নিরীক্ষা করে নিজ খরচে মেরামত করে দিবে। এবং তাদের কারখানা থেকে আমাদের গাড়ি আনতে যে ট্রান্সপোর্টেশন খরচ সেটাও তারা দিবেন। অতএব আমাদের বাসের ছাদে যে কারিগরি ত্রুটি ছিল সেটা সমাধান হয়েছে। বাকী ত্রুটি সম্পর্কে আমার জানা নেই। যদি অভিযোগ আসে দেখবো। এ বিষয়ে মন্ত্রী আমাকে বলেছেন, যদি বাসের কোনো সমস্যা দেখা দেয় তাহলে আমাকে তদন্ত করতে। তদন্ত করবো মন্ত্রণালয়ের সম্মতিক্রমে। যেটা মন্ত্রণালয় দেখবে।

বাসের বডি সিট নরম হওয়া সম্পর্কে তিনি বলেন, স্পেসিফিকেশন মিটিং এ আমি ছিলাম। এখনকার নতুন বাসের বডিতে তারা ফোম জাতিয় কিছু একটা দিয়ে নরম করে। যাতে করে দুর্ঘটনা হলে ভেতরে যারা প্যাসেঞ্জার থাকেন তারা নিরাপদে থাকবেন। আর বাইরের ধকলটা বাসের ওপর চলে যায়। এটা নরম করার কারণ, বডিটা যেন ফোমের মতো হয়। আমার মনে হয়, এটা উন্নত মানের কোনো স্পেসিফিকেশন। এটা ঠিক আছে। কোম্পানি থেকে অনেক আগেই আমাদের বলা হয়েছিল, বাসের বডি এমন হবে যে, মানুষ দুর্ঘটনায় আহত কম হবে। ফোমের বালিশে চাপা দিলে যেমন বাঁকা হয়ে যায়, পরে ঠিক হয়ে যায়। নতুন বাসের বডিও ঠিক একই রকম করা হয়েছে। তিনি বলেন, নতুন তিন ক্যাটাগরির বাসই চেক করা হবে। নন এসি ইতোমধ্যে করা হয়েছে। এসি এবং ডাবল ডেকার চেক করা হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

ভারত থেকে কেনা বিআরটিসি বাসের মান নিয়ে প্রশ্ন

আপডেট টাইম : ০৮:১২:২৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৫ অক্টোবর ২০১৯

বাইরে চাকচিক্য দিয়েই দিনের পর দিন চলাচল করছে বিআরটিসি’র নতুন বাসগুলো। ভারত থেকে আনা বিআরটিসি বাসগুলোর ভেতরে পা দিতেই দেখা যায় ভিন্ন দৃশ্য। বাসের মেঝে কাঠের তৈরি। সামান্য চাপ দিলেই বেঁকে যায় বডি। চালক, হেলপার ও কন্ডাক্টরদের অভিযোগ শুধু বাসের বডি নয়, অন্যান্য ‘স্পেসিফিকেশনে’ও রয়েছে যথেষ্ঠ ঘাটতি। সচারাচর এসি বাসগুলো প্রতি লিটার জ্বালানিতে প্রায় তিন কিলোমিটার পর্যন্ত যায়। কিন্তু নতুন এই বাসগুলোর মাইলেজ মাত্র ১ দশমিক ২ কিলোমিটার। বাসের সামনের অংশের এসিতে করা হয়েছে কারসাজি।

কম কাজ করে। এই বাসে সিট বসানো হয়েছে ৪১টি। ফলে যাত্রী পরিবহন কম হচ্ছে।

মিরপুর ডিপোর দোতলা বাসচালক দুলাল আহমেদ জানান, বাসের গতি সর্বোচ্চ ৯০ কিলোমিটারে উঠলেই ইঞ্জিন গরম হয়ে যাচ্ছে। দুর পাল্লায় ঘণ্টায় ৭৫ কিলোমিটারের বেশি গতি ওঠেনা এসব গাড়ির। এছাড়া বাসের মেঝে কাঠের তৈরি হওয়ায় এটা খুব ঝুঁকিপূর্ণ। বিআরটিসি বাসের মিরপুর, শেওড়া, উত্তরাসহ একাধিক ডিপো ঘুরে অনুসন্ধানে জানা গেছে, সম্প্রতি ভারত থেকে বিআরটিসির ৬শ বাস ক্রয় করা হয়েছে। যার মধ্যে সাড়ে ৪শ বাস ইতিমধ্যে এসেছে দেশে। এর মধ্যে একতলা এসি বাস দুইশ, নন-এসি একতলা বাস একশ এবং দোতলা বাস কেনা হয়েছে তিনশটি। একতলা এসি বাসের মধ্যে এসেছে ১২৯টি। নন-এসি একতলা টাটা বাস এসেছে একশটি। দোতলা বাস এসেছে ১৬৮টি। টাটা কোম্পানি থেকে এসেছে নন এসি একতলা। অশোক লিলেন কোম্পানি থেকে এসেছে এসি ডাবল ডেকার বাস। ইতোমধ্যে নতুন এই বাসগুলোর কিছু বাসে ছাদ ফুটো হয়ে পানি পড়ছে। বাসের ডিপো ঘুরে সরেজমিনে দেখা যায়, এই বাসগুলোর বডিশিট অত্যন্ত নিম্নমানের। এ অবস্থায় অন্য কোনো বাসের সঙ্গে জোরে ধাক্কা লাগলে দুমড়ে-মুচড়ে যাওয়ার অবস্থা। অভিযোগ রয়েছে, বাসের বডি তৈরিতে নিম্নমানের শিট ব্যবহার করায় এমনটা হয়েছে। ওজনেও রয়েছে তারতম্য। বাসের ‘স্পেসিফিকেশন’ নথিতে উল্লেখ রয়েছে, বাংলাদেশ চেয়েছিল ১৬ হাজার দুইশ কেজি ওজনের বাস। সেখানে আমদানিকৃত এই বাসগুলোর ওজন ১৫ হাজার কেজিরও নিচে।

বিআরটিসি সূত্র জানায়, বিআরটিসি বাস তৈরি প্রক্রিয়ার তদারকিতে বহুবার ভারত সফরে গেছেন বিআরটিসির সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান ফরিদ আহমেদ ভূঁইয়া। বাসের এসব ত্রুটির ব্যাপারে তিনি কোন উচ্চবাচ্য করেননি। সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, সাবেক চেয়ারম্যান ফরিদ আহমেদ ভূঁইয়াকে ‘ম্যানেজ’ করেছে ভারতীয় কোম্পানী। ফলে বিআরটিসিকে ভারতীয় টাটা কোম্পানি এমন নিম্নমানের বাস ‘ধরিয়ে’ দিয়েছে।

গাবতলী বিআরটিসির সাবেক ডিপো ম্যানেজার বলেন, সম্প্রতি আমি গাবতলী থেকে বদলী হয়ে তেজগাঁও বিআরটিসির একটি ট্রেনিং সেন্টারে এসেছি। গাবতলী ডিপোতে থাকাকালে কয়েকটি টাটা কোম্পানির বাসের বিষয়ে অভিযোগ এসেছে। এসব বাসের ছাদ ফুটো হয়ে পানি পরার বিষয়টি আমি দেখেছি। পরে ছাদে উঠে দেখলাম কেনো পানি পড়ে। ছাদে যে ওয়েল্ডিং এর কাজ করা হয়েছে সেখানে কিছুটা ত্রুটি ছিল। যার কারণে ছাদের বিভিন্ন যায়গায় ফুটো হয়ে গেছে। সেখান দিয়ে বৃষ্টির পানি পড়তো। এ বিষয়ে হেড অফিসে আমি লিখিতভাবে এবং ছবি তুলে অভিযোগ পাঠিয়েছি। এটা নিয়ে একটি তদন্ত কমিটি হয়েছে। সেখানে বুয়েটের প্রফেসর এবং বিআরটিএর অফিসাররা ছিলেন। ছিলেন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। আমাদের ডিপার্টমেন্টের কর্মকর্তারাও ছিলেন। ওনারা সব দেখে একটি তদন্ত কমিটির রিপোর্ট সাবমিট করার পর বাসের সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তারা দফায় দফায় অনেকগুলো বৈঠক করে ছাদ দিয়ে পানি পড়া বন্ধ করতে তাদের দেশের এক্সপার্টদের নিয়ে বাংলাদেশে আসেন। একাধিক পলিসি তারা আমাদের কাছে সাবমিট করেছিলেন। সম্প্রতি দুই ডিপোর মোট ৪টি গাড়িতে দুই রকমের পদ্ধতিতে এটা মেরামত করে দেয়া হয়েছে। মেরামত করার পরে তদন্ত কমিটির সদস্যরা পর্যক্ষেণ করে দেখেছেন। এ সম্পর্কে মন্ত্রণালয়ে একটি রিপোর্ট সাবমিট করা হবে। এরপর মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নিবেন কোনটি রিপেয়ার করলে এটা আমরা যেমন চাচ্ছি তেমন হবে। এ বিষয়ে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান মেরামত পরবর্তী একটি ওয়ারেন্টি দিবেন বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। রিপোর্টে আরেকটি বিষয় উল্লেখ ছিল যে, ওয়েল্ডিং ছুটে যাওয়ার কারণে গাড়ি চলার সময় বডির সিট শব্দ করতো। আমার সন্দেহ ছিল হয়তো গাড়ির সিট প্রয়োজনের তুলনায় পাতলা দিয়েছে। যার কারণে এই শব্দটা হতো। এ বিষয়ে আমি সর্বপ্রথম রিপোর্ট করার পর জানা গেছে অধিকাংশ গাড়িতেই এ রকম সমস্যা হয়ে গেছে ইতোমধ্যে। তবে আমার ডিপোর অধিনে ডাবল ডেকার এসি চারটি বাসের বিষয়ে তেমন কোনো অভিযোগ পাইনি। ছোটখাটো সমস্যা থাকলেও এক বছরের ওয়ারেন্টি থাকায় ফোন করলে সঙ্গে সঙ্গে তারা এসে সমস্যা সমাধান করে দিয়ে গেছেন।

এ বিষয়ে অতিরিক্ত সচিব ও বিআরটিসির চেয়ারম্যান মো. এহছানে এলাহী বলেন, সম্প্রতি আমি যোগদানের পর অভিযোগ ছিল আমাদের নন এসি বাসের ছাদ দিয়ে পানি পরে। ইতিমধ্যে এর সমাধান হয়ে গেছে। এ বিষয়ে ভারত থেকে টাটা কোম্পানির লোক এসেছে। তারা পরীক্ষা নিরীক্ষা করে নিজ খরচে মেরামত করে দিবে। এবং তাদের কারখানা থেকে আমাদের গাড়ি আনতে যে ট্রান্সপোর্টেশন খরচ সেটাও তারা দিবেন। অতএব আমাদের বাসের ছাদে যে কারিগরি ত্রুটি ছিল সেটা সমাধান হয়েছে। বাকী ত্রুটি সম্পর্কে আমার জানা নেই। যদি অভিযোগ আসে দেখবো। এ বিষয়ে মন্ত্রী আমাকে বলেছেন, যদি বাসের কোনো সমস্যা দেখা দেয় তাহলে আমাকে তদন্ত করতে। তদন্ত করবো মন্ত্রণালয়ের সম্মতিক্রমে। যেটা মন্ত্রণালয় দেখবে।

বাসের বডি সিট নরম হওয়া সম্পর্কে তিনি বলেন, স্পেসিফিকেশন মিটিং এ আমি ছিলাম। এখনকার নতুন বাসের বডিতে তারা ফোম জাতিয় কিছু একটা দিয়ে নরম করে। যাতে করে দুর্ঘটনা হলে ভেতরে যারা প্যাসেঞ্জার থাকেন তারা নিরাপদে থাকবেন। আর বাইরের ধকলটা বাসের ওপর চলে যায়। এটা নরম করার কারণ, বডিটা যেন ফোমের মতো হয়। আমার মনে হয়, এটা উন্নত মানের কোনো স্পেসিফিকেশন। এটা ঠিক আছে। কোম্পানি থেকে অনেক আগেই আমাদের বলা হয়েছিল, বাসের বডি এমন হবে যে, মানুষ দুর্ঘটনায় আহত কম হবে। ফোমের বালিশে চাপা দিলে যেমন বাঁকা হয়ে যায়, পরে ঠিক হয়ে যায়। নতুন বাসের বডিও ঠিক একই রকম করা হয়েছে। তিনি বলেন, নতুন তিন ক্যাটাগরির বাসই চেক করা হবে। নন এসি ইতোমধ্যে করা হয়েছে। এসি এবং ডাবল ডেকার চেক করা হবে।