ঢাকা ০৮:২৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পাখি আর কাশফুলে মোহময় বিহঙ্গ দ্বীপ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০২:৫৫:১১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯
  • ২১০ বার

হাওর বার্তাঃ সুন্দরবন বিধৌত বলেশ্বর নদ। সাগর ও নদের মোহনার সংযোগস্থলে নয়নাভিরাম জলরাশি আর মেঘদলে একাকার। বরগুনার পাথরঘাটার পদ্মা স্লুইস গেট খালের মোহনা থেকে দুই কিলোমিটার দূরে সাগরের সংযোগস্থলে বলেশ্বর নদ এখানে একাকার। তার মধ্যবর্তী স্থানে বিশাল বিস্তীর্ণ এক চর দৃশ্যমান, যার নাম বিহঙ্গ দ্বীপ। কয়েক বছর আগে জেগে ওঠা ওই চরে পরিযায়ী পাখিদের নির্ভয় বিচরণ। চরের পশ্চিমে নদীর তীরঘেঁষা ম্যানগ্রোভ সুন্দরবনের নিসর্গ মায়াময় হাতছানি। অপূর্ব নৈসর্গিক আর নয়নাভিরাম চরটি এখন সম্ভাবনাময় হয়ে উঠছে। শীত এলেই দর্শনার্থীরা সাগর ও নদের সংযোগস্থলে সময় কাটাতে ভিড় করেন। শীতে সুনন্দ পাখির নির্ভয় বিচরণ প্রাণময় করে তোলে নিভৃত চরাচর।

বিহঙ্গ দ্বীপ ঘিরে ভ্রমণপিপাসুদের আনাগোনা বাড়ছে। গত মঙ্গলবার ভর দুপুরে নিভৃত চরটি সরেজমিনে গিয়ে দেখো গেছে, ৫০০ একর জুড়ে চরটির একদিকে সাদা বালু আর একদিকে লাল বালুর মিশেল। আর প্রাকৃতিকভাবে চরজুড়ে শুভ্র শোভন কাশ ফুলের সমারোহ। সম্প্রতি সেখানে বন বিভাগের সৃজিত বনায়ন নতুন শোভা বর্ধন করেছে। শীত বিকেলটা এখানে অন্য এক প্রশান্তির আবহ এনে দেয়। সাগর মোহনায় দাঁড়িয়ে দেখা যায় সূর্যাস্ত। বন বিভাগ এ চরের বনাঞ্চলে হরিণ আর বিপন্ন নানা প্রাণীবৈচিত্র্য অবমুক্ত করে সেখানে অভয়ারণ্য গড়ে তুলছে। ফলে প্রতিদিন পর্যটকরা এখানে এসে জল হাওয়া আর প্রাণ প্রকৃতির শোভন রূপ দর্শনে আসছেন। স্থানীয়রা জানান, ৫০০ হেক্টর জমি জুড়ে দ্বীপটির পরিধি ক্রমবর্ধমান। পাথরঘাটা উপজেলার পদ্মা স্লুইস গেট এলাকা অথবা রুহিতা গ্রাম থেকে মাত্র ১৫ থেকে ২০ মিনিট নদীপথে ইঞ্জিনচালিত নৌকায় খুব সহজে যাওয়া যায় এ দ্বীপে। তাঁদের মতে, সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এখানে গড়ে উঠতে পারে একটি পর্যটন স্পট। আর পাথরঘাটার রুহিতা গ্রামের বলেশ্বর নদের তীর থেকে বিহঙ্গ দ্বীপে যাতায়াতে রজ্জু পথ অথবা রোপওয়ে স্থাপন করতে পারলে বিস্ময়কর রূপ পাবে এ বিহঙ্গ দ্বীপ।

সম্ভাবনাময় পর্যটন স্পট গড়ে তোলার দাবিতে দ্বীপের নাম ফলক ও জাতীয় পতাকা উড়িয়ে আনুষ্ঠানিক পর্যটকদের আকর্ষণে শুভ সূচনা করেন স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীরা। পাথরঘাটার উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তফা গোলাম কবির বলেন, আমরা এটিকে দ্বীপ বিহঙ্গ নামে পরিচিতির জন্য জনসংযোগ চালাচ্ছি। আশা করি এটি সরকারের নজর কাড়বে ও অবকাঠামো উন্নয়ন হবে।

এ বিষয়ে পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. হুমায়ূন কবির বলেন, গত বছর আমি বিহঙ্গ দ্বীপ ঘুরে দেখেছি। এর উন্নয়ন হলে এলাকার আরো একটি পর্যটন স্পট বাড়বে। এ বিষয়ে পাথরঘাটা বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান বলেন, সেখানে বনভূমি সৃষ্টি করা হচ্ছে। এটি একটি আকর্ষণীয় পর্যটন স্পট হতে পারে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

পাখি আর কাশফুলে মোহময় বিহঙ্গ দ্বীপ

আপডেট টাইম : ০২:৫৫:১১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯

হাওর বার্তাঃ সুন্দরবন বিধৌত বলেশ্বর নদ। সাগর ও নদের মোহনার সংযোগস্থলে নয়নাভিরাম জলরাশি আর মেঘদলে একাকার। বরগুনার পাথরঘাটার পদ্মা স্লুইস গেট খালের মোহনা থেকে দুই কিলোমিটার দূরে সাগরের সংযোগস্থলে বলেশ্বর নদ এখানে একাকার। তার মধ্যবর্তী স্থানে বিশাল বিস্তীর্ণ এক চর দৃশ্যমান, যার নাম বিহঙ্গ দ্বীপ। কয়েক বছর আগে জেগে ওঠা ওই চরে পরিযায়ী পাখিদের নির্ভয় বিচরণ। চরের পশ্চিমে নদীর তীরঘেঁষা ম্যানগ্রোভ সুন্দরবনের নিসর্গ মায়াময় হাতছানি। অপূর্ব নৈসর্গিক আর নয়নাভিরাম চরটি এখন সম্ভাবনাময় হয়ে উঠছে। শীত এলেই দর্শনার্থীরা সাগর ও নদের সংযোগস্থলে সময় কাটাতে ভিড় করেন। শীতে সুনন্দ পাখির নির্ভয় বিচরণ প্রাণময় করে তোলে নিভৃত চরাচর।

বিহঙ্গ দ্বীপ ঘিরে ভ্রমণপিপাসুদের আনাগোনা বাড়ছে। গত মঙ্গলবার ভর দুপুরে নিভৃত চরটি সরেজমিনে গিয়ে দেখো গেছে, ৫০০ একর জুড়ে চরটির একদিকে সাদা বালু আর একদিকে লাল বালুর মিশেল। আর প্রাকৃতিকভাবে চরজুড়ে শুভ্র শোভন কাশ ফুলের সমারোহ। সম্প্রতি সেখানে বন বিভাগের সৃজিত বনায়ন নতুন শোভা বর্ধন করেছে। শীত বিকেলটা এখানে অন্য এক প্রশান্তির আবহ এনে দেয়। সাগর মোহনায় দাঁড়িয়ে দেখা যায় সূর্যাস্ত। বন বিভাগ এ চরের বনাঞ্চলে হরিণ আর বিপন্ন নানা প্রাণীবৈচিত্র্য অবমুক্ত করে সেখানে অভয়ারণ্য গড়ে তুলছে। ফলে প্রতিদিন পর্যটকরা এখানে এসে জল হাওয়া আর প্রাণ প্রকৃতির শোভন রূপ দর্শনে আসছেন। স্থানীয়রা জানান, ৫০০ হেক্টর জমি জুড়ে দ্বীপটির পরিধি ক্রমবর্ধমান। পাথরঘাটা উপজেলার পদ্মা স্লুইস গেট এলাকা অথবা রুহিতা গ্রাম থেকে মাত্র ১৫ থেকে ২০ মিনিট নদীপথে ইঞ্জিনচালিত নৌকায় খুব সহজে যাওয়া যায় এ দ্বীপে। তাঁদের মতে, সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এখানে গড়ে উঠতে পারে একটি পর্যটন স্পট। আর পাথরঘাটার রুহিতা গ্রামের বলেশ্বর নদের তীর থেকে বিহঙ্গ দ্বীপে যাতায়াতে রজ্জু পথ অথবা রোপওয়ে স্থাপন করতে পারলে বিস্ময়কর রূপ পাবে এ বিহঙ্গ দ্বীপ।

সম্ভাবনাময় পর্যটন স্পট গড়ে তোলার দাবিতে দ্বীপের নাম ফলক ও জাতীয় পতাকা উড়িয়ে আনুষ্ঠানিক পর্যটকদের আকর্ষণে শুভ সূচনা করেন স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীরা। পাথরঘাটার উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তফা গোলাম কবির বলেন, আমরা এটিকে দ্বীপ বিহঙ্গ নামে পরিচিতির জন্য জনসংযোগ চালাচ্ছি। আশা করি এটি সরকারের নজর কাড়বে ও অবকাঠামো উন্নয়ন হবে।

এ বিষয়ে পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. হুমায়ূন কবির বলেন, গত বছর আমি বিহঙ্গ দ্বীপ ঘুরে দেখেছি। এর উন্নয়ন হলে এলাকার আরো একটি পর্যটন স্পট বাড়বে। এ বিষয়ে পাথরঘাটা বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান বলেন, সেখানে বনভূমি সৃষ্টি করা হচ্ছে। এটি একটি আকর্ষণীয় পর্যটন স্পট হতে পারে।