ঢাকা ০৯:৩৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশের এক-তৃতীয়াংশ মানুষ বাস্তুচ্যুত হওয়ার ঝুঁকিতে: আইএমএফ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:১৩:০১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৯
  • ২৩১ বার

হাওর বার্তা  ডেস্কঃ সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতার কারণে বাংলাদেশের এক-তৃতীয়াংশ মানুষ বাস্তুচ্যুত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষেত্রে দেশটিকে বিশেষ স্পর্শকাতর দেশ হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে আইএমএফ এর একটি মূল্যায়নে ।

বুধবার প্রকাশিত এক অর্থনৈতিক মূল্যায়নে আইএমএফ জানিয়েছে, কয়েকটি সূচকে (গ্লোবাল ক্লাইমেট রিস্ক ইনডেক্স) দেখা গেছে ১৯৯৮-২০১৭ সাল মেয়াদে চরম আবহাওয়াজনিত ঘটনায় আক্রান্ত শীর্ষ দশ দেশের একটি বাংলাদেশ। এই ধরনের ঘটনায় আক্রান্ত হওয়ার কারণে ১৯৯০-২০০৮ মেয়াদে সম্ভাব্য বার্ষিক ক্ষতির পরিমাণ জিডিপির ১ দশমিক ৮ শতাংশ।

জাতিসংঘের জলবায়ু সংক্রান্ত আন্তঃরাষ্ট্রীয় প্যানেলের বিশেষজ্ঞদের বরাত দিয়ে ওই মূল্যায়নে বলা হয়েছে, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি এবং উপকূলে ভাঙনের কারণে ২০৫০ সাল নাগাদ জমির পরিমাণ ১৭ শতাংশ ও খাদ্য উৎপাদন ৩০ শতাংশ কমে যেতে পারে।

তবে, পরিস্থিতির গুরুত্ব অনুধাবন করে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার পরিকল্পনা ও ব্যবস্থা গ্রহণের ক্ষেত্রে অন্যতম সক্রিয় দেশে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশ উল্লেখ করে আইএমএফ বলছে, বৈশ্বিক কার্বন নিঃসরণের মাত্রা দশমিক ৩৫ শতাংশ করার পরেও দেশটি গত কয়েক বছরে জলবায়ু পরিবর্তন বিনিয়োগে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। গ্রহণ করা হয়েছে একটি আর্থিক ফ্রেমওয়ার্ক। এর মধ্য দিয়ে অভিযোজন বিনিয়োগে সম্পদ আসার পথ রাখা হয়েছে। একই সঙ্গে সবুজ অর্থায়ন, সবুজ ব্যাংকিং ও একটি নিবেদিত তহবিল প্রতিষ্ঠার গাইডলাইন তৈরি করা হয়েছে। এছাড়া সবুজ জলবায়ু তহবিলের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মঞ্জুর করা অর্থ চাওয়ার ক্ষেত্রেও সক্রিয় রয়েছে বাংলাদেশ।

বাংলাদেশের বিভিন্ন ইতিবাচক ভূমিকার কথা বললেও বেশ কিছু ক্ষেত্রে উন্নতির সুযোগ রয়েছে বলে জানিয়েছে আইএমএফ। ধারাবাহিকভাবে জ্বালানি ভর্তুকি সংস্কারের কথা জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

আইএমএফের কয়েকটি পরামর্শ হলো- মূল্যবান জ্বালানি ভর্তুকি পর্যায়ক্রমে কমানো এবং এক সময়ে সম্পূর্ণ তুলে দেওয়া। ভর্তুকির পরিবর্তে দরিদ্রদের কাছে নির্দিষ্ট উপায়ে অর্থ হস্তান্তরের পরামর্শ দিয়েছে তারা।

নির্দিষ্ট জ্বালানি পণ্যে ধারাবাহিকভাবে কার্বন ট্যাক্স চালুর বিষয়টি বিবেচনা করার পরামর্শ দিয়েছে আইএমএফ। বিশেষ করে অপেক্ষাকৃত ধনীরা যেসব পণ্য ব্যবহার করেন, যেমন−পেট্রোল ও ডিজেল। এর মাধ্যমে একদিকে রাজস্ব আয় বাড়বে আর অন্যদিকে দূষণ কমবে আর পরিবেশবান্ধব ও নিঃসরণমুক্ত প্রযুক্তি উৎসাহ পাবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

বাংলাদেশের এক-তৃতীয়াংশ মানুষ বাস্তুচ্যুত হওয়ার ঝুঁকিতে: আইএমএফ

আপডেট টাইম : ১১:১৩:০১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৯

হাওর বার্তা  ডেস্কঃ সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতার কারণে বাংলাদেশের এক-তৃতীয়াংশ মানুষ বাস্তুচ্যুত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষেত্রে দেশটিকে বিশেষ স্পর্শকাতর দেশ হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে আইএমএফ এর একটি মূল্যায়নে ।

বুধবার প্রকাশিত এক অর্থনৈতিক মূল্যায়নে আইএমএফ জানিয়েছে, কয়েকটি সূচকে (গ্লোবাল ক্লাইমেট রিস্ক ইনডেক্স) দেখা গেছে ১৯৯৮-২০১৭ সাল মেয়াদে চরম আবহাওয়াজনিত ঘটনায় আক্রান্ত শীর্ষ দশ দেশের একটি বাংলাদেশ। এই ধরনের ঘটনায় আক্রান্ত হওয়ার কারণে ১৯৯০-২০০৮ মেয়াদে সম্ভাব্য বার্ষিক ক্ষতির পরিমাণ জিডিপির ১ দশমিক ৮ শতাংশ।

জাতিসংঘের জলবায়ু সংক্রান্ত আন্তঃরাষ্ট্রীয় প্যানেলের বিশেষজ্ঞদের বরাত দিয়ে ওই মূল্যায়নে বলা হয়েছে, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি এবং উপকূলে ভাঙনের কারণে ২০৫০ সাল নাগাদ জমির পরিমাণ ১৭ শতাংশ ও খাদ্য উৎপাদন ৩০ শতাংশ কমে যেতে পারে।

তবে, পরিস্থিতির গুরুত্ব অনুধাবন করে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার পরিকল্পনা ও ব্যবস্থা গ্রহণের ক্ষেত্রে অন্যতম সক্রিয় দেশে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশ উল্লেখ করে আইএমএফ বলছে, বৈশ্বিক কার্বন নিঃসরণের মাত্রা দশমিক ৩৫ শতাংশ করার পরেও দেশটি গত কয়েক বছরে জলবায়ু পরিবর্তন বিনিয়োগে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। গ্রহণ করা হয়েছে একটি আর্থিক ফ্রেমওয়ার্ক। এর মধ্য দিয়ে অভিযোজন বিনিয়োগে সম্পদ আসার পথ রাখা হয়েছে। একই সঙ্গে সবুজ অর্থায়ন, সবুজ ব্যাংকিং ও একটি নিবেদিত তহবিল প্রতিষ্ঠার গাইডলাইন তৈরি করা হয়েছে। এছাড়া সবুজ জলবায়ু তহবিলের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মঞ্জুর করা অর্থ চাওয়ার ক্ষেত্রেও সক্রিয় রয়েছে বাংলাদেশ।

বাংলাদেশের বিভিন্ন ইতিবাচক ভূমিকার কথা বললেও বেশ কিছু ক্ষেত্রে উন্নতির সুযোগ রয়েছে বলে জানিয়েছে আইএমএফ। ধারাবাহিকভাবে জ্বালানি ভর্তুকি সংস্কারের কথা জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

আইএমএফের কয়েকটি পরামর্শ হলো- মূল্যবান জ্বালানি ভর্তুকি পর্যায়ক্রমে কমানো এবং এক সময়ে সম্পূর্ণ তুলে দেওয়া। ভর্তুকির পরিবর্তে দরিদ্রদের কাছে নির্দিষ্ট উপায়ে অর্থ হস্তান্তরের পরামর্শ দিয়েছে তারা।

নির্দিষ্ট জ্বালানি পণ্যে ধারাবাহিকভাবে কার্বন ট্যাক্স চালুর বিষয়টি বিবেচনা করার পরামর্শ দিয়েছে আইএমএফ। বিশেষ করে অপেক্ষাকৃত ধনীরা যেসব পণ্য ব্যবহার করেন, যেমন−পেট্রোল ও ডিজেল। এর মাধ্যমে একদিকে রাজস্ব আয় বাড়বে আর অন্যদিকে দূষণ কমবে আর পরিবেশবান্ধব ও নিঃসরণমুক্ত প্রযুক্তি উৎসাহ পাবে।