ঢাকা ০২:৩২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম

বারোমাসি তরমুজ ‘ব্ল্যাকবেরি’ চাষে সফলতা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৪:২৭:৫৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯
  • ২৬৪ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ প্রথমবারের মতো মাচায় বারোমাসি তরমুজের চাষ করে সফলতা অর্জন করেছেন জয়পুরহাটের কৃষকরা। জেলার পাঁচবিবি উপজেলার ভারাহুত গ্রামে প্রায় ২ হেক্টর জমিতে এবার কালচে রঙের তাইওয়ান ব্ল্যাকবেরি ও হলুদ রঙের মধুমালা জাতের বারোমাসি তরমুজসহ পরীক্ষামূলক ভাবে চাষ হচ্ছে ভারতীয় জেসমিন-১ ও ২ জাতের তরমুজ

সরেজমিন ঘুরে জানা যায়, ভারাহুত গ্রামের মুছা মিয়া ২০১৮ সালে আড়াই শতাংশ জমিতে ৪ হাজার ৭শ টাকা খরচ করে পরীক্ষামূলক ভাবে চাষ করেণ ব্ল্যাকবেরি জাতের ওই তরমুজ। ২ মাসেই তিনি ২৪ হাজার টাকার তরমুজ বিক্রি করেণ। এ সাফল্য দেখে পাশবর্তী এলাকার অনেকেই তাইওয়ান জাতের এ ব্ল্যাকবেরি তরমুজ চাষে এগিয়ে আসেন। এখন চাষ হচ্ছে প্রায় ২ হেক্টর জমিতে। ভারাহুত, কয়তাহার, কুসুমসারা, দাউসারা, মাহমুদপুর গ্রামের জমি তরমুজ চাষের উপযোগী হওয়ায় ওই এলাকা তরমুজ চাষের জন্য বেছে নেয়া হয় বলে জানান বে-সরকারি উন্নয়ন সংস্থা ’এসো’র কৃষিবিদ মোজাফফর রহমান।

ব্ল্যাকবেরি ও মধুমালা জাতের তরমুজ শীতকাল ছাড়া বছরের সব সময় চাষ করা যায়। মাচা পদ্ধতিতে এ তরমুজের চাষ হওয়ায় উৎপাদন খরচ কম, বাজারে দামও ভালো। মালচিং পেপার বেডে সেটিং ও নেটিংয়ের ফলে বৃষ্টি, পোকামাকড়, ইঁদুরের আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। মাচা ও মালচিং পেপার তিনবার ব্যবহার করতে পারায় ২য় ও ৩য় ধাপে তরমুজের উৎপাদন খরচ কম হয়।

কীটনাশক ছাড়া বিষমুক্তভাবে কেঁচো সার, কম্পোষ্ট, বায়োনিম, ফেরোম্যান ফাঁদ ব্যবহারের কারণে রোগবালাইয়ের প্রকোপও কম। ভারাহুত গামের কৃষক রেজুয়ান এবার ৪৭ হাজার টাকা খরচ করে ৫৫ শতাংশ জমিতে তরমুজ চাষ করে খরচ বাদে লাভ করেন ১ লাখ ৬৮ হাজার টাকা। পার্শ্ববর্তী বাবু নামে অপর কৃষক ৪২ হাজার টাকা খরচ করে ৩০ শতাংশ জমিতে তরমুজ চাষ করে লাভ করেছেন ১ লাখ ২৮ হাজার টাকা। ২২ হাজার টাকা খরচ করে ১৫ শতাংশ জমিতে তরমুজ চাষ করে ১ লাখ ৩ হাজার টাকা লাভ করেছেন বলে জানান পাশের চাষী রবিউল ইসলাম।

কৃষকদের উন্নত জাতের বারোমাসি ওই তরমুজ চাষে উদ্বুদ্ধ করাসহ আর্থিক ভাবে সহযোগিতা করছেন স্থানীয় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা এ্যাহেড স্যোশাল অর্গানাইজেশন (এসো)। তরমুজ চাষ করা কৃষকদের সঙ্গে আলাপ কালে জানা যায়, প্রতিবিঘা জমিতে তরমুজ চাষ করতে খরচ পড়ে ৩৫/৪০ হাজার টাকা। প্রতি বিঘায় তরমুজের উৎপাদন হয়ে থাকে ৪ থেকে ৫ হাজার কেজি। বীজ লাগানোর দিন থেকে ৬৫/৭০ দিনের মধ্যে বিক্রি উপযোগী হয়। বাজারে দাম বেশি হওয়ায় এক বিঘা জমিতে উন্নত জাতের ওই তরমুজ চাষ করে খরচ বাদে লাভ থাকছে ১ লাখ থেকে দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত।

বর্তমান বাজারে ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে এ তরমুজ। একদিকে যেমন ফলন ভালো অন্যদিকে উৎপাদন খরচও কম সবমিলে ভালো লাভ থাকার কারণে আশ পাশের কৃষকরাও উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন তাইওয়ান জাতের এ তরমুজ চাষে। ফলন কিভাবে আরও বৃদ্ধি করা যায় এ ব্যপারে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেয়া হচ্ছে বলে জানান জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ সুধেন্দ্র নাথ রায়।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

সরকারি চাকরিতে ২২ হাজার নতুন নিয়োগের ঘোষণা আসছে

বারোমাসি তরমুজ ‘ব্ল্যাকবেরি’ চাষে সফলতা

আপডেট টাইম : ০৪:২৭:৫৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯

হাওর বার্তা ডেস্কঃ প্রথমবারের মতো মাচায় বারোমাসি তরমুজের চাষ করে সফলতা অর্জন করেছেন জয়পুরহাটের কৃষকরা। জেলার পাঁচবিবি উপজেলার ভারাহুত গ্রামে প্রায় ২ হেক্টর জমিতে এবার কালচে রঙের তাইওয়ান ব্ল্যাকবেরি ও হলুদ রঙের মধুমালা জাতের বারোমাসি তরমুজসহ পরীক্ষামূলক ভাবে চাষ হচ্ছে ভারতীয় জেসমিন-১ ও ২ জাতের তরমুজ

সরেজমিন ঘুরে জানা যায়, ভারাহুত গ্রামের মুছা মিয়া ২০১৮ সালে আড়াই শতাংশ জমিতে ৪ হাজার ৭শ টাকা খরচ করে পরীক্ষামূলক ভাবে চাষ করেণ ব্ল্যাকবেরি জাতের ওই তরমুজ। ২ মাসেই তিনি ২৪ হাজার টাকার তরমুজ বিক্রি করেণ। এ সাফল্য দেখে পাশবর্তী এলাকার অনেকেই তাইওয়ান জাতের এ ব্ল্যাকবেরি তরমুজ চাষে এগিয়ে আসেন। এখন চাষ হচ্ছে প্রায় ২ হেক্টর জমিতে। ভারাহুত, কয়তাহার, কুসুমসারা, দাউসারা, মাহমুদপুর গ্রামের জমি তরমুজ চাষের উপযোগী হওয়ায় ওই এলাকা তরমুজ চাষের জন্য বেছে নেয়া হয় বলে জানান বে-সরকারি উন্নয়ন সংস্থা ’এসো’র কৃষিবিদ মোজাফফর রহমান।

ব্ল্যাকবেরি ও মধুমালা জাতের তরমুজ শীতকাল ছাড়া বছরের সব সময় চাষ করা যায়। মাচা পদ্ধতিতে এ তরমুজের চাষ হওয়ায় উৎপাদন খরচ কম, বাজারে দামও ভালো। মালচিং পেপার বেডে সেটিং ও নেটিংয়ের ফলে বৃষ্টি, পোকামাকড়, ইঁদুরের আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। মাচা ও মালচিং পেপার তিনবার ব্যবহার করতে পারায় ২য় ও ৩য় ধাপে তরমুজের উৎপাদন খরচ কম হয়।

কীটনাশক ছাড়া বিষমুক্তভাবে কেঁচো সার, কম্পোষ্ট, বায়োনিম, ফেরোম্যান ফাঁদ ব্যবহারের কারণে রোগবালাইয়ের প্রকোপও কম। ভারাহুত গামের কৃষক রেজুয়ান এবার ৪৭ হাজার টাকা খরচ করে ৫৫ শতাংশ জমিতে তরমুজ চাষ করে খরচ বাদে লাভ করেন ১ লাখ ৬৮ হাজার টাকা। পার্শ্ববর্তী বাবু নামে অপর কৃষক ৪২ হাজার টাকা খরচ করে ৩০ শতাংশ জমিতে তরমুজ চাষ করে লাভ করেছেন ১ লাখ ২৮ হাজার টাকা। ২২ হাজার টাকা খরচ করে ১৫ শতাংশ জমিতে তরমুজ চাষ করে ১ লাখ ৩ হাজার টাকা লাভ করেছেন বলে জানান পাশের চাষী রবিউল ইসলাম।

কৃষকদের উন্নত জাতের বারোমাসি ওই তরমুজ চাষে উদ্বুদ্ধ করাসহ আর্থিক ভাবে সহযোগিতা করছেন স্থানীয় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা এ্যাহেড স্যোশাল অর্গানাইজেশন (এসো)। তরমুজ চাষ করা কৃষকদের সঙ্গে আলাপ কালে জানা যায়, প্রতিবিঘা জমিতে তরমুজ চাষ করতে খরচ পড়ে ৩৫/৪০ হাজার টাকা। প্রতি বিঘায় তরমুজের উৎপাদন হয়ে থাকে ৪ থেকে ৫ হাজার কেজি। বীজ লাগানোর দিন থেকে ৬৫/৭০ দিনের মধ্যে বিক্রি উপযোগী হয়। বাজারে দাম বেশি হওয়ায় এক বিঘা জমিতে উন্নত জাতের ওই তরমুজ চাষ করে খরচ বাদে লাভ থাকছে ১ লাখ থেকে দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত।

বর্তমান বাজারে ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে এ তরমুজ। একদিকে যেমন ফলন ভালো অন্যদিকে উৎপাদন খরচও কম সবমিলে ভালো লাভ থাকার কারণে আশ পাশের কৃষকরাও উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন তাইওয়ান জাতের এ তরমুজ চাষে। ফলন কিভাবে আরও বৃদ্ধি করা যায় এ ব্যপারে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেয়া হচ্ছে বলে জানান জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ সুধেন্দ্র নাথ রায়।