ঢাকা ০৪:৫৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম

বাংলাদেশে বিনিয়োগ করলে কানাডার বিনোয়োগকারীরা লাভবান হবেন

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৮:৫৫:৩৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯
  • ২৭১ বার

সরকার বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় ১০০টি স্পেশাল ইকোনমিক জোন গড়ে তুলছে উল্লেখ করে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, কানাডার বিনিয়োগকারীগণ এখানে বিনিয়োগ করলে লাভবান হবেন। বাংলাদেশ সরকার বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বেশ কিছু সুযোগ-সুবিধা প্রদান করছে। কানাডার ব্যবসায়ীগণ বিনিয়োগে এগিয়ে এলে এ সকল সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা হবে।

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি মঙ্গলবার কানাডার টরন্টোতে বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল এবং অন্টারিও চেম্বার অব কমার্সের (ওসিসি) যৌথ আয়োজনে প্রথমবারের মতো ‘বাংলাদেশ-কানাডা বাণিজ্য ফোরাম-২০১৯’ এর সভায় এসব কথা বলেন।

কানাডায় সফররত বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, কানাডা-বাংলাদেশ বাণিজ্য ফোরাম উভয় দেশের বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে। ব্যবসায়ীদের এ ফোরাম উভয় দেশের ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীদের মধ্যে সেতুবন্ধন হিসেবে কাজ করবে। তারা একে অপরের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য সম্পর্কিত তথ্য আদান-প্রদান করতে পারবেন এবং সুবিধা জনক খাতে বাণিজ্য-বিনিয়োগ বৃদ্ধি করতে পারবেন।

সভায় টিপু মুনশি জানান, বাংলাদেশের সঙ্গে কানাডার এখন মোট বাণিজ্য প্রায় ১৮০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর মধ্যে বাংলাদেশ রপ্তানি করে ১৩৩৯.৮০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য এবং আমদানি করে ৫৮৯.২৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য।

কানাডা বাংলাদেশকে ২০০৩ সালে থেকে পোলট্রি, ডেইরি, ডিম, অস্ত্র ও গোলাবারুদ ব্যতীত সকল পণ্যে শুল্কমুক্ত বাণিজ্য সুবিধা দিচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশ এলডিসি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পরও কানাডা শুল্কমুক্ত বাণিজ্য সুবিধা অব্যাহত রাখবে বলে বাংলাদেশ আশা করে। উভয় দেশের ব্যবসায়ীগণ প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখলে কানাডায় বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্য ও বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাড়ছে। বাংলাদেশের সঙ্গে কানাডার বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি করতে এ ফোরাম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির উপস্থিতিতে এ সময় এফবিসিসিআই এবং ওসিসি-এর মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। এফবিসিসিআই এর সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম এবং ওসিসি-এর সভাপতি রকো রসি নিজ নিজ চেম্বারের পক্ষে সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন।

বাণিজ্য ফোরামে প্রথম প্যানেলের আলোচ্য বিষয় ছিল ‘কিভাবে কানাডা বাংলাদেশের সাথে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণ করতে পারে’। বিষয়ের ওপর বাংলাদেশ সফটওয়্যার এবং তথ্য সেবা সংগঠন (বেসিস) এর সভাপতি সৈয়দ সাদাত আলমাস কবির আলোচনা করেন। ফোরামের অতিথি অন্টারিও প্রদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন, কর্মসংস্থান ও বাণিজ্যমন্ত্রী ভিক্টর ফেডালি বাংলাদেশের সঙ্গে কানাডার বাণিজ্য বৃদ্ধি ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বৃদ্ধির ওপর গুরুত্ব আরোপ করে বলেন, এ সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের মাধ্যমে উভয় দেশের ব্যবসায়ীগণ উদার অর্থনৈতিক নীতি গ্রহণের মধ্য দিয়ে ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি, উভয় দেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক দৃঢ় ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত করবে।

উল্লেখ্য, বৈশ্বিক সরবরাহ সংযোগ, উচ্চ মূল্যের পোশাক সামগ্রী, হালকা প্রযুক্তি পণ্য, ওষুধ সামগ্রী, ডিজিটাল সেবা, পাট পণ্যের শিল্প ভিত্তিক ব্যবহার, সামুদ্রিক মৎস্য, হিমায়িত খাদ্য, পরিবহন ও যোগাযোগ, উচ্চ শিক্ষা, স্বাস্থ্য সেবা ইত্যাদি খাতে উভয় দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির অপার সম্ভাবনা রয়েছে।

অনুষ্ঠানে কানাডায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মিজানুর রহমান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া, টরন্টোতে বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল নাঈম উদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী,  বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব তপন কান্তি ঘোষ, বাংলাদেশ ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ খোরশেদ ওয়াহাব, অন্টারিও চেম্বারের সহসভাপতি লুই ডিপামাসহ বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের সদস্যগণ ফোরামের বৈঠকে অংশ গ্রহণ করেন। ফোরামে কানাডার বিভিন্ন বহুজাতিক কোম্পানির শীর্ষ নির্বাহীবৃন্দ, কানাডার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান, শিল্পপতি, আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নির্বাহীবৃন্দ, কানাডায় বাংলাদেশের ব্যবসায়ীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

সরকারি চাকরিতে ২২ হাজার নতুন নিয়োগের ঘোষণা আসছে

বাংলাদেশে বিনিয়োগ করলে কানাডার বিনোয়োগকারীরা লাভবান হবেন

আপডেট টাইম : ০৮:৫৫:৩৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯

সরকার বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় ১০০টি স্পেশাল ইকোনমিক জোন গড়ে তুলছে উল্লেখ করে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, কানাডার বিনিয়োগকারীগণ এখানে বিনিয়োগ করলে লাভবান হবেন। বাংলাদেশ সরকার বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বেশ কিছু সুযোগ-সুবিধা প্রদান করছে। কানাডার ব্যবসায়ীগণ বিনিয়োগে এগিয়ে এলে এ সকল সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা হবে।

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি মঙ্গলবার কানাডার টরন্টোতে বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল এবং অন্টারিও চেম্বার অব কমার্সের (ওসিসি) যৌথ আয়োজনে প্রথমবারের মতো ‘বাংলাদেশ-কানাডা বাণিজ্য ফোরাম-২০১৯’ এর সভায় এসব কথা বলেন।

কানাডায় সফররত বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, কানাডা-বাংলাদেশ বাণিজ্য ফোরাম উভয় দেশের বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে। ব্যবসায়ীদের এ ফোরাম উভয় দেশের ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীদের মধ্যে সেতুবন্ধন হিসেবে কাজ করবে। তারা একে অপরের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য সম্পর্কিত তথ্য আদান-প্রদান করতে পারবেন এবং সুবিধা জনক খাতে বাণিজ্য-বিনিয়োগ বৃদ্ধি করতে পারবেন।

সভায় টিপু মুনশি জানান, বাংলাদেশের সঙ্গে কানাডার এখন মোট বাণিজ্য প্রায় ১৮০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর মধ্যে বাংলাদেশ রপ্তানি করে ১৩৩৯.৮০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য এবং আমদানি করে ৫৮৯.২৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য।

কানাডা বাংলাদেশকে ২০০৩ সালে থেকে পোলট্রি, ডেইরি, ডিম, অস্ত্র ও গোলাবারুদ ব্যতীত সকল পণ্যে শুল্কমুক্ত বাণিজ্য সুবিধা দিচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশ এলডিসি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পরও কানাডা শুল্কমুক্ত বাণিজ্য সুবিধা অব্যাহত রাখবে বলে বাংলাদেশ আশা করে। উভয় দেশের ব্যবসায়ীগণ প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখলে কানাডায় বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্য ও বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাড়ছে। বাংলাদেশের সঙ্গে কানাডার বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি করতে এ ফোরাম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির উপস্থিতিতে এ সময় এফবিসিসিআই এবং ওসিসি-এর মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। এফবিসিসিআই এর সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম এবং ওসিসি-এর সভাপতি রকো রসি নিজ নিজ চেম্বারের পক্ষে সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন।

বাণিজ্য ফোরামে প্রথম প্যানেলের আলোচ্য বিষয় ছিল ‘কিভাবে কানাডা বাংলাদেশের সাথে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণ করতে পারে’। বিষয়ের ওপর বাংলাদেশ সফটওয়্যার এবং তথ্য সেবা সংগঠন (বেসিস) এর সভাপতি সৈয়দ সাদাত আলমাস কবির আলোচনা করেন। ফোরামের অতিথি অন্টারিও প্রদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন, কর্মসংস্থান ও বাণিজ্যমন্ত্রী ভিক্টর ফেডালি বাংলাদেশের সঙ্গে কানাডার বাণিজ্য বৃদ্ধি ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বৃদ্ধির ওপর গুরুত্ব আরোপ করে বলেন, এ সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের মাধ্যমে উভয় দেশের ব্যবসায়ীগণ উদার অর্থনৈতিক নীতি গ্রহণের মধ্য দিয়ে ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি, উভয় দেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক দৃঢ় ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত করবে।

উল্লেখ্য, বৈশ্বিক সরবরাহ সংযোগ, উচ্চ মূল্যের পোশাক সামগ্রী, হালকা প্রযুক্তি পণ্য, ওষুধ সামগ্রী, ডিজিটাল সেবা, পাট পণ্যের শিল্প ভিত্তিক ব্যবহার, সামুদ্রিক মৎস্য, হিমায়িত খাদ্য, পরিবহন ও যোগাযোগ, উচ্চ শিক্ষা, স্বাস্থ্য সেবা ইত্যাদি খাতে উভয় দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির অপার সম্ভাবনা রয়েছে।

অনুষ্ঠানে কানাডায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মিজানুর রহমান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া, টরন্টোতে বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল নাঈম উদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী,  বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব তপন কান্তি ঘোষ, বাংলাদেশ ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ খোরশেদ ওয়াহাব, অন্টারিও চেম্বারের সহসভাপতি লুই ডিপামাসহ বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের সদস্যগণ ফোরামের বৈঠকে অংশ গ্রহণ করেন। ফোরামে কানাডার বিভিন্ন বহুজাতিক কোম্পানির শীর্ষ নির্বাহীবৃন্দ, কানাডার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান, শিল্পপতি, আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নির্বাহীবৃন্দ, কানাডায় বাংলাদেশের ব্যবসায়ীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।