ঢাকা ১২:২৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রফতানি আয়ে কমেছে বাণিজ্য ঘাটতি

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০১:২৯:৪৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০১৯
  • ২২৫ বার

গত অর্থবছরের তুলনায় বহির্বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশের লেনদেন পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। গেল ২০১৮-১৯ অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে বৈদেশিক বাণিজ্য ঘাটতি ১৪ শতাংশ ৭৬ শতাংশ কমেছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রফতানি আয় ও রেমিট্যান্স বেড়েছে। অন্যদিকে আমদানি ব্যয় কমে আসায় বিদেশের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি কমেছে। চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরে চাপ আরও কমে আসবে বলে মনে করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈদেশিক লেনদেনের ভারসাম্যের (ব্যালেন্স অব পেমেন্ট) পরিসংখ্যানের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮-১৯ অর্থবছরের (জুলাই-জুন ) সময়ে পণ্য বাণিজ্যে ঘাটতি হয়েছে এক হাজার ৫৪৯ কোটি ৪০ লাখ ডলার। তার আগের অর্থবছরের একই সময়ে যা ছিল এক হাজার ৮১৭ কোটি ৮০ লাখ ডলার। বছরের ব্যবধানে পয়েন্ট টু পয়েন্টে ঘাটতি কমেছে ২৬৮ কোটি ৪০ লাখ ডলার বা ১৪ শতাংশ ৭৬ শতাংশ। রফতানিতে আগের চেয়ে বেশি প্রবৃদ্ধি ও আমদানিতে কম প্রবৃদ্ধির কারণে বাণিজ্য ঘাটতি কমেছে। এ সময়ে রফতানি আয় বেড়েছে ১০ দশমিক ০৯ শতাংশ। আর আমদানি ব্যয় বেড়েছে ১ দশমিক ৭৯ শতাংশ।

আলোচিত সময়ে ইপিজেডসহ রফতানি খাতে বাংলাদেশ আয় করেছে তিন হাজার ৯৯৪ কোটি ৪০ লাখ ডলার। এর বিপরীতে আমদানি বাবদ ব্যয় করেছে পাঁচ হাজার ৫৪৩ কোটি ৯০ লাখ ডলার। সেই হিসাবে গেল অর্থবছর শেষে দেশে বৈদেশিক বাণিজ্য ঘাটতি দাঁড়ায় এক হাজার ৫৪৯ কোটি ৪০ লাখ ডলার যা বাংলাদেশি মুদ্রায় (বিনিময় হার ৮৪ টাকা দরে) এক লাখ ৩০ হাজার ১৫০ কোটি ৬০ লাখ টাকা ছাড়িয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, বহির্বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশের চলতি হিসাব ঋণাত্মক রয়েছে। তবে গত বছরের তুলনায় এ ঋণাত্মক কমেছে। গত অর্থবছরের চলতি হিসাবে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৫২৫ কোটি ৪০ লাখ ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৯৫৬ কোটি ৭০ লাখ ডলার।

আমদানি ব্যয় কমার পাশাপাশি প্রবাসী বাংলাদেশিদের পাঠানো রেমিট্যান্স প্রবাহ চাঙা ছিল গত অর্থবছরে। গেল অর্থবছরে রেমিট্যান্স বেড়েছে ৯ দশমিক ৬০ শতাংশ। এ ছাড়া প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) উল্লেখযোগ্য অঙ্কে বেড়েছে। সব মিলিয়ে চলতি হিসাবে ঘাটতি কমেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, চলতি হিসাবে উদ্বৃত্ত থাকার অর্থ হলো নিয়মিত লেনদেনে দেশকে কোনো ঋণ করতে হচ্ছে না। আর ঘাটতি থাকলে সরকারকে ঋণ নিয়ে তা পূরণ করতে হয়। সে হিসাবে উন্নয়নশীল দেশের চলতি হিসাবে উদ্বৃত্ত থাকা ভালো।

এদিকে আলোচিত সময়ে সেবাখাতে বেতনভাতা বাবদ বিদেশিদের পরিশোধ করেছে এক হাজার ৫০ কোটি ডলার। আর এর বিপরীতে বাংলাদেশ এ খাতে আয় করেছে মাত্র ৬৭৮ কোটি ৬০ লাখ ডলার। এ হিসাবে সেবায় বাণিজ্যে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৩৭১ কোটি ৫০ খাল ডলার। যা গত ২০১৭-১৮ অর্থবছরের একই সময়ে ছিল (ঘাটতি) ৪২০ কোটি ৫০ লাখ ডলার।

প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, আলোচিত সময়ে দেশে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) এসেছে ৪৫০ কোটি ১০ লাখ ডলার, যা গত অর্থবছরের চেয়ে ৩৬ দশমিক ৮১ শতাংশ বেশি। এর মধ্যে নিট এফডিআই বেড়েছে ৪২ দশমিক ৮৬ শতাংশ। এদিকে এফডিআই বাড়লেও দেশের শেয়ারবাজারে বিদেশি বিনিয়োগ ব্যাপক হারে কমেছে। অর্থবছরের শেয়ারবাজারে মাত্র ১৭ কোটি ২০ লাখ ডলারের বিদেশি বিনিয়োগ এসেছে। যা তার আগের অর্থবছরে ছিল ৩৪ কোটি ৯০ লাখ ডলার।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

রফতানি আয়ে কমেছে বাণিজ্য ঘাটতি

আপডেট টাইম : ০১:২৯:৪৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০১৯

গত অর্থবছরের তুলনায় বহির্বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশের লেনদেন পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। গেল ২০১৮-১৯ অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে বৈদেশিক বাণিজ্য ঘাটতি ১৪ শতাংশ ৭৬ শতাংশ কমেছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রফতানি আয় ও রেমিট্যান্স বেড়েছে। অন্যদিকে আমদানি ব্যয় কমে আসায় বিদেশের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি কমেছে। চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরে চাপ আরও কমে আসবে বলে মনে করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈদেশিক লেনদেনের ভারসাম্যের (ব্যালেন্স অব পেমেন্ট) পরিসংখ্যানের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮-১৯ অর্থবছরের (জুলাই-জুন ) সময়ে পণ্য বাণিজ্যে ঘাটতি হয়েছে এক হাজার ৫৪৯ কোটি ৪০ লাখ ডলার। তার আগের অর্থবছরের একই সময়ে যা ছিল এক হাজার ৮১৭ কোটি ৮০ লাখ ডলার। বছরের ব্যবধানে পয়েন্ট টু পয়েন্টে ঘাটতি কমেছে ২৬৮ কোটি ৪০ লাখ ডলার বা ১৪ শতাংশ ৭৬ শতাংশ। রফতানিতে আগের চেয়ে বেশি প্রবৃদ্ধি ও আমদানিতে কম প্রবৃদ্ধির কারণে বাণিজ্য ঘাটতি কমেছে। এ সময়ে রফতানি আয় বেড়েছে ১০ দশমিক ০৯ শতাংশ। আর আমদানি ব্যয় বেড়েছে ১ দশমিক ৭৯ শতাংশ।

আলোচিত সময়ে ইপিজেডসহ রফতানি খাতে বাংলাদেশ আয় করেছে তিন হাজার ৯৯৪ কোটি ৪০ লাখ ডলার। এর বিপরীতে আমদানি বাবদ ব্যয় করেছে পাঁচ হাজার ৫৪৩ কোটি ৯০ লাখ ডলার। সেই হিসাবে গেল অর্থবছর শেষে দেশে বৈদেশিক বাণিজ্য ঘাটতি দাঁড়ায় এক হাজার ৫৪৯ কোটি ৪০ লাখ ডলার যা বাংলাদেশি মুদ্রায় (বিনিময় হার ৮৪ টাকা দরে) এক লাখ ৩০ হাজার ১৫০ কোটি ৬০ লাখ টাকা ছাড়িয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, বহির্বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশের চলতি হিসাব ঋণাত্মক রয়েছে। তবে গত বছরের তুলনায় এ ঋণাত্মক কমেছে। গত অর্থবছরের চলতি হিসাবে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৫২৫ কোটি ৪০ লাখ ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৯৫৬ কোটি ৭০ লাখ ডলার।

আমদানি ব্যয় কমার পাশাপাশি প্রবাসী বাংলাদেশিদের পাঠানো রেমিট্যান্স প্রবাহ চাঙা ছিল গত অর্থবছরে। গেল অর্থবছরে রেমিট্যান্স বেড়েছে ৯ দশমিক ৬০ শতাংশ। এ ছাড়া প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) উল্লেখযোগ্য অঙ্কে বেড়েছে। সব মিলিয়ে চলতি হিসাবে ঘাটতি কমেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, চলতি হিসাবে উদ্বৃত্ত থাকার অর্থ হলো নিয়মিত লেনদেনে দেশকে কোনো ঋণ করতে হচ্ছে না। আর ঘাটতি থাকলে সরকারকে ঋণ নিয়ে তা পূরণ করতে হয়। সে হিসাবে উন্নয়নশীল দেশের চলতি হিসাবে উদ্বৃত্ত থাকা ভালো।

এদিকে আলোচিত সময়ে সেবাখাতে বেতনভাতা বাবদ বিদেশিদের পরিশোধ করেছে এক হাজার ৫০ কোটি ডলার। আর এর বিপরীতে বাংলাদেশ এ খাতে আয় করেছে মাত্র ৬৭৮ কোটি ৬০ লাখ ডলার। এ হিসাবে সেবায় বাণিজ্যে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৩৭১ কোটি ৫০ খাল ডলার। যা গত ২০১৭-১৮ অর্থবছরের একই সময়ে ছিল (ঘাটতি) ৪২০ কোটি ৫০ লাখ ডলার।

প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, আলোচিত সময়ে দেশে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) এসেছে ৪৫০ কোটি ১০ লাখ ডলার, যা গত অর্থবছরের চেয়ে ৩৬ দশমিক ৮১ শতাংশ বেশি। এর মধ্যে নিট এফডিআই বেড়েছে ৪২ দশমিক ৮৬ শতাংশ। এদিকে এফডিআই বাড়লেও দেশের শেয়ারবাজারে বিদেশি বিনিয়োগ ব্যাপক হারে কমেছে। অর্থবছরের শেয়ারবাজারে মাত্র ১৭ কোটি ২০ লাখ ডলারের বিদেশি বিনিয়োগ এসেছে। যা তার আগের অর্থবছরে ছিল ৩৪ কোটি ৯০ লাখ ডলার।