ঢাকা ০৭:২৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দেশে বেড়াতে এসে ডেঙ্গুতে প্রাণ গেল ইতালি প্রবাসী নারীর

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৪:২৩:৩৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ অগাস্ট ২০১৯
  • ২৪৪ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ স্বামী-সন্তান নিয়ে দেশে বেড়াতে এসে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাফসা বেগম লিপি (৩৪) নামের এক ইতালি প্রবাসী নারীর মৃত্যু হয়েছে। হাফসা লিপি চার দিন ধরে ঢাকার আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

সেখানে আইসিইউতে থাকা অবস্থায় সোমবার রাতে তার মৃত্যু হয় বলে হাসপাতালের পরিচালক জসিমউদ্দিন খান জানিয়েছেন। জানা যায়, হাফসার স্বামী সর্দার আব্দুল সাত্তার তরুণ (৩৬) নিজেও ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন। দুই সন্তান অলি (১২) ও আয়ানকে (৬) নিয়ে সপ্তাহ তিনেক আগে দেশে এসে কলাবাগানে উঠেছিলেন তারা।

দেশে ফেরার পরই তার স্বামী আবুল সাত্তার জ্বরে আক্রান্ত হন। তার অসুস্থতার মধ্যেই গত ২৮ জুলাই ডেঙ্গু আক্রান্ত হন লিপি। স্বামী অসুস্থ থাকায় তার পাশে বাসায় থাকার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। হাসপাতালে ভর্তি হননি।

পরে শুক্রবার হঠাৎ শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালের আইসিইউতে রাখা হয়। সোমবার রাতে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান লিপি।

সাত্তারের বড় বোন ডা. নুরুন্নাহার জানান, ঢাকায় আসার পরপরই জ্বরে পড়েন তার ভাই। আমার ভাইয়ের অসুস্থতার মধ্যেই হাফসার জ্বর আসে। গত ২৮ জুলাই এনএস১ পরীক্ষা করা হলে ডেঙ্গু ধরা পড়ে। কিন্তু আমার ভাই বাসায় অসুস্থ বলে হাফসা স্বামীর সঙ্গে বাসায় থাকার সিদ্ধান্ত নেয়।

কিন্তু শুক্রবার সকালে হঠাৎ করে ওর অবস্থা খারাপের দিকে গেলে আমরা ওকে হাসপাতালে নিয়ে যাই। ওইদিনই ওকে আইসিইউতে নেওয়া হয়।

মঙ্গলবার সকালে হাফসার মৃতদেহ নিয়ে শরীয়তপুরে তার শ্বশুর বাড়ির উদ্দেশে রওয়ানা হন স্বজনরা।

শরীয়পুরের ভেদরগঞ্জ থানার সর্দার বাড়িতে পারিবারিক কবরস্থানে হাফসাকে দাফন করা হবে বলে জানান নুরুন্নাহার।

চলতি বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মোট ১৮ জনের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, যদিও গণমাধ্যমের খবরে মৃত্যুর সংখ্যা নব্বই ছাড়িয়েছে।

এদিকে রাজধানী ঢাকা থেকে শুরু হয়ে দেশব্যাপী ভয়াবহ আকারে ছড়িয়ে পড়েছে এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু রোগ। প্রতিদিনই হাসপাতালে বাড়ছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা। গতকালও দুই হাজারের বেশি মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এমন দাবি করলেও বিশেষজ্ঞরা বলছেন পরিস্থিতি এখন আর নিয়ন্ত্রণে নেই। মার্চ মাসে স্বাস্থ্য অধিদফতরের সতর্কতা আমলে নিয়ে এডিস মশার উৎপত্তিস্থল ধ্বংস করা গেলে পরিস্থিতি এমন ভয়াবহ হতো না।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

দেশে বেড়াতে এসে ডেঙ্গুতে প্রাণ গেল ইতালি প্রবাসী নারীর

আপডেট টাইম : ০৪:২৩:৩৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ অগাস্ট ২০১৯

হাওর বার্তা ডেস্কঃ স্বামী-সন্তান নিয়ে দেশে বেড়াতে এসে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাফসা বেগম লিপি (৩৪) নামের এক ইতালি প্রবাসী নারীর মৃত্যু হয়েছে। হাফসা লিপি চার দিন ধরে ঢাকার আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

সেখানে আইসিইউতে থাকা অবস্থায় সোমবার রাতে তার মৃত্যু হয় বলে হাসপাতালের পরিচালক জসিমউদ্দিন খান জানিয়েছেন। জানা যায়, হাফসার স্বামী সর্দার আব্দুল সাত্তার তরুণ (৩৬) নিজেও ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন। দুই সন্তান অলি (১২) ও আয়ানকে (৬) নিয়ে সপ্তাহ তিনেক আগে দেশে এসে কলাবাগানে উঠেছিলেন তারা।

দেশে ফেরার পরই তার স্বামী আবুল সাত্তার জ্বরে আক্রান্ত হন। তার অসুস্থতার মধ্যেই গত ২৮ জুলাই ডেঙ্গু আক্রান্ত হন লিপি। স্বামী অসুস্থ থাকায় তার পাশে বাসায় থাকার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। হাসপাতালে ভর্তি হননি।

পরে শুক্রবার হঠাৎ শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালের আইসিইউতে রাখা হয়। সোমবার রাতে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান লিপি।

সাত্তারের বড় বোন ডা. নুরুন্নাহার জানান, ঢাকায় আসার পরপরই জ্বরে পড়েন তার ভাই। আমার ভাইয়ের অসুস্থতার মধ্যেই হাফসার জ্বর আসে। গত ২৮ জুলাই এনএস১ পরীক্ষা করা হলে ডেঙ্গু ধরা পড়ে। কিন্তু আমার ভাই বাসায় অসুস্থ বলে হাফসা স্বামীর সঙ্গে বাসায় থাকার সিদ্ধান্ত নেয়।

কিন্তু শুক্রবার সকালে হঠাৎ করে ওর অবস্থা খারাপের দিকে গেলে আমরা ওকে হাসপাতালে নিয়ে যাই। ওইদিনই ওকে আইসিইউতে নেওয়া হয়।

মঙ্গলবার সকালে হাফসার মৃতদেহ নিয়ে শরীয়তপুরে তার শ্বশুর বাড়ির উদ্দেশে রওয়ানা হন স্বজনরা।

শরীয়পুরের ভেদরগঞ্জ থানার সর্দার বাড়িতে পারিবারিক কবরস্থানে হাফসাকে দাফন করা হবে বলে জানান নুরুন্নাহার।

চলতি বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মোট ১৮ জনের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, যদিও গণমাধ্যমের খবরে মৃত্যুর সংখ্যা নব্বই ছাড়িয়েছে।

এদিকে রাজধানী ঢাকা থেকে শুরু হয়ে দেশব্যাপী ভয়াবহ আকারে ছড়িয়ে পড়েছে এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু রোগ। প্রতিদিনই হাসপাতালে বাড়ছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা। গতকালও দুই হাজারের বেশি মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এমন দাবি করলেও বিশেষজ্ঞরা বলছেন পরিস্থিতি এখন আর নিয়ন্ত্রণে নেই। মার্চ মাসে স্বাস্থ্য অধিদফতরের সতর্কতা আমলে নিয়ে এডিস মশার উৎপত্তিস্থল ধ্বংস করা গেলে পরিস্থিতি এমন ভয়াবহ হতো না।