হাওর বার্তা ডেস্কঃ বাড়লো পাসপোর্টের ফি। বর্তমানে জরুরি ফি ভ্যাটসহ ৩৪৫০ টাকা ও অতি জরুরি ফি ভ্যাটসহ ৬৯০০ টাকা। তবে ভ্যাট ছাড়াই ইলেকট্রনিক পাসপোর্ট (ই-পাসপোর্ট)-এর সর্বোচ্চ ফি ১২ হাজার টাকা এবং সর্বনিম্ন ফি তিন হাজার পাঁচশ’ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া বিদেশে বাংলাদেশ দূতাবাসে সাধারণ আবেদনকারীদের জন্য সর্বোচ্চ ফি ২২৫ মার্কিন ডলার এবং সর্বনিম্ন ফি ১০০ মার্কিন ডলার ধরা হয়েছে। বিদেশে বাংলাদেশ দূতাবাসে শ্রমিক ও শিক্ষার্থীদের জন্য সর্বোচ্চ ফি ২২৫ মার্কিন ডলার এবং সর্বনিম্ন ফি ৩০ মার্কিন ডলার ধরা হয়েছে। সবক্ষেত্রে ই-পাসপোর্ট ৪৮ ও ৬৪ পৃষ্ঠার হবে। পৃষ্ঠা অনুযায়ী আলাদা ফি নির্ধারণ করে গত ১লা আগস্ট একটি পরিপত্র জারি করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ। পরিপত্রে সাধারণ, জরুরি ও অতি জরুরি এ তিনভাবে ই-পাসপোর্টের ফি নির্ধারণ করা হয়েছে।
বিদেশে বাংলাদেশ দূতাবাসে সাধারণ আবেদনকারীদের জন্য ৪৮ পৃষ্ঠার ৫ বছর মেয়াদি সাধারণ ফি ১০০ মার্কিন ডলার ও জরুরি ফি ১৫০ মার্কিন ডলার এবং ১০ বছর মেয়াদি সাধারণ ফি ১২৫ মার্কিন ডলার ও জরুরি ফি ১৭৫ মার্কিন ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া বিদেশে বাংলাদেশ দূতাবাসে সাধারণ আবেদনকারীদের জন্য ৬৪ পৃষ্ঠার ৫ বছর মেয়াদি সাধারণ ফি ১৫০ মার্কিন ডলার ও জরুরি ফি ২০০ মার্কিন ডলার এবং ১০ বছর মেয়াদি সাধারণ ফি ১৭৫ মার্কিন ডলার ও জরুরি ফি ২২৫ মার্কিন ডলার ধার্য্য করা হয়েছে।
এদিকে বিদেশে বাংলাদেশ দূতাবাসে শ্রমিক ও শিক্ষার্থীদের জন্য ৪৮ পৃষ্ঠার ৫ বছর মেয়াদি সাধারণ ফি ৩০ মার্কিন ডলার ও জরুরি ফি ৪৫ মার্কিন ডলার এবং ১০ বছর মেয়াদি সাধারণ ফি ৫০ মার্কিন ডলার ও জরুরি ফি ৭৫ মার্কিন ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া বিদেশে বাংলাদেশ দূতাবাসে শ্রমিক ও শিক্ষার্থীদের জন্য ৬৪ পৃষ্ঠার ৫ বছর মেয়াদি সাধারণ ফি ১৫০ মার্কিন ডলার ও জরুরি ফি ২০০ মার্কিন ডলার এবং ১০ বছর মেয়াদি সাধারণ ফি ১৭৫ মার্কিন ডলার ও জরুরি ফি ২২৫ মার্কিন ডলার ধার্য্য করা হয়েছে। পরিপত্রে ই-পাসপোর্টের ফর্ম পূরণের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ই-পাসপোর্টের আবেদনপত্র অনলাইন এ পূরণ করা যাবে। এছাড়া পিডিএফ ফরম্যাট ডাউনলোড করে যে কোন কম্পিউটারে ফরমটি পূরণ করা যাবে। ই-পাসপোর্টের আবেদনের ক্ষেত্রে কোন কাগজপত্র সত্যায়ন করার প্রয়োজন হবে না।
এছাড়া কোন ছবি সংযোজন করা এবং তা সত্যায়ন করার দরকার হবে না। ই-পাসপোর্টের আবেদনপত্র জাতীয় পরিচয় পত্র (এনআইডি) বা জন্মনিবন্ধন সনদ (বিআরসি) অনুযায়ি পূরণ করতে হবে। তবে অপ্রাপ্ত বয়স্ক (১৮ বছরের কম) আবেদনকারি যার জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নাই, তাঁর পিতা এবং মাতার জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নম্বর অবশ্যই উল্লেখ করতে হবে। পরিপত্রে বলা হয়েছে, ই-পাসপোর্টের আবেদনের সঙ্গে ১৮ বছরের নীচে হলে জন্মনিবন্ধন সনদ (বিআরসি), ১৮ বছর হলে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) বা জন্মনিবন্ধন সনদ (বিআরসি) এবং ১৮ বছরের বেশি হলে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) অবশ্যই লাগবে। তবে ১৮ বছরের নিচে সব আবেদনকারীর ই-পাসপোর্টের মেয়াদ হবে পাঁচ বছর। এতে বলা হয়েছে, টেকনিক্যাল সনদগুলো (যেমন: ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার ও ড্রাইভার) আপলোড করতে হবে। এছাড়া এনওসি, জিও, প্রত্যয়নপত্র, পেনশন বই অবশ্যই আপলোড করতে হবে। ইস্যুকারি অথরিটি তাদের নিজ নিজ ওয়েবসাইটে এটা আপলোড করতে হবে।
সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও রাষ্ট্রয়াত্ব কর্পোরেশনের স্থায়ী কর্মচারি, অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারি ও তাদের নির্ভরশীল স্ত্রী বা স্বামী এবং সরকারি চাকুরীজীবিদের ১৫ বছরের কম বয়সের সন্তান সাধারণ ফি জমা দিয়ে অতি জরুরি সুবিধা পাবেন। দেশে পাসপোর্টের ফি জমা দিলে নির্ধারিত ভ্যাট এবং বিদেশে আবেদনের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট বাংলাদেশ মিশন কর্তৃক সারচার্জসহ নির্ধারিত ফি জমা দিতে হবে। পরিপত্রে বলা হয়েছে, কূটনৈতিক পাসপোর্ট পেতে আবেদনকারীদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কনস্যুলার এন্ড ওয়েলফেয়ার উইং বা প্রযোজ্য ক্ষেত্রে বহিরাগমন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের (ডিআইপি) প্রধান কার্যালয় বরাবর আবেদন করতে হবে।
বৈদেশিক মিশন থেকে নতুন পাসপোর্টের আবেদন করা হলে স্থায়ী ঠিকানায় বাংলাদেশে যোগাযোগের ঠিকানা থাকতে হবে। অতি জরুরি পাসপোর্টের আবেদনের ক্ষেত্রে নিজ উদ্যোগে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সনদ সংগ্রহ করে আবশ্যিকভাবে আবেদনের সঙ্গে দাখিল করতে হবে। এতে বলা হয়েছে, দেশের অভ্যন্তরে অতি জরুরি পাসপোর্ট পেতে আবেদনের সঙ্গে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স দিলে অন্যান্য সব তথ্য ঠিক থাকলে ৭২ ঘন্টা বা তিন দিনের মধ্যে পাসপোর্ট দেয়া হবে। দেশের অভ্যন্তরে জরুরি পাসপোর্ট পেতে আবেদনের সঙ্গে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স দিলে অন্যান্য সব তথ্য ঠিক থাকলে ৭ কর্ম দিবসের মধ্যে পাসপোর্ট দেয়া হবে।
দেশের অভ্যন্তরে রেগুলার পাসপোর্ট পেতে আবেদনের সঙ্গে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স দিলে অন্যান্য সব তথ্য ঠিক থাকলে ২১ কর্ম দিবসের মধ্যে পাসপোর্ট দেয়া হবে। এছাড়া দেশের অভ্যন্তরে অতি জরুরি পাসপোর্ট রিইস্যুর ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৪৮ ঘন্টার মধ্যে পাসপোর্ট দেয়া হবে। জরুরি পাসপোর্ট রিইস্যুর ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৭২ ঘন্টার মধ্যে পাসপোর্ট দেয়া হবে। রেগুলার পাসপোর্ট রিইস্যুর ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৭ কর্ম দিবসের মধ্যে পাসপোর্ট দেয়া হবে। পরিপত্রে বলা হয়েছে, নির্ধারিত মেয়াদ শেষ হলে পাসপোর্ট রিইস্যুর ক্ষেত্রে কোন অতিরিক্ত তথ্য সংযোজন বা ছবি পরিবর্তনের প্রয়োজন না হলে ব্যক্তিগতভাবে উপস্থিতির দরকার নেই।
রিইস্যুর ক্ষেত্রে যদি সংশোধনের প্রয়োজন হয় সেক্ষেত্রে ব্যক্তিগতভাবে সংশ্লিষ্ট পাসপোর্ট ইস্যুকারি কর্তৃপক্ষের কাছে হাজির হওয়ার দরকার হতে পারে। কোন ব্যক্তি মারা গেলে তাঁর পাসপোর্ট বাতিলের জন্য নিকটস্থ পাসপোর্ট অফিস বা বাংলাদেশ মিশনে জমা দিতে হবে। বাতিল করা পাসপোর্ট আবেদনের ভিত্তিতে মৃত ব্যক্তির বৈধ উত্তরাধিকারদের কাছে ফেরত দেয়া যাবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সহসাই ই-পাসপোর্ট চালু হতে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে ফিরলেই ই-পাসপোর্টের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হবে। তখন থেকেই পরিপত্র অনুযায়ি কাজ করবে বহিরাগমন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর।