হাওর বার্তা ডেস্কঃ ঋণ ও আমানতের সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিটে নিয়ে আসতে ৯/৬ শতাংশের প্রজ্ঞাপন শিগগির জারি করা হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। গত রোববার দেশের সব বেসরকারি ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের (এমডি) সঙ্গে বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান অর্থমন্ত্রী।
রাজধানীর মতিঝিলে বাংলাদেশ ব্যাংকের জাহাঙ্গীর আলম কনফারেন্স রুমে বেসরকারি ব্যাংকের ঊর্ধ্বতনদের সঙ্গে বৈঠক করেন আ হ ম মুস্তফা কামাল।
এর আগে ব্যাংকগুলোকে ঋণের সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিটে নামিয়ে আনার নির্দেশনা দেয়া হয়। তখন ব্যাংকগুলোর দাবি ছিল, আমানতের সুদের হার ৬ শতাংশে নামিয়ে না আনলে ঋণের সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিট অর্থাৎ ৯ শতাংশে আনা সম্ভব হবে না। আজকের বৈঠকে বিষয়টি উপস্থাপন করা হলে অর্থমন্ত্রী এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারির আশ্বাস দেন।
সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে ১৬টি ব্যাংক সিঙ্গেল ডিজিট বাস্তবায়ন করছে। এর মধ্যে সাতটি সরকারি। বাকিরা সবাই কথা দিয়েছে যে, তারা সিঙ্গেল ডিজিট বাস্তবায়ন করবে। এটা তাদের করতেই হবে। সুদের হার নয়-ছয়ের ক্ষেত্রে শিগগিরই বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।
তিনি বলেন, যারা ব্যাংক ব্যবসার অনুমোদন দেয় তারা তা বাতিল করতে পারে। সুতরাং নয়-ছয়ের আদেশ বাস্তবায়ন নিয়ে চিন্তার কোনো কারণ নেই। এই মুহূর্তে সরকারিসহ মোট ১৬টি ব্যাংক ঋণ বিতরণের ক্ষেত্রে সিঙ্গেল ডিজিট বাস্তবায়ন করেছে। আস্তে আস্তে সব ব্যাংকই সিঙ্গেল ডিজিটে চলে আসবে।
আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, হঠাৎ করে আমাদের অর্থনীতি বড় হয়ে যাওয়ায় ব্যাংকিং খাত সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে। এখন সেই পরিস্থিতি মোকাবিলায় কিছুটা সময় প্রয়োজন। আশা করি, খুব শিগগিরই আমরা সেই জায়গায় পৌঁছাতে পারব। আগামী সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে ব্যাংক খাতের পরিস্থিতি ভালো হবে। তারল্য সংকট, খেলাপি ঋণসহ ব্যাংক খাতের সার্বিক পরিস্থিতি উন্নয়নের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে, যা অক্টোবর মাসের মাঝামাঝি সময়ে সংবাদমাধ্যমে ঘোষণা করা হবে।
ঋণখেলাপিদের বিষয়ে তিনি বলেন, নতুনভাবে যে আইন আসছে সেখানে সবকিছুর পরিষ্কার বিবরণ থাকবে। আগের আইনে তাদের নির্দিষ্ট কোনো সংজ্ঞা নেই। তবে তার মধ্যে থেকেও যতটুকু আইনি ব্যবস্থা নেওয়া যায় আমরা তা নিচ্ছি। তবে ক্ষতিগ্রস্ত কেউই হবে না।
অর্থমন্ত্রী বলেন, আমরা চাইলেই একটি ব্যাংক বন্ধ করে দিতে পারি না। কারণ, এগুলো আমাদের দেশের সাধারণ মানুষের কষ্টার্জিত টাকা। চাইলেই একটি ব্যাংক বন্ধ করে দেয়া সম্ভব নয়। ফারমার্স ব্যাংক যখন সংকটের মুখে পড়েছিল, তখন আমরা তাদেরকে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেছি। এই মুহূর্তে বেসিক ব্যাংক একটি দুর্দশাগ্রস্ত সময় পার করছে। আমরা তাদেরকেও বিভিন্ন ধরনের সুবিধা দেয়ার আশ্বাস দিয়েছি। কোনো প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিলেই সমস্যার সমাধান হবে না।