ঢাকা ০৭:৫৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দুই বছর গর্তে থাকা সেই কাদেরকে উদ্ধার করলো পুলিশ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:৫৩:৩৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩ অগাস্ট ২০১৯
  • ১৯০ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ উচ্চ মাধ্যমিক পাস করা আব্দুল কাদের মোড়লের এক সময় সুখের সংসার ছিল। কৃষিকাজ করেও স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বেশ ভালোভাবেই চলছিলেন তিনি।

এরপর হঠাৎ অস্বাভাবিক আচরণ করতে শুরু করেন। তার এমন আচরণে পরিবারের বাকি সদস্যরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন তাকে নিয়ে। ধীরে ধীরে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন কাদের। এভাবেই দশ বছর ধরে মস্তিষ্ক বিকৃত হয়ে চলতে থাকে তার জীবন। বিভিন্ন ডাক্তার দেখিয়েও খুব বেশি সুফল মেলেনি। উশৃঙ্খল আচরণ আর অস্বাভাবিক কর্মকাণ্ডে অতিষ্ঠ করে তুলতো পরিবারসহ এলাকাবাসীকে।

এক পর্যায়ে বাধ্য হয়ে পরিবারের লোকজন বাড়ির পাশে এক গর্তে তাকে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখতো। গত দুই বছর ধরে সেখানেই ঝড়, বৃষ্টি, রোদের মাঝে থাকতে হতো তাকে।

বৃহস্পতিবার ‘হাতে-পায়ে শিকল, দুই বছর অন্ধকার গর্তে জীবন কাটাচ্ছে আব্দুল কাদের’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সংবাদটি সাতক্ষীরা ডিসির নজরে আসলে তিনি তালা ইউএনওকে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন।

এরপর শুক্রবার দুপুরে আব্দুল কাদেরকে শিকলবন্দি অবস্থা থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে তালা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে তালা থানার ওসি মেহেদী রাসেল বলেন, প্রাথমিকভাবে মনে হয়েছে আব্দুল কাদেরর মস্তিষ্ক বিকৃত। সে ক্ষিপ্ত হলেই পরিবারের সদস্য ও এলাকার মানুষদের ওপর হামলা করত। এজন্য নিরুপায় হয়ে তার পায়ে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখতো পরিবারের সদস্যরা।

আব্দুল কাদেরের প্রতিবেশী খেশরা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ফজলুল হক জানান, খুব শান্ত স্বভাবের ছিল কাদের। উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেছে। হঠাৎ পাগল হয়ে যাওয়ার কোনো সঠিক কারণ আজও জানা যায়নি। তবে কাদেরের পরিবারের বাকি সদস্যরা একটু অস্বাভাবিক ধরনের।

দশ বছর আগে কাদের মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেললেও তিন বছর আগে একেবারেই পাগল হয়ে যায়। পরিবারটিও অসহায়। বিভিন্ন সময় চিকিৎসার জন্য তাকে আমি সহযোগিতা করেছি। তবে যথাযথ চিকিৎসা হয়তো আব্দুল কাদের পায়নি। সুচিকিৎসা পেলে এতদিনে হয়তো সুস্থ হয়ে যেত।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

দুই বছর গর্তে থাকা সেই কাদেরকে উদ্ধার করলো পুলিশ

আপডেট টাইম : ১২:৫৩:৩৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩ অগাস্ট ২০১৯

হাওর বার্তা ডেস্কঃ উচ্চ মাধ্যমিক পাস করা আব্দুল কাদের মোড়লের এক সময় সুখের সংসার ছিল। কৃষিকাজ করেও স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বেশ ভালোভাবেই চলছিলেন তিনি।

এরপর হঠাৎ অস্বাভাবিক আচরণ করতে শুরু করেন। তার এমন আচরণে পরিবারের বাকি সদস্যরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন তাকে নিয়ে। ধীরে ধীরে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন কাদের। এভাবেই দশ বছর ধরে মস্তিষ্ক বিকৃত হয়ে চলতে থাকে তার জীবন। বিভিন্ন ডাক্তার দেখিয়েও খুব বেশি সুফল মেলেনি। উশৃঙ্খল আচরণ আর অস্বাভাবিক কর্মকাণ্ডে অতিষ্ঠ করে তুলতো পরিবারসহ এলাকাবাসীকে।

এক পর্যায়ে বাধ্য হয়ে পরিবারের লোকজন বাড়ির পাশে এক গর্তে তাকে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখতো। গত দুই বছর ধরে সেখানেই ঝড়, বৃষ্টি, রোদের মাঝে থাকতে হতো তাকে।

বৃহস্পতিবার ‘হাতে-পায়ে শিকল, দুই বছর অন্ধকার গর্তে জীবন কাটাচ্ছে আব্দুল কাদের’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সংবাদটি সাতক্ষীরা ডিসির নজরে আসলে তিনি তালা ইউএনওকে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন।

এরপর শুক্রবার দুপুরে আব্দুল কাদেরকে শিকলবন্দি অবস্থা থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে তালা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে তালা থানার ওসি মেহেদী রাসেল বলেন, প্রাথমিকভাবে মনে হয়েছে আব্দুল কাদেরর মস্তিষ্ক বিকৃত। সে ক্ষিপ্ত হলেই পরিবারের সদস্য ও এলাকার মানুষদের ওপর হামলা করত। এজন্য নিরুপায় হয়ে তার পায়ে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখতো পরিবারের সদস্যরা।

আব্দুল কাদেরের প্রতিবেশী খেশরা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ফজলুল হক জানান, খুব শান্ত স্বভাবের ছিল কাদের। উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেছে। হঠাৎ পাগল হয়ে যাওয়ার কোনো সঠিক কারণ আজও জানা যায়নি। তবে কাদেরের পরিবারের বাকি সদস্যরা একটু অস্বাভাবিক ধরনের।

দশ বছর আগে কাদের মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেললেও তিন বছর আগে একেবারেই পাগল হয়ে যায়। পরিবারটিও অসহায়। বিভিন্ন সময় চিকিৎসার জন্য তাকে আমি সহযোগিতা করেছি। তবে যথাযথ চিকিৎসা হয়তো আব্দুল কাদের পায়নি। সুচিকিৎসা পেলে এতদিনে হয়তো সুস্থ হয়ে যেত।