ঢাকা ০৩:৪৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঘুষের টাকা ভাগ করার সময় ৭ শুল্ক কর্মকর্তা আটক

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০১:২৪:২০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ জুলাই ২০১৯
  • ২৯৮ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ রাজশাহী নগরীর উপশহরের সোনামসজিদ স্থলবন্দরের রাজস্বের টাকা ফাঁকি দেয়ার ঘটনায় কাস্টমস কর্মকাতার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ ঘুষের টাকা, ডলার ও আস্ত্রসহ ৭জনকে আটক করেছে নগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

বুধবার (২৪ জুলাই) দিবাগত গভীর রাতে ডিবি-ডিসি আবু আহাম্মেদ আল মামুনের নেতৃত্বে ডিবির একটি দলের এক অভিযান চালিয়ে তাদেরকে আটক করে। গোয়েন্দা পুলিশের সূত্র মতে, আটককৃতদের মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয়ে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার মামলা দায়েরের পর তাদের আদালতে পাঠানো হবে। আটককৃত ওই ব্যক্তিরা কয়েকদিন ধরে গোয়েন্দা নজরদারিতে ছিলেন এবং তাদের অধিকাংশই সোনামসজিদ স্থলবন্দরে কর্মরত সিঅ্যা-এফ এজেন্ট।

আটককৃত ব্যক্তিরা হলেন–আবু সাইদ নয়ন, আহসান কবির মিঠু, মনিরুল ইসলাম জুয়েল, বায়েজিদ হোসেন, আব্দুল মান্নান, আবু হাসান রুবেল ও আব্দুল মালেক। তবে, অভিযানের বিষয়টি বুঝতে পেরে কয়েকজন কাষ্টমস কর্মকর্তা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছেন বলে জানা গেছে।

জানা গেছে, আটককৃত নয়নের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরে। মিঠুর বাড়ি শিবগঞ্জের কালুপুর গ্রামে। মিঠু শিবগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সিঅ্যা-এফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশানের সাবেক সভাপতি আব্দুর রশিদের জামাই। বায়েজিদ হোসেনের বাড়ি সোনামসজিদ। আব্দুল মান্নানের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের রাজারামপুরে এবং আবু হাসান রুবেল সোনামসজিদ স্থলবন্দরের দায়িত্বে নিয়োজিত কাষ্টমসের সহকারি কমিশনার বেলাল হোসেনের পিয়ন।

সোনামসজিদ স্থলবন্দরের মাধ্যমে বিভিন্ন আমদানি পণ্যে শুল্ক ফাঁকিতে নিয়োজিত একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেটের সদস্য আটককৃত ব্যক্তিরা। শুল্ক কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগসাজস করে বিভিন্ন পণ্যে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে আসছিল বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।

বুধবার মনিরুল ইসলাম জুয়েলের লাইসেন্সে দুই ট্রাক ভারতীয় প্রসাধনী সামগ্রী আসে। এতে মোট ৮০ লাখ টাকা রাজস্ব আদায় হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মাত্র ২০লাখ টাকা দিয়ে ট্রাক দুটি বন্দর থেকে ছাড়িয়ে নেয়া হয় তড়িঘড়ি করে। শুল্ক কর্মকর্তাদের ঘুষের জন্য তোলা ২০ লাখ টাকা রাজশাহীতে আনা হয়।

ওই টাকা শুল্ক কর্মকর্তাদের মাঝে ভাগ করার জন্য ওই দিন রাত ৯টায় কাষ্টমস গোয়েন্দার সুপারিটেন্ড্যান্ট আইয়ুব আলীর উপশহরের ১৭১ নম্বরের বাসায় জড়ো হন তারা। এরপর ভাগ-বাটোয়ারা শেষে রাত সাড়ে ১১ টার দিকে তারা বাসাটি ত্যাগের প্রস্তুতি নিচ্ছিল। এসময় পুলিশ তাদের আটক করেন।

পুলিশ আরো জানায়, সোনামসজিদ স্থলবন্দরে রাজস্ব ফাঁকির টাকা প্রায় প্রতিরাতেই কাষ্টমস কর্মকর্তা আইয়ুব আলীর রাজশাহীর বাসায় আনা হতো এবং সেখান থেকেই ভাগ বাটোয়ারা হয়ে আসছিল। কাষ্টমস কর্মকর্তা আইয়ুব আলী ঘুষের টাকার ভাগাভাগি সমন্বয় করে আসছিলেন। আইয়ুব আলী রাজশাহী বিভাগীয় কাষ্টমস সদর দপ্তরে কর্মরত। তবে সম্প্রতি বিষয়টি টের পেয়ে গোয়েন্দা নজরদারি চলছিল বাড়িটিসহ সংশ্লিষ্টদের ওপর।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

ঘুষের টাকা ভাগ করার সময় ৭ শুল্ক কর্মকর্তা আটক

আপডেট টাইম : ০১:২৪:২০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ জুলাই ২০১৯

হাওর বার্তা ডেস্কঃ রাজশাহী নগরীর উপশহরের সোনামসজিদ স্থলবন্দরের রাজস্বের টাকা ফাঁকি দেয়ার ঘটনায় কাস্টমস কর্মকাতার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ ঘুষের টাকা, ডলার ও আস্ত্রসহ ৭জনকে আটক করেছে নগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

বুধবার (২৪ জুলাই) দিবাগত গভীর রাতে ডিবি-ডিসি আবু আহাম্মেদ আল মামুনের নেতৃত্বে ডিবির একটি দলের এক অভিযান চালিয়ে তাদেরকে আটক করে। গোয়েন্দা পুলিশের সূত্র মতে, আটককৃতদের মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয়ে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার মামলা দায়েরের পর তাদের আদালতে পাঠানো হবে। আটককৃত ওই ব্যক্তিরা কয়েকদিন ধরে গোয়েন্দা নজরদারিতে ছিলেন এবং তাদের অধিকাংশই সোনামসজিদ স্থলবন্দরে কর্মরত সিঅ্যা-এফ এজেন্ট।

আটককৃত ব্যক্তিরা হলেন–আবু সাইদ নয়ন, আহসান কবির মিঠু, মনিরুল ইসলাম জুয়েল, বায়েজিদ হোসেন, আব্দুল মান্নান, আবু হাসান রুবেল ও আব্দুল মালেক। তবে, অভিযানের বিষয়টি বুঝতে পেরে কয়েকজন কাষ্টমস কর্মকর্তা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছেন বলে জানা গেছে।

জানা গেছে, আটককৃত নয়নের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরে। মিঠুর বাড়ি শিবগঞ্জের কালুপুর গ্রামে। মিঠু শিবগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সিঅ্যা-এফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশানের সাবেক সভাপতি আব্দুর রশিদের জামাই। বায়েজিদ হোসেনের বাড়ি সোনামসজিদ। আব্দুল মান্নানের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের রাজারামপুরে এবং আবু হাসান রুবেল সোনামসজিদ স্থলবন্দরের দায়িত্বে নিয়োজিত কাষ্টমসের সহকারি কমিশনার বেলাল হোসেনের পিয়ন।

সোনামসজিদ স্থলবন্দরের মাধ্যমে বিভিন্ন আমদানি পণ্যে শুল্ক ফাঁকিতে নিয়োজিত একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেটের সদস্য আটককৃত ব্যক্তিরা। শুল্ক কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগসাজস করে বিভিন্ন পণ্যে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে আসছিল বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।

বুধবার মনিরুল ইসলাম জুয়েলের লাইসেন্সে দুই ট্রাক ভারতীয় প্রসাধনী সামগ্রী আসে। এতে মোট ৮০ লাখ টাকা রাজস্ব আদায় হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মাত্র ২০লাখ টাকা দিয়ে ট্রাক দুটি বন্দর থেকে ছাড়িয়ে নেয়া হয় তড়িঘড়ি করে। শুল্ক কর্মকর্তাদের ঘুষের জন্য তোলা ২০ লাখ টাকা রাজশাহীতে আনা হয়।

ওই টাকা শুল্ক কর্মকর্তাদের মাঝে ভাগ করার জন্য ওই দিন রাত ৯টায় কাষ্টমস গোয়েন্দার সুপারিটেন্ড্যান্ট আইয়ুব আলীর উপশহরের ১৭১ নম্বরের বাসায় জড়ো হন তারা। এরপর ভাগ-বাটোয়ারা শেষে রাত সাড়ে ১১ টার দিকে তারা বাসাটি ত্যাগের প্রস্তুতি নিচ্ছিল। এসময় পুলিশ তাদের আটক করেন।

পুলিশ আরো জানায়, সোনামসজিদ স্থলবন্দরে রাজস্ব ফাঁকির টাকা প্রায় প্রতিরাতেই কাষ্টমস কর্মকর্তা আইয়ুব আলীর রাজশাহীর বাসায় আনা হতো এবং সেখান থেকেই ভাগ বাটোয়ারা হয়ে আসছিল। কাষ্টমস কর্মকর্তা আইয়ুব আলী ঘুষের টাকার ভাগাভাগি সমন্বয় করে আসছিলেন। আইয়ুব আলী রাজশাহী বিভাগীয় কাষ্টমস সদর দপ্তরে কর্মরত। তবে সম্প্রতি বিষয়টি টের পেয়ে গোয়েন্দা নজরদারি চলছিল বাড়িটিসহ সংশ্লিষ্টদের ওপর।