ঢাকা ০১:২৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

‘নেককার স্ত্রী’ দুনিয়ার শ্রেষ্ঠ সম্পদ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৩:৫২:২২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ জুলাই ২০১৯
  • ৩৫৭ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ দুনিয়ার শ্রেষ্ঠ সম্পদ সতীসাধ্বী রমণী। কথায় আছে, ‘সংসার সুখি হয় রমণীর গুনে’। একজন নারীর সংশ্রব ব্যতিত পুরুষের জীবনের পরিপূর্ণতা আসে না এটা মানতেই হবে। সুখে–দুঃখে নারীই পুরুষের জীবনসঙ্গিনী। সুতরাং দাম্পত্য জীবনে এ নারী যদি পুত-পবিত্র সচ্চরিত্রা হয়, তাহলে জীবন স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়।

সমস্যা সংকুল জীবনেও শান্তির ফল্গুধারা বয়ে যায়। যে শান্তি নারী-পুরুষের বৈবাহিক জীবনের মাধ্যমে শুরু হয়। বিবাহিত জীবনে নেককার স্ত্রীর গুরুত্ব অত্যধিক। তাই ইসলাম স্ত্রীকে দিয়েছে সর্বোত্তম মর্যাদা। বৈবাহিক জীবনে নারী অধিকার সম্পর্কে কুরআন হাদিসের বক্তব্য তুলে ধরা হলো-

নারীর বিয়ে: ইসলাম পূর্ব যুগে বৈবাহিক সম্পর্ক ছাড়াই মহিলাদেরকে পুরুষের মালিকানাধীন মনে করা হতো এবং একজন পুরুষ যত খুশী বিয়ে করতে পারত। ইসলাম নারীদের জন্য বিবাহকে বৈধ এবং আবশ্যক করেছেন। এ বিবাহের মাধ্যমে একজন নারীকে একটি সম্মানজনক আসনে সমাসীন করা হয়।আল্লাহ বলেন, ‘আর তোমাদের মধ্যকার পুরুষ আর মহিলাদের মধ্য থেকে তাদের বিয়ে দিয়ে দাও যারা দাম্পত্য ছাড়া জীবন অতিবাহিত করে।’ (সুরা নূর)

নারীর মোহর: মোহরকে নারীর ইজ্জতের গ্যারান্টি করা হয়েছে। ইসলাম পূর্ব যুগে নারীরা তাদের বিয়ের দেন মোহরের মালিকানা পেত না। ইসলাম নারীর মর্যাদা রক্ষায় মোহরের বিধান প্রবর্তন করে তা স্বামীর উপর ফরজ সাব্যস্থ করেছেন। তাদেরকে শিক্ষা দিয়েছেন যে, যদি মোহর রূপে অঢেল সম্পদও দেয়া হয় তা ফেরত নেয়া যাবে না। কেননা মোহর বিবাহের শর্ত হওয়ায় সেগুলো মহিলার মালিকানাধীন হয়ে যায়।আল্লাহ বলেন, আর তোমরা স্ত্রীদেরকে তাদের মোহর দিয়ে দাও খুশি মনে। তারা যদি খুশি হয়ে তা থেকে (কিছু) অংশ ছেড়ে দেয়, তবে তা তোমরা স্বাচ্ছন্দ্যে ভোগ কর। (সুরা নিসা : আয়াত ৪)

স্ত্রী হিসেবে নারী: মোহর নির্ধারণের মাধ্যমে নারী-পুরুষ পরস্পর ইজাব-কবুল করে একজন পুরুষ একজন নারীকে স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করে। স্ত্রী হিসেবে নারীকে এক স্বকীয় মর্যাদায় অধিষ্টিত করেছে ইসলাম। তাই স্বামীকে স্ত্রীর সাথে সদ্ব্যবহারের নির্দেশ দিয়ে আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা সদাচরণের ভিত্তিতে তোমাদের স্ত্রীদের সাথে জীবন-যাপন কর।’ (সুরা নিসা)সংসার জীবন সুখের লক্ষ্যে আল্লাহ তাআলা অন্যত্র বলেন, ‘তোমরা তোমাদের স্ত্রীদের আবরণ স্বরূপ এবং তোমরাও তাদের জন্য আবরণ স্বরূপ।’ (সুরা বাকারা)

স্বামীর প্রতি স্ত্রীর অধিকার সম্পর্কে আল্লাহ বলেন, ‘মহিলাদের পুরুষদের উপর যেরূপ অধিকার আছে তেমনি পুরুষদেরও মহিলাদের উপর অধিকার রয়েছে।’ (সুরা বাক্বারা)নেককার স্ত্রীকে দুনিয়ার শ্রেষ্ঠ সম্পদ বলা হয়,এখন বদকার কোনো মহিলাকে কি সম্পদ বলা যেতে পারে? কাজেই শ্রেষ্ঠ সম্পদ হতে হলে সেরূপ বৈশিষ্ট্যও তো থাকা চাই। ঈমানের পর সর্বোচ্চ নিয়ামত হচ্ছে সচ্চরিত্র স্বামীকে মুহব্বতকারিনী, চরিত্রবতী ও সন্তানবতী স্ত্রী সুবহানাল্লাহ।

এরূপ মহিয়সী নারীকে হযরত সুলাইমান আলাইহিস সালাম উনার রাজত্ব অপেক্ষা উত্তম বলা হয়েছে। আর কুফরীর পর সর্বাপেক্ষা নিকৃষ্ট বস্তু হচ্ছে কর্কশভাষীনী ও অসচ্চরিত্রা স্ত্রী। নাঊযুবিল্লাহ!কাজেই প্রত্যেক স্ত্রীরই স্বামীকে মুহব্বত করত সচ্চরিত্রের অধিকারী হওয়ার চেষ্টা করতে হবে, তবেই সে তার স্বামীর জন্য শ্রেষ্ঠ সম্পদ হিসেবে পরিগণিত হবে।আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে স্ত্রী প্রতি যথাযথ দায়িত্ব পালনসহ নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠায় ইসলামী অনুশাসন মেনে চলার তাওফিক দান করুন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

‘নেককার স্ত্রী’ দুনিয়ার শ্রেষ্ঠ সম্পদ

আপডেট টাইম : ০৩:৫২:২২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ জুলাই ২০১৯

হাওর বার্তা ডেস্কঃ দুনিয়ার শ্রেষ্ঠ সম্পদ সতীসাধ্বী রমণী। কথায় আছে, ‘সংসার সুখি হয় রমণীর গুনে’। একজন নারীর সংশ্রব ব্যতিত পুরুষের জীবনের পরিপূর্ণতা আসে না এটা মানতেই হবে। সুখে–দুঃখে নারীই পুরুষের জীবনসঙ্গিনী। সুতরাং দাম্পত্য জীবনে এ নারী যদি পুত-পবিত্র সচ্চরিত্রা হয়, তাহলে জীবন স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়।

সমস্যা সংকুল জীবনেও শান্তির ফল্গুধারা বয়ে যায়। যে শান্তি নারী-পুরুষের বৈবাহিক জীবনের মাধ্যমে শুরু হয়। বিবাহিত জীবনে নেককার স্ত্রীর গুরুত্ব অত্যধিক। তাই ইসলাম স্ত্রীকে দিয়েছে সর্বোত্তম মর্যাদা। বৈবাহিক জীবনে নারী অধিকার সম্পর্কে কুরআন হাদিসের বক্তব্য তুলে ধরা হলো-

নারীর বিয়ে: ইসলাম পূর্ব যুগে বৈবাহিক সম্পর্ক ছাড়াই মহিলাদেরকে পুরুষের মালিকানাধীন মনে করা হতো এবং একজন পুরুষ যত খুশী বিয়ে করতে পারত। ইসলাম নারীদের জন্য বিবাহকে বৈধ এবং আবশ্যক করেছেন। এ বিবাহের মাধ্যমে একজন নারীকে একটি সম্মানজনক আসনে সমাসীন করা হয়।আল্লাহ বলেন, ‘আর তোমাদের মধ্যকার পুরুষ আর মহিলাদের মধ্য থেকে তাদের বিয়ে দিয়ে দাও যারা দাম্পত্য ছাড়া জীবন অতিবাহিত করে।’ (সুরা নূর)

নারীর মোহর: মোহরকে নারীর ইজ্জতের গ্যারান্টি করা হয়েছে। ইসলাম পূর্ব যুগে নারীরা তাদের বিয়ের দেন মোহরের মালিকানা পেত না। ইসলাম নারীর মর্যাদা রক্ষায় মোহরের বিধান প্রবর্তন করে তা স্বামীর উপর ফরজ সাব্যস্থ করেছেন। তাদেরকে শিক্ষা দিয়েছেন যে, যদি মোহর রূপে অঢেল সম্পদও দেয়া হয় তা ফেরত নেয়া যাবে না। কেননা মোহর বিবাহের শর্ত হওয়ায় সেগুলো মহিলার মালিকানাধীন হয়ে যায়।আল্লাহ বলেন, আর তোমরা স্ত্রীদেরকে তাদের মোহর দিয়ে দাও খুশি মনে। তারা যদি খুশি হয়ে তা থেকে (কিছু) অংশ ছেড়ে দেয়, তবে তা তোমরা স্বাচ্ছন্দ্যে ভোগ কর। (সুরা নিসা : আয়াত ৪)

স্ত্রী হিসেবে নারী: মোহর নির্ধারণের মাধ্যমে নারী-পুরুষ পরস্পর ইজাব-কবুল করে একজন পুরুষ একজন নারীকে স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করে। স্ত্রী হিসেবে নারীকে এক স্বকীয় মর্যাদায় অধিষ্টিত করেছে ইসলাম। তাই স্বামীকে স্ত্রীর সাথে সদ্ব্যবহারের নির্দেশ দিয়ে আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা সদাচরণের ভিত্তিতে তোমাদের স্ত্রীদের সাথে জীবন-যাপন কর।’ (সুরা নিসা)সংসার জীবন সুখের লক্ষ্যে আল্লাহ তাআলা অন্যত্র বলেন, ‘তোমরা তোমাদের স্ত্রীদের আবরণ স্বরূপ এবং তোমরাও তাদের জন্য আবরণ স্বরূপ।’ (সুরা বাকারা)

স্বামীর প্রতি স্ত্রীর অধিকার সম্পর্কে আল্লাহ বলেন, ‘মহিলাদের পুরুষদের উপর যেরূপ অধিকার আছে তেমনি পুরুষদেরও মহিলাদের উপর অধিকার রয়েছে।’ (সুরা বাক্বারা)নেককার স্ত্রীকে দুনিয়ার শ্রেষ্ঠ সম্পদ বলা হয়,এখন বদকার কোনো মহিলাকে কি সম্পদ বলা যেতে পারে? কাজেই শ্রেষ্ঠ সম্পদ হতে হলে সেরূপ বৈশিষ্ট্যও তো থাকা চাই। ঈমানের পর সর্বোচ্চ নিয়ামত হচ্ছে সচ্চরিত্র স্বামীকে মুহব্বতকারিনী, চরিত্রবতী ও সন্তানবতী স্ত্রী সুবহানাল্লাহ।

এরূপ মহিয়সী নারীকে হযরত সুলাইমান আলাইহিস সালাম উনার রাজত্ব অপেক্ষা উত্তম বলা হয়েছে। আর কুফরীর পর সর্বাপেক্ষা নিকৃষ্ট বস্তু হচ্ছে কর্কশভাষীনী ও অসচ্চরিত্রা স্ত্রী। নাঊযুবিল্লাহ!কাজেই প্রত্যেক স্ত্রীরই স্বামীকে মুহব্বত করত সচ্চরিত্রের অধিকারী হওয়ার চেষ্টা করতে হবে, তবেই সে তার স্বামীর জন্য শ্রেষ্ঠ সম্পদ হিসেবে পরিগণিত হবে।আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে স্ত্রী প্রতি যথাযথ দায়িত্ব পালনসহ নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠায় ইসলামী অনুশাসন মেনে চলার তাওফিক দান করুন।