হাওর বার্তা ডেস্কঃ তিমান কথাসাহিত্যিক ও নির্মাতা হুমায়ূন আহমেদের সপ্তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। তার একাধিক নাটক ও চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন চিত্রনায়ক রিয়াজ। কীর্তিমান লেখকের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতার নানা বিষয় নিয়ে কথা হয় রিয়াজের সঙ্গে-
হুমায়ূন আহমেদের একাধিক নাটক, টেলিছবি ও চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। কেমন ছিল সেসব কাজের অভিজ্ঞতা?
একেক কাজের অভিজ্ঞতা একেক রকম। প্রথম যেদিন তার পরিচালনায় অভিনয় করতে গিয়ে ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়েছিলাম, সেদিনের কথা আজও ভুলিনি। কখনও কল্পনা করিনি, অভিনয়ের জন্য কোনো নির্মাতা বকঝকা করতে পারেন। আমরা যখন কোনো ছবির শুটিং করি, তখন পাশে থেকে একজন সংলাপ বলে দেন। তা শুনেই ক্যামেরার সামনে সংলাপ বলে যাই। এভাবেই অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু হুমায়ূন স্যারের নাটক, সিনেমায় সংলাপ মুখস্থ বলতে হয়, এটা জানা ছিল না। তাই শুটিংয়ের সময় বারবার সংলাপ জানতে চাওয়ায় সেদিন স্যার খুব বকাঝকা করেছিলেন। বলেছিলেন, ‘কী অভিনয় করো, সংলাপ মুখস্থ থাকে না! এভাবে কী অভিনয় করবে? তার এ কথা শুনে সেদিন চুপসে গিয়েছিলাম।
পরে তো হুমায়ূন আহমেদের খুব কাছের মানুষ হয়ে গিয়েছিলেন…
হ্যাঁ, আমি ভাগ্যবান তার মতো এত বড় মাপের একজন লেখক ও নির্মাতার খুব কাছের একজন হতে পেরে। হুমায়ূন স্যার আমাকে আদর করে ‘নায়ক রাজ’ বলে ডাকতেন। নাটক, চলচ্চিত্র যেটাই হোক তার গল্প বলার ভঙ্গি নিজস্ব- এটা বুঝতে কিছুটা সময় লেগেছিল। তিনি শিল্পীদের কাছে কী চান, সেটা যখন ধীরে ধীরে বুঝতে শুরু করেছি, তখন আর তার কাছে বকঝকা শুনতে হয়নি। এক পর্যায়ে হৃদ্যতা এত বেড়ে গিয়েছিল যে, স্যারের সঙ্গে দেখা করতে, কথা বলতে নুহাশপল্লীতে যাওয়ার জন্য ছটফট করতাম।
কখনও কি মনে হয়েছে হুমায়ূন আহমেদ আপনার মতো নির্দিষ্ট কিছু শিল্পীকে নিয়ে কেন কাজ করেন?
আমরা যারা তার সঙ্গে নিয়মিত কাজ করেছি, তারা সবাই ছিলেন হুমায়ূন স্যারের খুব কাছের মানুষ। তৈরি হয়েছিল এক ধরনের আত্মীয়তা। আমার মতো আরও যারা নিয়মিত তার নাটক, টেলিছবি, চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন, তাদের ক্ষেত্রেও এই কথা বলা যায়। এর কারণ আমরা সবাই ছিলাম হুমায়ূন স্যারের গুণমুগ্ধ ভক্ত। শুধু লেখক ও নির্মাতা হিসেবে তিনি অনন্য ছিলেন না, ব্যক্তি হুমায়ূন আহমেদও ছিলেন আবেগী ও মজার মানুষ। তার মতো একজন লেখক, নির্মাতা এবং ভালোবাসার মানুষকে হারিয়ে অনেকটাই নিঃস্ব হয়ে গেছি।