হাওর বার্তা ডেস্কঃ ব্যাটিংটা দিয়ে তাও যে কোনো দলকে ভয় পাইয়ে দেওয়া যাচ্ছে কিন্তু বোলিং দিয়ে তেমন কিছু হচ্ছে না। বিশ্বকাপে তাই অতসী কাচের নিচে বাংলাদেশের বোলিং। বাংলাদেশ দল এখন পর্যন্ত যে ৬ ম্যাচ খেলেছে (শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচটি বৃষ্টির জন্য মাঠে গড়ায়নি) এর মধ্যে শুধু এক ম্যাচে প্রতিপক্ষ দলকে অলআউট করতে পেরেছে। সেটাও বড় কোনো দল নয়, আফগানিস্তান। আজ ভারতের মুখোমুখি হওয়ার আগে বাংলাদেশের বোলিং নিয়েই তাই বেশি দুশ্চিন্তা হওয়ার কথা। প্রতিপক্ষ দলের ব্যাটিং এমনিতেই বিশ্বের অন্যতম সেরা।
দলে আছেন বিরাট কোহলি-রোহিত শর্মার মতো ব্যাটসম্যান। এমন দল আগে-পরে যখনই ব্যাটিং করুক যত দ্রুত সম্ভব অলআউট করার চেষ্টা থাকে প্রতিপক্ষের। তা সম্ভব না হলে রান আটকানোর বিকল্প নেই। ওয়ানডে যেহেতু রানের খেলা তাই রান আটকানোই অন্যতম লক্ষ্য থাকে বোলারদের। বাংলাদেশের বোলাররা কি আজ এ চ্যালেঞ্জ নিতে পারবেন? যেহেতু নতুন ম্যাচ মনটা তাই আশাবাদী হয়ে উঠতেই পারে। তবে পরিসংখ্যান কিন্তু মোটেও পক্ষে নেই। আর পক্ষে নেই বলেই বোলাররা আজ নিজেদের নিংড়ে দিয়ে ভালো করার জিদ বলুন কিংবা জ্বালানি—তুলে নিতে পারেন পেছনের ব্যর্থতা থেকে।
বিশ্বকাপে এ পর্যন্ত প্রতিপক্ষের কাছ থেকে সবচেয়ে কম মেডেন আদায় করা দল বাংলাদেশ। অর্থাৎ অংশ নেওয়া ১০ দলের মধ্যে সবচেয়ে কম মেডেন আদায় করায় বাংলাদেশ অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে শীর্ষে। এ পরিসংখ্যানটুকুই বলে দেয়, রান আটকানোর ক্ষেত্রে কতটা পিছিয়ে মাশরাফি বিন মুর্তজার দল। এ ১০টি দলের বোলারদের মধ্যে বাংলাদেশের বোলাররাই ওভার প্রতি গড়ে সবচেয়ে বেশি রান (৬.১৮) দিয়েছেন। ভারতের বিপক্ষে ম্যাচটা যেহেতু বাঁচামরার তাই এখান থেকে বোলারদের ঘুরে দাঁড়ানোর বিকল্প কিছু নেই।
৮ ম্যাচ খেলা অস্ট্রেলিয়া সবচেয়ে বেশি মেডেন নেওয়া দল। দলটির বোলাররা মোট ১৬টি মেডেন নিয়েছেন। এরপর যথাক্রমে ইংল্যান্ড (১৫ মেডেন), দক্ষিণ আফ্রিকা (১৫ মেডেন), নিউজিল্যান্ড ( ১২ মেডেন) ও ভারত ( ১০ মেডেন)। পাকিস্তান ও ওয়েস্ট ইন্ডিজেরও মেডেনসংখ্যা ১০টি করে। ৯টি মেডেন আফগানিস্তানের আর শ্রীলঙ্কার মেডেনসংখ্যা ৬টি। ৬ ম্যাচে মাত্র ৫ মেডেন নিয়ে সবার নিচে বাংলাদেশ। এর মধ্যে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন নিয়েছেন ২ মেডেন, ১টি করে মেডেন সাকিব আল হাসান, মোস্তাফিজুর রহমান ও মাশরাফির। শীর্ষ দশ মেডেন নেওয়া বোলারদের মধ্যে স্বাভাবিকভাবেই বাংলাদেশের কেউ নেই। ৮ ম্যাচে ৭ মেডেন নিয়ে শীর্ষে ইংল্যান্ডের জফরা আর্চার।
বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের সামনেও চ্যালেঞ্জ কম নয়। যশপ্রীত বুমরা-মোহাম্মদ শামির পেস আক্রমণ এমনিতেই বিশ্বকাপের অন্যতম সেরা। সঙ্গে যোগ করুন যুজবেন্দ্র চাহাল ও কুলদীপ যাদবের স্পিন—এমন বোলিং লাইনআপ নিজেদের দিনে যে কোনো গুঁড়িয়ে দিতে পারে। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের আজ এই বোলিং লাইনআপের বিপক্ষেই রান বের করতে হবে। পরিসংখ্যান বলছে সেটি যথেষ্ট চ্যালেঞ্জ—বিশ্বকাপে এ পর্যন্ত ভারতের বোলারদের ইকোনমি রেট যে সবচেয়ে কম (৫.১৫)। শুধু ইকোনমি রেট নয় বোলিং গড়েও ভারত বাকিদের চেয়ে এগিয়ে (২৮.২৬)।
বার্মিংহামে আজ নিশ্চিতভাবেই কাজটা কঠিন হবে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যান-বোলারদের জন্য। তবে বোলারদের চ্যালেঞ্জটা তুলনামূলক বেশি। বিশ্বকাপে কোনো বড় দলের বিপক্ষেই এখনো মনের মতো বোলিং করতে পারেনি বাংলাদেশ। তবে হয়নি বলে যে আজ হবে না তা নিশ্চয়ই মাশরাফির দল ভাবছে না।