শমসেরের পদত্যাগে ফুরফুরে আওয়ামী লীগ

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী দল থেকে পদত্যাগ করায় ফুরফুরে মেজাজে আছে সরকার দলীয় সংগঠন আওয়ামী লীগ। বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ এই নেতার পদত্যাগে বিশেষ স্বস্তি কাজ করছে সাম্প্রতিক কিছু ঘটনায় চাপে থাকা আওয়ামী লীগের।

আওয়ামী লীগের সভাপতি মণ্ডলীর এক সদস্য বলেন, ‘নানা কারণেই শমসের মবিন চৌধুরীর পদত্যাগের বিষয়টি এখন গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমত তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীনতা বিরোধী সংগঠন জামায়াতের সঙ্গে গাঁটছাড়া বিএনপি থেকে পদত্যাগ করার ঘটনা আওয়ামী লীগ ইতিবাচকভাবেই দেখতে চায়। দ্বিতীয়ত, বিদেশি নাগরিক হত্যাকাণ্ডসহ কয়েকটি ঘটনায় সরকার কিছুটা হলেও চাপে রয়েছে। বিএনপির এই গুরুত্বপূর্ণ নেতা দলের প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করে পদত্যাগ করায় সরকারে স্বস্তি ফিরে আসছে।’

দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মাধ্যমে বুধবার সন্ধ্যায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে চিঠি দিয়ে দল থেকে অবসরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন শমসের মবিন চৌধুরী।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগের সভানেত্রীর কার্যালয়ে ১৪ দলের বৈঠক শেষে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘বিএনপি থেকে বেরিয়ে আসার মিছিল শুরু হয়ে গেছে।’

এর আগে দুপুরে শমসের মবিনের পদত্যাগের কথা গণমাধ্যমে প্রকাশ পাওয়ার পরপরই তাৎক্ষণিক এক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ। তিনি বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া ও তার পুত্র তারেক রহমানের দেশবিরোধী কর্মকাণ্ড দলের অনেকেই পছন্দ করেন না। যার প্রমাণ শমসের মবিন চৌধুরীর পদত্যাগ।`

হানিফ আরো বলেন, ‘বিএনপির মধ্যে যারা মুক্তিযুদ্ধে বিশ্বাসী, যারা দেশের প্রতি আনুগত্য স্বীকার করে রাজনীতি করতে চায়, তারা কোনো না কোনোভাবে বিএনপি থেকে বেরিয়ে আসবে। বিএনপির অনেক নেতাই খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানের প্রতি আর আস্থা রাখতে পারছেন না।’

উল্লেখ্য, ৪ দলীয় জোট সরকারের সময়ে শমসের মবিন চৌধুরী পররাষ্ট্র সচিবের দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৫ সালে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। সেখানে দুই বছর দায়িত্ব পালন শেষে ২০০৭ সালে অবসরে যান তিনি।

২০০৮ সালে খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করে বিএনপিতে যোগ দেন শমসের মবিন চৌধুরী। সে সময় চেয়ারপারসনের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টার দায়িত্ব পান তিনি।

পরে ২০০৯ সালে বিএনপির কাউন্সিলের মাধ্যমে শমসের মবিনকে দলের ভাইস চেয়ারম্যান করা হয়। দলে যোগ দেয়ার পর থেকেই নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্তসহ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন তিনি

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর