ঢাকা ০৬:২২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
দুর্বল ব্যাংকের বিষয়ে যে সিদ্ধান্ত জানালেন অর্থ উপদেষ্টা এক দফা দাবিতে স্মারকলিপি দিয়ে সড়ক ছাড়লেন সাদপন্থীরা যতটুকু সংস্কার প্রয়োজন ততটুকু করে নির্বাচন দেওয়া উচিত: মঈন খান আদানির সঙ্গে চুক্তি পুনর্মূল্যায়নে কমিটি গঠনের নির্দেশ তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবি আজ ‘ক্লোজ ডাউন’, দাবি না মানলে কাল ‘বারাসাত ব্যারিকেড এক হাজার দিনে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ, থামবে কবে প্রয়োজনে দ্বিতীয় অভ্যুত্থান হবে: সারজিস আলম নির্বাচিত হয়ে এলে আমরা একা দেশ চালাব না: মির্জা ফখরুল অতি প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষেই নির্বাচন: আইন উপদেষ্টা কাল থেকে রাজধানীতে ৪০ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি করবে সরকার

কচুশাক বিক্রেতা থেকে ভারতের মন্ত্রী

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৪:০৭:০৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২ জুন ২০১৯
  • ৩০৪ বার
হাওর বার্তা ডেস্কঃ এক সময় তিনবেলা খাবার জুটতো না ঠিক মত। খাবারের জন্য জঙ্গল থেকে কচু এবং ঢেকি শাক তুলে আনতে হত। বাজারে সেসব বিক্রি করে যা টাকা পেতেন সেটা দিয়ে খাবার কিনে মিলেমিশে ভাগ করে খেতেন। তিনিই এখন ভারতের মোদির মন্ত্রিসভায় মন্ত্রী।
তিনি রামেশ্বর তেলি। আসামের ডিব্রুগড়ের বাসিন্দা রামেশ্বরকে এবার খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পের প্রতিমন্ত্রী হিসাবে এই সাংসদকেই বেছে নিয়েছেন নরেন্দ্র মোদি।
ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, রামেশ্বর তেলির ছোটবেলা খুব অভাবের মধ্যে কেটেছে। বাবা ছিলেন সামান্য চা শ্রমিক। ডিব্রুগড়ের চা বাগানেই দরমার ঘরে ভাই, দুই বোন নিয়ে মোট ৬ জনের বাস। বাবার টাকায় ঠিকমতো খাবারও জুটত না তাদের।
রামেশ্বরের বয়স তখন মাত্র ১২ বছর। তখন থেকেই পরিবারের খাবার খরচ নিজেই উপার্জন করতে শুরু করেন। দুই বছরের ছোট ভাই গুণেশ্বরকে সঙ্গে নিয়ে রোজ আশেপাশের জঙ্গল চষে বেড়াতেন। সঙ্গে করে কচু আর ঢেকি শাক নিয়ে ফিরতেন। সেগুলো বাজারে বিক্রি করে পরিবারের জন্য খাবার কিনতেন।
রামেশ্বরের বাবার মৃত্যুর পর তাদের অবস্থা আরও খারাপ হয়ে যায়। মা, ভাই এবং দুই বোনের সংসারের হাল ধরতে হয় রামেশ্বর তেলিকে। তাই পড়াশোনা বিশেষ করে উঠতে পারেননি। রোজগারের জন্য বাড়ির কাছেই একটি পানের দোকান দিয়েছিলেন। সেখান থেকে যা উপার্জন হতো তাতে সংসার চলত। একটু একটু করে সেই টাকা জমিয়ে দুই বোনের বিয়েও দেন।
কলেজে পড়ার সময় রামেশ্বর আসামের চা জনগোষ্ঠী ছাত্র সংস্থা (আটসা)য় যোগ দেন। আটসা নেতা তেলির জনপ্রিয়তা ও নেতাসুলভ গুণ নজরে পড়ে বিজেপি নেতাদের। ২০০১ সালে দুলিয়াজান থেকে বিজেপি বিধায়ক হন রামেশ্বর। ২০০৬ সালেও বিধায়ক হন। তবে ২০১১ সালে হেরে যান। কিন্তু ২০১৪ সালে লোকসভার সাংসদ নির্বাচিন হন। কংগ্রেসের পাঁচ বারের সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পবনসিংহ ঘাটোয়ারকে ১ লক্ষ ৮৫ হাজার ভোটে হারিয়ে তাক লাগান তিনি।
২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে পবনসিংহই তার প্রতিপক্ষ ছিলেন। ২০১৪ থেকে ব্যবধান আরও বাড়িয়ে তাকে ৩,৬৪,৫৬৬ ভোটে হারিয়েছেন রামেশ্বর। যা আসামের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ব্যবধান। তার মা, ভাই এখনও চা বাগানের সেই দরমার ঘরেই থাকেন। রাজনীতির কাজে বাড়িতে খুব বেশি থাকতে পারেন না রামেশ্বর। বাড়ি ফিরলে কিন্তু এই দরমার ঘরই তাঁর আস্তানা।
বৃহস্পতিবারে ছেলেকে শপথ নিতে দেখে গর্বে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন রামেশ্বরের মা। জানান, এখন শুধু একটাই ইচ্ছা তার, রামেশ্বরের বিয়ে। জানা যায় ছেলের জন্য পাত্রী খোঁজাও নাকি শুরু করে দিয়েছেন।

সূত্র: আনন্দবাজার।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

দুর্বল ব্যাংকের বিষয়ে যে সিদ্ধান্ত জানালেন অর্থ উপদেষ্টা

কচুশাক বিক্রেতা থেকে ভারতের মন্ত্রী

আপডেট টাইম : ০৪:০৭:০৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২ জুন ২০১৯
হাওর বার্তা ডেস্কঃ এক সময় তিনবেলা খাবার জুটতো না ঠিক মত। খাবারের জন্য জঙ্গল থেকে কচু এবং ঢেকি শাক তুলে আনতে হত। বাজারে সেসব বিক্রি করে যা টাকা পেতেন সেটা দিয়ে খাবার কিনে মিলেমিশে ভাগ করে খেতেন। তিনিই এখন ভারতের মোদির মন্ত্রিসভায় মন্ত্রী।
তিনি রামেশ্বর তেলি। আসামের ডিব্রুগড়ের বাসিন্দা রামেশ্বরকে এবার খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পের প্রতিমন্ত্রী হিসাবে এই সাংসদকেই বেছে নিয়েছেন নরেন্দ্র মোদি।
ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, রামেশ্বর তেলির ছোটবেলা খুব অভাবের মধ্যে কেটেছে। বাবা ছিলেন সামান্য চা শ্রমিক। ডিব্রুগড়ের চা বাগানেই দরমার ঘরে ভাই, দুই বোন নিয়ে মোট ৬ জনের বাস। বাবার টাকায় ঠিকমতো খাবারও জুটত না তাদের।
রামেশ্বরের বয়স তখন মাত্র ১২ বছর। তখন থেকেই পরিবারের খাবার খরচ নিজেই উপার্জন করতে শুরু করেন। দুই বছরের ছোট ভাই গুণেশ্বরকে সঙ্গে নিয়ে রোজ আশেপাশের জঙ্গল চষে বেড়াতেন। সঙ্গে করে কচু আর ঢেকি শাক নিয়ে ফিরতেন। সেগুলো বাজারে বিক্রি করে পরিবারের জন্য খাবার কিনতেন।
রামেশ্বরের বাবার মৃত্যুর পর তাদের অবস্থা আরও খারাপ হয়ে যায়। মা, ভাই এবং দুই বোনের সংসারের হাল ধরতে হয় রামেশ্বর তেলিকে। তাই পড়াশোনা বিশেষ করে উঠতে পারেননি। রোজগারের জন্য বাড়ির কাছেই একটি পানের দোকান দিয়েছিলেন। সেখান থেকে যা উপার্জন হতো তাতে সংসার চলত। একটু একটু করে সেই টাকা জমিয়ে দুই বোনের বিয়েও দেন।
কলেজে পড়ার সময় রামেশ্বর আসামের চা জনগোষ্ঠী ছাত্র সংস্থা (আটসা)য় যোগ দেন। আটসা নেতা তেলির জনপ্রিয়তা ও নেতাসুলভ গুণ নজরে পড়ে বিজেপি নেতাদের। ২০০১ সালে দুলিয়াজান থেকে বিজেপি বিধায়ক হন রামেশ্বর। ২০০৬ সালেও বিধায়ক হন। তবে ২০১১ সালে হেরে যান। কিন্তু ২০১৪ সালে লোকসভার সাংসদ নির্বাচিন হন। কংগ্রেসের পাঁচ বারের সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পবনসিংহ ঘাটোয়ারকে ১ লক্ষ ৮৫ হাজার ভোটে হারিয়ে তাক লাগান তিনি।
২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে পবনসিংহই তার প্রতিপক্ষ ছিলেন। ২০১৪ থেকে ব্যবধান আরও বাড়িয়ে তাকে ৩,৬৪,৫৬৬ ভোটে হারিয়েছেন রামেশ্বর। যা আসামের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ব্যবধান। তার মা, ভাই এখনও চা বাগানের সেই দরমার ঘরেই থাকেন। রাজনীতির কাজে বাড়িতে খুব বেশি থাকতে পারেন না রামেশ্বর। বাড়ি ফিরলে কিন্তু এই দরমার ঘরই তাঁর আস্তানা।
বৃহস্পতিবারে ছেলেকে শপথ নিতে দেখে গর্বে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন রামেশ্বরের মা। জানান, এখন শুধু একটাই ইচ্ছা তার, রামেশ্বরের বিয়ে। জানা যায় ছেলের জন্য পাত্রী খোঁজাও নাকি শুরু করে দিয়েছেন।

সূত্র: আনন্দবাজার।