ঢাকা ০৫:৩৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম

বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির কাছে সদ্য নির্বাচিত ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ২ প্রত্যাশা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:৪৫:৪৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১ জুন ২০১৯
  • ২৪২ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের কাছে সদ্য নির্বাচিত ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দুটি প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন। প্রত্যাশা দুটি হলো বাংলাদেশের স্বাধীনতা সুবর্ণজয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনে ভারতের অংশগ্রহণ।

রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদিন এক বিবৃতিতে জানান, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ‘যৌথভাবে’ বাংলাদেশের এ দুটি বড় উদযাপন অনুষ্ঠান আয়োজনে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।

আজ ৩১ মে শুক্রবার দিল্লির হায়দ্রাবাদ হাউজে ভারতের পুনর্নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানানোর সময় বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে এক বৈঠকে এসব কথাবার্তা হয়েছে।

বৈঠক শেষে রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদিন সাংবাদিকদের আলোচনার বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জানান।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ উদযাপনে দুই দেশ যৌথ উদ্যোগ নিলে তা আন্তর্জাতিকভাবে গুরুত্ব পাবে বলে মত প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। পাশাপাশি দ্বিপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয় সম্পর্কের উন্নতির ক্ষেত্রেও তা ভূমিকা রাখবে বলে তিনি মনে করেন।

আসছে ২০২০ সালে বঙ্গবন্ধুর জন্মের শত বছর পূর্ণ হবে। আর ঠিক পরের বছর ২৬ মার্চ বাংলাদেশ উদযাপন করবে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী।

১৯২০ সালের ১৭ মার্চ গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্ম নেন শেখ মুজিবুর রহমান। কালক্রমে তার হাত ধরেই বিশ্ব মানচিত্রে নতুন দেশ হিসেবে স্থান করে নেয় বাংলাদেশ।

১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হাতে আটক হওয়ার ঠিক আগে আগে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এরপর শুরু হয় প্রবাসী সরকারের নেতৃত্বে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ।

ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী এই যুদ্ধে সরাসরি জড়িয়ে পড়ে। মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় বাহিনীর সমন্বয়ে গঠিত মিত্রবাহিনীর কাছে ১৬ ডিসেম্বর আত্মসমর্পণ করে পাকিস্তান সেনাবাহিনী। ওই যুদ্ধে কয়েক হাজার ভারতীয় সেনা শহীদ হয়েছিলেন।

আওয়ামী লীগ ২০০৯ সালে সরকারে ফেরার পর বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে অবদান রাখা বিদেশি বন্ধুদের সম্মাননা জানানোর সিদ্ধান্ত নেয়। ২০১১ সালে ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী প্রয়াত ইন্দিরা গান্ধীকে সম্মাননা জানানো হয়। পরবর্তীতে সম্মাননা পান ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপায়ী এবং সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি।

২০১৫ সালের ৭ জুন বাংলাদেশ সফরে এসে বাজপায়ীর পক্ষে সেই সম্মাননা স্মারকটি নেন ভারতের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে দীর্ঘদিনের অনিস্পন্ন ছিটমহল ও সমুদ্রসীমা সংক্রান্ত বিরোধ নিস্পত্তির কথা স্মরণ করেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে তিনি বলেন, বাংলাদেশ জঙ্গি ও উগ্রবাদের ক্ষেত্রে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি গ্রহণ করেছে। বাংলাদেশ কখনো সন্ত্রাসী বা জঙ্গিদের বাংলাদেশের সীমানা ব্যবহার করে অন্য দেশের বা জনগণের ক্ষতি করতে দেবে না।

সম্প্রতি ভারতের ওপর দিয়ে তৃতীয় দেশ থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ নেওয়ার ক্ষেত্রে ভারতীয় নীতি শিথিল করায় নরেন্দ্র মোদীকে ধন্যবাদ জানান রাষ্ট্রপতি। তিনি বলেন, এর ফলে জ্বালানি খাতে ভুটান ও নেপালের সঙ্গে বাংলাদেশের সহযোগিতার ক্ষেত্র সম্প্রসারিত হবে।

আব্দুল হামিদ ও নরেন্দ্র মোদী উভয়েই দুই দেশের বাণিজ্য বিনোয়োগ সম্পর্ক নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন বলে জয়নাল আবেদিন জানান।

দিল্লীর হায়দ্রাবাদ হাউজে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পরপরই দেশে ফেরার জন্য বিমানবন্দরের উদ্দেশ্যে রওনা হন রাষ্ট্রপতি হামিদ। বিকাল ৫টায় তিনি ঢাকা পৌঁছান।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

ঢাকা মহানগরে ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধের নির্দেশ

বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির কাছে সদ্য নির্বাচিত ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ২ প্রত্যাশা

আপডেট টাইম : ১২:৪৫:৪৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১ জুন ২০১৯

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের কাছে সদ্য নির্বাচিত ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দুটি প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন। প্রত্যাশা দুটি হলো বাংলাদেশের স্বাধীনতা সুবর্ণজয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনে ভারতের অংশগ্রহণ।

রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদিন এক বিবৃতিতে জানান, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ‘যৌথভাবে’ বাংলাদেশের এ দুটি বড় উদযাপন অনুষ্ঠান আয়োজনে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।

আজ ৩১ মে শুক্রবার দিল্লির হায়দ্রাবাদ হাউজে ভারতের পুনর্নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানানোর সময় বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে এক বৈঠকে এসব কথাবার্তা হয়েছে।

বৈঠক শেষে রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদিন সাংবাদিকদের আলোচনার বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জানান।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ উদযাপনে দুই দেশ যৌথ উদ্যোগ নিলে তা আন্তর্জাতিকভাবে গুরুত্ব পাবে বলে মত প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। পাশাপাশি দ্বিপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয় সম্পর্কের উন্নতির ক্ষেত্রেও তা ভূমিকা রাখবে বলে তিনি মনে করেন।

আসছে ২০২০ সালে বঙ্গবন্ধুর জন্মের শত বছর পূর্ণ হবে। আর ঠিক পরের বছর ২৬ মার্চ বাংলাদেশ উদযাপন করবে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী।

১৯২০ সালের ১৭ মার্চ গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্ম নেন শেখ মুজিবুর রহমান। কালক্রমে তার হাত ধরেই বিশ্ব মানচিত্রে নতুন দেশ হিসেবে স্থান করে নেয় বাংলাদেশ।

১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হাতে আটক হওয়ার ঠিক আগে আগে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এরপর শুরু হয় প্রবাসী সরকারের নেতৃত্বে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ।

ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী এই যুদ্ধে সরাসরি জড়িয়ে পড়ে। মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় বাহিনীর সমন্বয়ে গঠিত মিত্রবাহিনীর কাছে ১৬ ডিসেম্বর আত্মসমর্পণ করে পাকিস্তান সেনাবাহিনী। ওই যুদ্ধে কয়েক হাজার ভারতীয় সেনা শহীদ হয়েছিলেন।

আওয়ামী লীগ ২০০৯ সালে সরকারে ফেরার পর বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে অবদান রাখা বিদেশি বন্ধুদের সম্মাননা জানানোর সিদ্ধান্ত নেয়। ২০১১ সালে ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী প্রয়াত ইন্দিরা গান্ধীকে সম্মাননা জানানো হয়। পরবর্তীতে সম্মাননা পান ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপায়ী এবং সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি।

২০১৫ সালের ৭ জুন বাংলাদেশ সফরে এসে বাজপায়ীর পক্ষে সেই সম্মাননা স্মারকটি নেন ভারতের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে দীর্ঘদিনের অনিস্পন্ন ছিটমহল ও সমুদ্রসীমা সংক্রান্ত বিরোধ নিস্পত্তির কথা স্মরণ করেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে তিনি বলেন, বাংলাদেশ জঙ্গি ও উগ্রবাদের ক্ষেত্রে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি গ্রহণ করেছে। বাংলাদেশ কখনো সন্ত্রাসী বা জঙ্গিদের বাংলাদেশের সীমানা ব্যবহার করে অন্য দেশের বা জনগণের ক্ষতি করতে দেবে না।

সম্প্রতি ভারতের ওপর দিয়ে তৃতীয় দেশ থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ নেওয়ার ক্ষেত্রে ভারতীয় নীতি শিথিল করায় নরেন্দ্র মোদীকে ধন্যবাদ জানান রাষ্ট্রপতি। তিনি বলেন, এর ফলে জ্বালানি খাতে ভুটান ও নেপালের সঙ্গে বাংলাদেশের সহযোগিতার ক্ষেত্র সম্প্রসারিত হবে।

আব্দুল হামিদ ও নরেন্দ্র মোদী উভয়েই দুই দেশের বাণিজ্য বিনোয়োগ সম্পর্ক নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন বলে জয়নাল আবেদিন জানান।

দিল্লীর হায়দ্রাবাদ হাউজে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পরপরই দেশে ফেরার জন্য বিমানবন্দরের উদ্দেশ্যে রওনা হন রাষ্ট্রপতি হামিদ। বিকাল ৫টায় তিনি ঢাকা পৌঁছান।