হাওর বার্তা ডেস্কঃ ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যার মামলা অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালে হস্তান্তর করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকালে কড়া নিরাপত্তায় চার্জশিটভুক্ত ১৬ আসামিকে আদালতে নেওয়া হয়। দুপুরে তাদের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসেনের আদালতে হাজির করা হয়।
শুনানি শেষে বিচারক মামলাটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করেন। তিনি মামলার পরবর্তী তারিখ ঠিক করে দিয়েছেন ১০ জুন। সেদিনই আলোচিত এ মামলাটি অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য ট্রাইবুনালে তোলা হবে বলে জানিয়েছেন বাদীপক্ষের আইনজীবী এম শাহজাহান সাজু।
চলতি বছরের ২৭ মার্চ সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফিকে যৌন নিপীড়ের দায়ে মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এর জের ধরে গত ৬ এপ্রিল ওই মাদরাসা কেন্দ্রের সাইক্লোন শেল্টারের ছাদে নিয়ে অধ্যক্ষের সহযোগীরা নুসরাতের শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়। টানা পাঁচদিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে মারা যান নুসরাত জাহান রাফি।
এ ঘটনায় নুসরাতের ভাই মামলা করেন। ওই মামলার ১০ এপ্রিল তদন্তের দায়িত্ব পায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআিই)। তদন্ত শেষে সংস্থাটি ১৬ জনকে আসামি করে চার্জশিট দেয়।
২৯ মে ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসাইনের আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইয়ের পরিদর্শক মো. শাহ আলম।
যাদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়া হয়েছে তারা হলেন প্রধান অভিযুক্ত সোনাগাজী ইসলামিয়া মাদরাসার অধ্যক্ষ এস. এম. সিরাজ উদদৌলা, আফসার উদ্দিন, জোবায়ের আহম্মেদ, মাকসুদ আলম কাউন্সিলর, জাবেদ হোসেন, নুর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামীম, হাফেজ আবদুল কাদের, উম্মে সুলতানা পপি, মো. শামীম, কামরুন নাহার মনি, আবদুর রহীম শরিফ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রহুল আমিন, এমরান হোসেন মামুন, ইফতেখার উদ্দিন রানা, মহিউদ্দিন শাকিল। যাদেরকে বাদ দেওয়া হয়েছে তারা হচ্ছেন আরিফুল ইসলাম, সাইদুল ইসলাম, কেফায়েত উল্লাহ, নুর হোসেন, আলাউদ্দিন।
নুসরাত হত্যা মামলায় মোট সাক্ষী ৯২ জন। এর মধ্যে কার্যবিধির ১৬১ ধারায় ৬৯ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, বাদী, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও সিজার লিস্টের সাক্ষী। মামলায় ৭ জন সাক্ষী কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় সাক্ষ্য দিয়েছেন। ১২ জন আসামি নিজেদের দোষ স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। এ মামলায় ২১ জনকে বিভিন্ন সময়ে গ্রেফতার করা হয়। পিবিআই নুসরাত হত্যায় ব্যবহৃত বেশকিছু আলামত সংগ্রহ করেছে। এবং নুসরাত হত্যার ঘটনার ধারাবাহিক ডিজিটাল স্কেচ ম্যাপ ও আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে।