নুসরাত হত্যা মামলা: জড়িত সব আসামীর ফাঁসি চাইলেন মা

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ফেনীর সোনাগাজী মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত সব আসামীর ফাঁসির দাবী করেছেন ও তার পরিবার এবং মামলার রায় দ্রুত কার্যকরের জোর দাবি জানিয়েছেন নুসরাতের মা শিরিন আক্তার।

নুসরাতের মা পিবিআইকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, আমার নুসরাতকে বোনের মতো ভেবে নিরলসভাবে কাজ করেছেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) কর্মকর্তারা। অল্প সময়ের মধ্যে হত্যাকাণ্ডে জড়িত সব আসামিকে গ্রেপ্তার করে চার্জশীট প্রস্তুত করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে পিবিআই।

কোনো ধরনের হুমকি কিংবা চাপ আছে কিনা জানতে চাইলে নুসরাতের মা শিরিন আক্তার বলেন, অনেক ধরনের হুমকি আসে। তবে আমরা এটাকে গুরুত্ব দেই না। যেখানে মেয়েকে হারিয়েছি সেখানে হুমকিতে কি যায় আসে। নুসরাত হত্যার বিচারের দায়িত্ব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিয়েছেন, সেখানে আমাদের মেরে ফেললেও কোনো সমস্যা নেই। এ সময় তিনি ও তার পরিবারের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

শিরিন আক্তার আরও বলেন, ২৭ মার্চ নুসরাতকে শ্লীলতাহানির পর রাস্তায় নিরাপত্তা দিয়েছি। ১ এপ্রিল থেকে পরীক্ষা সেজন্য রাস্তায় কেউ যাতে সমস্যা করতে না পারে সেজন্য আমার ছেলেরা ছিল। কিন্তু মাদ্র‍াসা ক্যাম্পাস, পরীক্ষার হলতো নিরাপদ। সেখানে এ ধরনের ঘটনা ঘটবে তা কোনো দিন কল্পনাও করিনি।

নুসরাতের ছোট ভাই রাশেদুল হাসান রায়হান বলেন, মামলার চার্জশিট দ্রুত সময়ে দিতে গিয়ে যাতে কোনো আসামী বাদ পড়ে না যায় পিবিআইকে সেদিকে খেয়াল রাখার অনুরোধ জানাই। তবে পিবিআইয়ের কার্যক্রমে আমরা সন্তুষ্ট। মামলার বিচার কার্যক্রম দ্রুত শেষ করে আমার বোনের হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি চাই।

এদিকে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে নুসরাতদের বাড়িতে নিরাপত্তা দেয়া হচ্ছে। পুলিশের চার সদস্যের একটি দল তার পরিবারের নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছেন।

উল্লেখ্য, ২৭ মার্চ নিজ কক্ষে অধ্যক্ষ সিরাজদ্দৌলা নুসরাতকে যৌন হয়রানির চেষ্টা করে। এ ঘটনায় তার মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা করেন। ওই দিন দুপুরে মাদ্রাসা অফিস থেকে অধ্যক্ষকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

এরপর গত ৬ এপ্রিল সকালে নুসরাত আলিম পরীক্ষা দিতে গেলে মুখোশ পরা কয়েকজন মিলে তাকে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ্দৌলার বিরুদ্ধে মামলা তুলে নিতে চাপ দেয়। অস্বীকৃতি জানালে তারা নুসরাতের গায়ে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায়। পরে কয়েকজন মিলে তাকে উদ্ধার করে প্রথম সোনাগাজী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে ফেনী আধুনিক সদর হাসপাতাল ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে তাকে প্রেরণ করা হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।

গত ১০ এপ্রিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে লাইফ সাপোর্টে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। পর দিন জানাযা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে সোনাগাজী ফাজিল মাদ্রাসার মেধাবী ছাত্রী নুসরাতের দাফন সম্পন্ন করা হয়।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর