হাওর বার্তা ডেস্কঃ লোকসভা নির্বাচনে দলের ভরাডুবির দায় নিয়ে সভাপতির পদ থেকে রাহুল গান্ধী ইস্তফা দিচ্ছেন ফল ঘোষণার পরই এমন গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে। হলো তাই- কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটিতে ইস্তফার প্রস্তাব দেন তিনি। তবে দলের নেতারা রাহুলের প্রস্তাব খারিজ করে দেন। নিজের ইস্তফা নিয়ে রাহুল যে এমন জেদ ধরে থাকবেন, সেটি ভাবতেই পারেননি কেউ।
দলের এক নেতা জানান, কমিটির সব নেতা সমস্বরে রাহুলকেই দায়িত্বে থাকতে বলেছেন। পি চিদাম্বরম তো কেঁদেই ফেলেছেন। আগেভাগে প্রস্তাব পেশ করে রাহুলের হাতেই সংগঠনের আমূল পরিবর্তনের ভার তুলে দিয়েছে কমিটি।
এরপরও ইস্তফায় অনড় রাহুল। শুধু তা-ই নয়, সাফ বলেছেন, তার বদলে যেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর নামও সভাপতি পদে ভাবা না হয়। গান্ধী পরিবারের বাইরের কারও হাতে এই দায়িত্ব তুলে দেওয়া হোক। এই নিয়ে কোনো আপস হবে না।
এর পরেই রাহুল-প্রিয়াঙ্কা বৈঠক থেকে বেরিয়ে যান। অন্য সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন রাহুল। শনিবার তা-ও বলেননি। প্রিয়াঙ্কাও আলাদাভাবে চলে যান।
নরেন্দ্র মোদি ও অমিত শাহ-সহ বিজেপি নেতাদের অভিযোগ, “পরিবারের বাইরে কংগ্রেস কিছু ভাবতে পারে না। এখনই চোখ বুজে বলা যায়, রাহুলের পরে প্রিয়াঙ্কার সন্তানরা ভবিষ্যতে কংগ্রেসের সভাপতি হবেন।”
লোকসভায় বিপর্যয়ের পর রাহুল আর কোনো আঙুল তোলার সুযোগ দিতে চাইছেন না। গোটা বৈঠকে সোনিয়া গান্ধী একটি কথাও বলেননি। কিন্তু রাহুল বলেন, তিনি দলের জন্য অন্য যে কোনো কাজ করবেন। লড়াই জারি রাখবেন। সংসদের নেতাও হতে পারেন। আরও তিনটি বিকল্প দিয়েছেন। কিন্তু সভাপতি থাকবেন না।
ইস্তফা নিয়ে রাহুলের জেদ দেখে কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির সব সদস্যই তাকে দায়িত্বে বহাল থাকতে বলেন। প্রিয়াঙ্কাও বলেন, বিজেপি এটাই চায়, রাহুল সভাপতি পদ থেকে সরে যান। রাহুল ইস্তফা দিলে বিজেপিরই ফাঁদে পা দেওয়া হবে।
আর পি চিদাম্বরম তো কেঁদেই ফেলেন। তিনি বলেন, মাত্রই দক্ষিণ ভারত থেকে রাহুল জিতে এসেছেন। রাহুল ইস্তফা দিলে দক্ষিণের সমর্থকরা আত্মহত্যাও করতে পারেন।
পরে সাংবাদিকদের গোলাম নবী আজাদ জানান, “তিনি (রাহুল) যখন ইস্তফার কথা বলেন, তখন গোটা কমিটি এক হয়ে বলেছে, আপনি অনেক ভালো কাজ করেছেন। সকলে আপনার নেতৃত্বেই কাজ করবেন। সংগঠনের আমূল বদলের জন্য যা যা করার করুন। নতুন কেউ এলে সব বুঝতেই আরও পাঁচ বছর লেগে যাবে।”